প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
বাংলাদেশে তৈরি স্বর্ণালঙ্কারের গুণগতমান ও ডিজাইন আধুনিক মানে উন্নীত হওয়ায় প্রতিনিয়ত দেশীয় গহনার প্রতি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্বর্ণ শিল্পীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মানের স্বর্ণালঙ্কার বর্তমানে দেশীয় কারখানাগুলোতে তৈরি হচ্ছে। যা দেখতে বিদেশী অলঙ্কারের চেয়ে অনেক সুন্দর ও ঝকঝকে। ফলে দেশে তৈরি স্বর্ণালঙ্কারের গুণগতমান সমৃদ্ধ হওয়ায়, বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা। জেলা জুয়েলারী সমিতির তথ্য মতে, চাঁদপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫ শতাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী রয়েছে।
স্বর্ণ শিল্পী রায়হান হোসেন ও ইমান আলী বলেন, গত ৫ বছর পূর্বেও দেশে তৈরি গহনার গুণগতমান ও ডিজাইন নিয়ে ক্রেতা ও জুয়েলারী ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন দেশীয় স্বর্ণের মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে যুগোপযোগী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। ফলে দেশের স্বর্ণশিল্পীরা বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ কারিগরের সুনাম অর্জন করেছে। তারা স্বর্ণ যাচাইয়ের জন্য বিদেশ থেকে টনস মেশিন, হলমার্কস ও গহনা তৈরির অত্যাধুনিক মেশিন আমদানি করে দেশে বসেই বিদেশী মানের গহনা তৈরি করছেন। এছাড়া স্বল্প সময়ে আধুনিক ডিজাইনের ২২, ২১ ও ১৮ ক্যারেটের গহনা প্রস্তুত করে ক্রেতাদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছেন। হাতের তৈরি গহনার নিখুঁত, সুন্দর ও শৈল্পিক কারুকাজ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করায় বাড়ছে দেশীয় গহনার চাহিদা। এতে আমরা খুশি।
ক্রেতা জান্নাতুল ফেরদৌস ও মাকসুদা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগে স্বর্ণ কিনে কখনো বিক্রি করতে গেলে দাম অর্ধেক পেতাম। এখন মেশিনে ক্যারেট সীল করার কারণে বিক্রি করতে গেলে তেমন একটা তারতম্য হয় না। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে আধুনিক ও বিদেশী ডিজাইনকে ছাপিয়ে স্বর্ণকাররা অনেক সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের গহনা তৈরি করছেন। এতে আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে আধুনিক ডিজাইনের বিভিন্ন ক্যারেটের গহনা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছি। তাতে আমাদের তেমন একটা লোকসান হয় না।
জুয়েলারী ব্যবসায়ী জামিল হোসেন (স্বত্বাধিকারী-স্বর্ণ বিতান) ও তাজুল ইসলাম (স্বত্বাধিকারী-সোনালী জুয়েলার্স) বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনবীরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশীয় স্বর্ণালঙ্কারের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। তিনি জুয়েলারি শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছেন। বর্তমানে দেশীয় গহনার ডিজাইন অনেক সুন্দর, সাইজে বড় এবং গুণগতমান বিদেশী মানের হওয়ায় ক্রেতারা এখন দেশীয় গহনা কিনতে বেশি আগ্রহী। এমনকি আমাদের দেশীয় স্বর্ণের মান এবং ডিজাইন আধুনিকায়ন হওয়ায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বর্ণ রপ্তানির কথা এখন ভাবনার সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বলেন, যেহেতু দেশের স্বর্ণ শিল্পীরা আন্তর্জাতিক মানের গহনা দেশেই প্রস্তুত করছে, সেহেতু দেশীয় গহনা বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া স্বর্ণের ক্যারেট ও গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য টনস মেশিন, হলমার্কস মেশিন বেশিরভাগ দোকানে রয়েছে।