প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ২১:০৮
হাজীগঞ্জে ফের সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ
হাজীগঞ্জে ফের সিজারিয়ান অপারেশনে দায়িত্ব অবহেলায় প্রসুতির মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে। এবারের অভিযোগ হাজীগঞ্জ পৌরসভার পিছনে আরিয়ানা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। থানায় লিখিত দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে হাসপাতালের সামনে থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত সানজিদা শাহরাস্তি উপজেলার মুড়াগাঁও গ্রামের হাজী বাড়ির মহিনুল ইসলামের স্ত্রী এবং হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা মিয়াজী বাড়ির শাহজালালের মেয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ ইসলামিয়া মর্ডান হাসপাতালে জরায়ু কেটে কনডম ক্যাথেডার দিয়ে সেলাই, হাজীগঞ্জ সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনে গাফিলতিতে মৃত্যু সজ্জায় প্রসূতি, ভিআইপি হাসপাতালে সিজারে মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এসব ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ না হলেও সর্বশেষ হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজার পৌর ভবন পিছনে আরিয়ানা হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনে দায়িত্বে অবহেলায় সানজিদা নামে ১৯ বছর বয়সী গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনায় ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে হট্টোগোল সৃষ্টি হয়।
হাসপাতালের সামনে সানজিদার মৃতদেহ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স প্রায় ৪ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও হাসপাতালের গেইট খুলে এগিয়ে আসেনি হাসপাতালের কেউ। এ সময় প্রসূতির স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠলে জড়ো হতে থাকে উৎসুক জনতা। এর পরেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজীগঞ্জ থানার এস.আই আব্দুল আজিজ সঙ্গীয় ফোর্স পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে সকাল ৮টায় প্রসূতির মৃতদেহ থানায় নিয়ে আসে।
নিহত প্রসূতি সানজিদার মা শিল্পি বেগম ও মামা জানান, ১৮ এপ্রিল মেয়ে জীবিত এনে এখন লাশ নিয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে আল্লাহ যেন তাদের বিচার করে। হাসপাতালে অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়। রাত ১০টায় সিজার অপারেশনের সময় দেওয়া হলেও ইফতারের ঠিক আগ মূহুর্তে সন্ধ্যা ৬টায় সিজার করা হয়। রোগীর স্বজনরা বার বার রোগীর খোঁজ নিতে জিজ্ঞাসা করলে রোগী ভালো আছে বলে আমাদের জানানো হয়। ঘন্টাখানেক পর রোগীর অবস্থা গুরুত্বর বলে কুমিল্লায় পাঠানোর জন্য হাসপাতালের নিজস্ব লোক দিয়ে তড়িৎগতিতে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়া হয়। কুমিল্লা টাওয়ার হসপিটালে নেওয়ার পর আইসিওতে ভর্তি করানো কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর মৃত্যু হয়ে বলে জানান। এর পরেই আমরা কুমিল্লা থেকে এ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে হাসপাতালের সামনে অবস্থান করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিয়ানা হাসপাতালের ডা. আরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো ছিল না। হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে। অপারেশনে কোন ত্রুটি হয়নি।
নিহতের মামা উপজেলার ৭ নং বড়কুৃল পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হাসেম জানান, সিজারের নামে আমার ভাগনিকে আজ মরতে হলো। মৃত্যুর পর ফের লাশটিকে কাটাছেড়া ( ময়নাতদন্ত) করতে হবে বলে লিখিত দিয়ে লাশ নিয়ে গেলাম।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জোবাইল সৈয়দ বলেন, হাসপাতালের সামনে থেকে আমরা মৃতের লাশ থানায় নিয়ে আসি। এর পরেই নিহতের স্বজনদের কোন অভিযোগ না থাকায় তাদের লিখিত আবদনের ভিত্তিতে লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন শাহাদাত হোসেন জানান, ইতিপূর্বে দুটি মৃত্যার ঘটনায় আমার তদন্ত করছি আরিয়ানা হাসপাতালের বিষয়ে তদন্ত করবো।