প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০
গজারিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় শাহরাস্তির একই পরিবারের তিনজন নিহত
মেডিকেল পড়ুয়া পুত্রসহ বাবার করুণ মৃত্যু
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শাহরাস্তি উপজেলার পিতা-পুত্রসহ তিনজন নিহত হয়েছে। ৩ মে শুক্রবার রাত পৌনে ২টার সময় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই আলমগীর হোসেন (৫৫), তার ছেলে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেনের মামী লায়লা খাতুন (৬০) প্রাণ হারান। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেনের বড় ছেলে নজরুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের কাদরা গ্রামের আলী হোসেন মেম্বার বাড়ির কুয়েত প্রবাসী আলমগীর হোসেন গত সপ্তাহে ১৫ দিনের জন্যে বাংলাদেশে আসেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকার ডেমরা থানার সারুলিয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। ৩ মে শুক্রবার তিনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে প্রাইভেটকারযোগে শাহরাস্তির কাদরা গ্রামের নিজ বাড়িতে আসেন। বাড়ির জায়গা সম্পত্তির পরিমাপ শেষে রাত সাড়ে ১০টায় দুই ছেলে ও বাড়িতে থাকা তার মামীকে চিকিৎসার জন্যে তাদের সাথে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
রাত পৌনে ২টায় তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি গজারিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়। এ সময় গাড়ির চালক দরজা খুলে বাহির হলেও দরজা লক হয়ে যাওয়ায় আলমগীর হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বের হতে পারেননি। এলাকাবাসী ছুটে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, কিছুক্ষণ পরেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গড়িটি উদ্ধার করে। পানিতে শ্বাসরোধ হয়ে তিনজন প্রাণ হারান।
চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মহররম আলী জানান, সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। রাতে তাদের সাথে আমার আসার কথা ছিল। কিন্তু আমার কাজ থাকায় যেতে পারিনি। তিনি জানান, আলমগীর হোসেন একজন কুয়েত প্রবাসী, তিনি ঢাকার ডেমরা এলাকায় ৮ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন, পরিবারের সদস্যরা সেখানেই বসবাস করতো। নিহত হওয়া তার ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম ন্যাশনাল মেডিকেলের ফাইনাল বর্ষের ছাত্র।
মহররম আলী আরো জানান, আলমগীর হোসেনের মামা মারা যাওয়ার পর তার মামী লায়লা খাতুনকে তিনি তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। গ্রামের বাড়ি দেখাশোনা করেন মামী লায়লা খাতুন। উন্নত চিকিৎসার জন্য লায়লা খাতুনকে তাদের সঙ্গে ঢাকায় নেয়ার পথে তিনিও প্রাণ হারান। নিহত তিনজনকেই শাহরাস্তি উপজেলার কাদরা গ্রামের তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি চলছে। ৫মে রোববার যে কোনো সময় তাদের দাফন সম্পন্ন হবে। এদিকে তাদের মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।