প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ২২:৫৫
হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনী সংকট নিরসনে মত বিনিময় সভা
হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ মে) উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা ই সেন্টার উক্ত সভায় সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম। সভায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত,
সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন ও ঈদুল আযহার পরে নির্বাচন এমন বিষয়গুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা স্থান পায়। গত ২০ মে (শনিবার) সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ঠ পরিস্থিতির আলোকে প্রার্থীদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সভায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং পবিত্র ঈদুল আযহার পরে সুবিধাজনক সময়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। হালনাগাদে ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ (সম্পাদকীয় পদ ও ওয়ার্ড কমিশনার) বা অন্যান্য গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা থাকবেন।
তবে ভোটার তালিকা হালনাগাদে সরকারি কর্মকর্তাদের যারা সহযোগিতা করবেন তাদের নাম প্রস্তাব প্রার্থীরা দিবেন। যা আগামি দুই/তিন দিনের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে। সরকারি কর্মকর্তা নির্ধারণ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করা হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সভাপতি প্রার্থী আলহাজ্ব আশফাকুল
আলম চৌধুরী, রোটা. আহসান হাবিব অরুন ও মো. ইকবাল হোসেন মজুমদার। আরো
বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি প্রার্থী হাজী মো. মিজানুর রহমান, মো. আব্দুল কাদের (কেবিএফ), সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হায়দার পারভেজ সুজন, মো. আলী নেওয়াজ রোমান, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, এবায়েদুর রহমান খোকন বলি, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী হাফেজ মো. আবুল কাশেম, দপ্তর সম্পাদক প্রার্থী মো. আবুল কাশেম মুন্সী, মো. মোরশেদুল আলম ও মো. আরিফুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক প্রার্থী মো. কাউছার আহমেদ।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী জিসান আহমেদ ছিদ্দিকী ও হাফেজ মো. মহসিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী তাছলিমা আক্তার মুক্তা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৮ মে (মঙ্গলবার) ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনের হাতে দায়িত্ব বুঝে দেন কার্যকরি পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এরপর গত ১০ মে (বুধবার) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন, নির্বাচন কমিশনের প্রধান ইকবালুজ্জামান ফারুক। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. সেলিম ও সচিব মনিরুজ্জামান বাবলু উপস্থিত ছিলেন।
তফসিল অনুযায়ী আগামি ৩১ মে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভোট গ্রহণ। গত ১১ ও ১৩ মে দুইদিনে মোট ৭২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ৭০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। দাখিলকৃত প্রার্থীদের মধ্যে ১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। সবশেষ বৈধ প্রার্থী হিসাবে ৬৯ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা শুরু করেন। এই ৬৯ জন প্রার্থীকে ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার দিন প্রার্থীদের একাংশ ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে অবস্থান করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের দাবি জানান এবং তাদের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেন।
এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর প্রার্থীদের মধ্য একাংশ ৩ হাজার ৪৩ জন ভোটারের মধ্যে ৭/৮'শ ভুয়া ভোটার থাকার কথা উল্লেখ করেন এবং বাজারের সঠিক ব্যবসায়ীদের (স্থায়ী ব্যবসায়ীদের) ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ করে, তা (ভোটার তালিকা) হালনাগাদের দাবি জানান।
এরপর উল্লেখিত বিষয়টির সুরাহা (সমাধান) চেয়ে তারা চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও’সহ নির্বাচন কমিশনের কাছে দরখাস্ত দেন। কিন্তু দরখাস্তের আলোকে কোন সমাধান না পেয়ে অভিযোগকৃত প্রার্থীরা শুক্রবার (১৯ মে) রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, সভাপতি প্রার্থী রোটা. আহসান হাবিব অরুন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আলী নেওয়াজ রোমান ও এবায়েদুর রহমান খোকন বলি।
তারা বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করে যেন শনিবার (২০ মে) প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া না হয় এবং হালনাগাদ না করে যদি আগামি ৩১ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা তা প্রতিহত করবে বলে সংবাদকর্মীদের জানান। এরপর ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার দিন প্রার্থীদের একাংশ ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে অবস্থান করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের দাবি জানান এবং তাদের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেন।
প্রায় দেড় ঘন্টা সড়ক অবরোধ থাকার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে আসেন। পরবর্তীতে দুই পক্ষের সাথে কথা বলে সড়ক অবরোধ মুক্ত করেন। যার ফলে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মে) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এর মধ্যে ওই দিন (২০ মে) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের একাংশের বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে ৩১ মে নির্বাচন স্থগিত করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইকবালুজ্জামান ফারুক।