প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে চাঞ্চল্যকর অঞ্জলী রাণী দাস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন ১২জনের মধ্যে ৫ জন গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার তাদের অভিভাবকদের নিয়ে থানায় হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করেন। পরে পুলিশ তাদের ওই মামলায় আটক দেখিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করার অনুমতির আবেদন জানিয়ে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করে। একইভাবে সন্দেহের তালিকায় থাকা অন্যরা নিজেরাই থানায় এসে আত্মসমর্পণ করবেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২১ জুলাই রাতে উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের ধোপা বাড়ি থেকে প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ দাসের বিধবা স্ত্রী অঞ্জলী রাণী দাসের (৬০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের ভাই অমর কৃষ্ণ দাস বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের (নং-২৫, তাং ২২.৭.২০২০) করেন। থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তকালে ঐ এলাকার আজাদ, রাছেল, গণি ও শাকিল নামে ৪ যুবককে আটক করে। এরপর তাদেরকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ, ডিএনএ ও ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করলেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাওয়া ডিএনএ-এর সাথে মিলেনি। তারা ৯মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পায়। এরপর চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তম দাস ও আরিফ হোসেন নামে দুজনকে আটক করে তাদেরকেও ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একই এলাকার আরো বেশ ক’জন পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে বলে জানতে পারে এলাকার লোকজন। পরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদ, ইউপি সদস্য শাহআলম কিরণ, সাবেক ইউপি সদস্য আঃ মান্নান ও স্থানীয় খাজুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ আলম থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় থাকা ১২ জনের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের অভিভাবকদের সাথে পরামর্শ করে।
অভিভাবকদের সম্মতিক্রমে ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে ১২জনের মধ্যে ৫জন যথাক্রমে রেদওয়ানুল হক সজিব, ফয়সাল হোসেন সুজন, খোকন মিয়া, বাবু হোসেন ও মাসুদ আলমকে থানা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। পরে থানা পুলিশ তাদের অঞ্জলী রাণী হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্যে অনুমতি চেয়ে দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে।
স্থানীয় সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামীদের আটকসহ তাদের বিচার হোক। একই সাথে যাতে মানুষ অযথা হয়রানি না হয়, সেজন্যে আমরা অভিভাবকদের সম্মতিক্রমে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেই। সেই অনুযায়ী সোমবার সন্দেহভাজন ৫জন স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, অঞ্জলী রাণী হত্যাকাণ্ডে প্রাপ্ত ডিএনএর সাথে ম্যাচিংয়ের জন্যে আটককৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে আদালতের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবো।