শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি কাজ তদারকি করছে জেলা শিক্ষা অফিস
বিমল চৌধুরী ॥

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে যেমন দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ, তেমনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝেও দেখা দিয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। দুই মিলিয়ে উভয়ের মাঝে আনন্দের আবহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আগামী প্রজন্মের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। শেষবারের মতো ক্লাস হয়েছিল একই বছরের ১৬ মার্চ। দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তা খুলে দেয়ার জন্যে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, যুক্তি দেখিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্নজন। কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পক্ষে ছিলো অনড়। অবশেষে বর্তমানে করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে যাওয়ায় ১৯টি শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।

সেই মতে ১২ সেপ্টেম্বর রোববার খোলা হবে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে শিফ্টওয়ারী মোট ৬ ঘণ্টা ক্লাস করার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা (প্রতি ঘণ্টা ৪০ মিনিট করে)। ক্লাস পরিচালনা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কায় সরকারি বিধিমোতাবেক ক্লাস পরিচালনার জন্যে একটি নির্ধারিত রুটিনও তৈরি করা হয়েছে। যাতে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণী, এসএসসি ২০২১/২০২২ ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্যে ক্লাস রয়েছে সপ্তাহে ৬ দিন। আর অন্যান্য ক্লাসের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে ৪র্থ, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, নবম ও একাদশ শ্রেণী সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস করার সুযোগ পাবে, যাতে কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব বিঘœসহ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ না হয় বা শ্রেণী সংকট দেখা না দেয়। বিদ্যালয় খোলার পূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই ছাত্র-ছাত্রীদের হাত ধোয়া, তাদের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ের ব্যবস্থা, শ্রেণীকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ ১৯টি দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর তা কার্যকরে কতটুকু ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে তা তদারকিতে মাঠে নেমেছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাগণ। তাঁরা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে বিদ্যালয়গুলো কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পাঠদানে প্রস্তুতি নিয়েছেন, সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তথ্য পাঠাবেন। তাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে কোনো বিদ্যালয়ে যদি অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়, তাহলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়ম ভঙ্গকৃত বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারেন বলে জানান চাঁদপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক লিটন কান্তি দাস।

তিনি গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পুরাণবাজারে অবস্থিত বিদ্যালয়গুলো খোলার পূর্ব প্রস্তুতি দেখতে এসে একথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করছেন এবং দেখছেন কোনো বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষাজনিত কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা। তবে আমরা এ পর্যন্ত যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখেছি, সবগুলোর পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সন্তোষজনক বলেই আমাদের মনে হয়েছে। তারা ১২ সেপ্টেম্বর ক্লাস শুরু করার জন্যে বিদ্যালয়গুলোকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করতে চেষ্টা করছেন। আশা করি সরকারের নির্দেশিকা পালন করতে আমরা সক্ষম হবো।

বিদ্যালয় খোলার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে কথা হয় পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণেশ চন্দ্র দাসের সাথে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে আমাদেরও ভালো লাগছিল না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সংবাদে আমরা খুশি। আমরা চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বিদ্যালয় খোলার ক্ষেত্রে সকল কার্যক্রম শেষ করতে। আমরা এজন্যে তাপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র, হাত ধোয়ার জন্যে বিদ্যালয়ের সম্মুখস্থানে নতুন করে অতিরিক্ত বেসিন স্থাপনপূর্বক সাবানসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ, দূরত্ব বজায় রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার টেবিল স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা পূর্বের মতো রয়েছে কিনা? এর জবাবে তিনি জানান, অ্যাসাইনমেন্ট নিতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি প্রায় ৫% ছাত্র-ছাত্রী অনুপস্থিত রয়েছে। কী কারণে তা হয়েছে বিদ্যালয় খোলার পর খোঁজ খবর নিয়ে তা জানতে পারব। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পাঠদানের ক্ষেত্রে আমরা পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে সক্ষম হবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়