মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
  •   নির্মাণের এক বছর না যেতেই ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রীয় মডেল মসজিদের বেহাল দশা
  •   শেষ হলো পদ্মা-মেঘনায় জাল ফেলার নিষেধাজ্ঞা
  •   ফরিদগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
  •   মোবাইল ব্যবহারে নিষেধ করায় শিশু শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২৭

মেঘনার ভাঙ্গনে নিঃস্ব হাইমচরের চরাঞ্চলবাসী

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি
মেঘনার ভাঙ্গনে নিঃস্ব হাইমচরের চরাঞ্চলবাসী

হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে পুনরায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ ভাঙ্গন কেড়ে নিচ্ছে অসহায় মানুষের ভিটেমাটি, নিঃস্ব করছে চরাঞ্চলবাসীকে। অসহায় ও নিরুপায় হয়ে সেখানকার মানুষ রাজধানী টাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাড়ি জমাচ্ছেন। পৈতৃক সম্পত্তি ও নিজের শেষ সম্বলটুকু মেঘনায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দারা।

গতকাল ১ অক্টোবর শনিবার উপজেলার চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায় নীল কমল, হাইমচর ও গাজীপুর ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জমজমাট বাজারগুলো ভেঙে ছোট ছোট বাজারে রুপান্তরিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক সহ সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান গুলো ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থী, রুগী ও সুবিধাভোগীদের। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১নং গাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন এখনো বিদ্যমান থাকায় ফসলি জমি ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে মাছ চাষি ও কৃষকগন পড়েছেন চরম বিপাকে। এ ইউনিয়নের আংশিক কিছু এলাকা থাকলেও চোখ রাঙ্গাচ্ছে নদীর স্রোত।৪নং নীলকমল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সম্পূর্ন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। এছাড়াও ৫, ৬, ৭ নং ওয়ার্ড হুমকির মুখে। এ ওয়ার্ড গুলো যেকোনো সময় হারিয়ে যাবে নদীগর্ভে।

মেঘনার করাল গ্রাসে নিপতিত হয়ে নীল কমল ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাজার গুলো আজ স্মৃতিতে রুপ নিয়েছে। এর মধ্যে মিয়ার বাজার, মাঝির বাজার উল্লেখযোগ্য। সর্বনাশা মেঘনায় সর্বস্ব হারিয়ে এখানকার হাজার হাজার পরিবার আজ নিঃস্ব। পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার ৫নং হাইমচর ইউনিয়ন বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত একটি জনপদের নাম। এ ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বাজার (সাহেবগঞ্জ বাজার) একবার ভেঙে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। নতুন করে গড়া হলেও নদীর করাল স্রোত এখনও পিছু ছাড়েি। ফলে পুনরায় হারিয়ে যেতে বসেছে সাহেবগঞ্জ বাজার।

নদী ভাঙ্গনের স্বীকার আব্দুল জলিল মোল্লা বলেন- সর্বনাশা মেঘনা আমাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। কৃষি জমি চাষ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোই চলছিল দিন। কিন্তু মেঘনার করাল গ্রাসে নিপতিত হয়ে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব। অনেকেই আসে যায়, প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যায়, কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি মেঘনা বাঁধ।

মোশাররফ হোসেন মাঝি জানান, হাইমচরের সর্বত্রে উন্নয়ন হলেও উন্নয়ন হয়নি চরাঞ্চলবাসীর। মেঘনার করাল গ্রাস কেড়ে নিয়েছে এ অঞ্চলের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি। তাই নদী ভাঙ্গন রোধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কার্যকর প্রদক্ষেপ কামনা করছি।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, হাইমচরের বুক চিরে প্রবাহিত হয়েছে মেঘনা নদী। যার করাল গ্রাসে নিপতিত হয়েছে হাইমচরের মানুষ। শিক্ষামন্ত্রীর প্রচেষ্টায় প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে মেঘনা রক্ষা বাঁধ। ৩টি ইউনিয়ন মেঘনার পশ্চিম পাড়ে হওয়ায় এখনও বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হয়নি। তবে হাইমচর ইউনিয়ন থেকে ঈশানবালা হয়ে কোদালপুর পর্যন্ত ৪ হাজার ৩০০ মিটার বাঁধ এর রিপোর্ট আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বরের মধ্যেই হাতে আসবে। এরপর প্রসেসিং কার্যক্রম শেষে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে- ইনশাআল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়