প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অর্থাভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আকবর হোসেন
সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেন। সে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের দিনমজুর প্রতিবন্ধী রওশন আলী ও ফেরদৌসী বেগম দম্পতির ছেলে।
গত ৪ আগস্ট সিলেটে কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বিপরীত দিক থেকে ছোড়া গুলিতে বুক, হাত, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয় আকবর হোসেন। আহত অবস্থায় ওই দিনই তাকে সিলেটের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে বলা হলেও অর্থাভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে সে। গুলির ক্ষত নিয়ে বাড়ির বিছানায় পড়ে থাকলেও পঙ্গু বাবা ছেলের চিকিৎসা না করাতে পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
আকবর হোসেনের বাবা রওশন আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তার ছেলে বুকে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুরো শরীরজুড়ে রয়েছে ছররা গুলির ক্ষত-বিক্ষতের চিহ্ন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলের কোনোমতে চিকিৎসা করালেও পুরো সুস্থ করে তুলতে পারেন নি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সিংহভাগ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করলেও আমার বেলায় তা জোটেনি।
হাউমাউ করে কেঁদে তিনি আরও বলেন, আমি এক সময় প্রবাসে ছিলাম। সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে দিনমজুরি করে পরিবার নিয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি। এখন আবার ছেলের এই অবস্থা। ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় মিটাতে না পেরে এখন মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে আমাকে।
আহত আকবর হোসেনের মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, পেশায় সে গৃহিণী। তার ছেলে মেধাবী। নিজ সন্তানের শরীর থেকে ছররা গুলির ছোট ছোট কার্তুজ উঠিয়েছি। সেই গুলি আমার কাছে রয়েছে। ছেলের সুস্থতা ও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক এটাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে কামনা করি। এখন অভাব অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করতে হচ্ছে আমাদের।
আকবর হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৭ জুলাই থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলাম। প্রথমদিকে হালকা আঘাতের শিকার হলেও ৪ আগস্ট পুলিশের ছররা গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হই। আমাকে প্রথমে সিলেট সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে বলা হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। জীবনে কিছু পাই বা না পাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে আছি এবং থাকবো। যেহেতু আমিও একজন ছাত্র। আমি লেখাপড়ার মধ্যে থেকে বা শেষ করে ভালো একটি চাকুরি করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই।