প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের উপর হাইকোর্টের রুল
এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না, নাজিম ভাই বলছে স্বাক্ষর দিতে আমি দিছি : মামলার বাদী
চাঁদপুর পৌরসভার ভোটারদের বাদ রেখে এবং এই পৌরসভার ভোটার এমন নাগরিক সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেনা এমন বিধিবিধান জারি করে উপজেলা নির্বাচন করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট। মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের গঠিত বেঞ্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইন/ বিধিমালা সংশোধন করে নির্বাচন করার জন্য চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের উপর চার সপ্তাহের রুল নিশি জারি করেছে আদালত। আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়- চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুধুমাত্র সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের ভোটারদের দ্বারা করতে হবে। চাঁদপুর পৌরসভার ভোটারদের উপজেলা নির্বাচনে ভোট প্রদান থেকে বাদ রাখতে হবে। একইভাবে পৌরসভার কোনো ভোটার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। পৌরসভার ভোটারদের বাদ রেখে এবং তাদের প্রার্থী হওয়া থেকে বাদ রেখে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানার মামলার প্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশনা দেয়। গত ২৪ এপ্রিল হাইকোর্ট এই আদেশ দেন। মামলার বিষয়ে বাদী আবিদা সুলতানার সাথে কথা বললে তিনি এক কথায় বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। আমাকে নাজিম ভাই (উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান) কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেছে, আমি স্বাক্ষর দিছি। এছাড়া আর কিছুই আমি বলতে পারবো না। মামলা, রায় এ সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। ২৪ এপ্রিল বুধবার পুনরায় বাদী আবিদা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করে মামলার আদেশের কপি বা কোন্ আইনজীবীর কাছে মামলার কাগজপত্র আছে জানতে চাইলে তখনও আবিদা একই কথা বলেন- আমি আসলে কিছুই জানি না। সব নাজিম ভাইয়ের কাছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আবিদার বক্তব্য সঠিক নয়।
এদিকে কী বিষয়ে বাদী মামলা করেছে তার খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বাদী এবং তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন উপজেলা নির্বাচন আইন/ বিধিমালা সংশোধন চান। তাদের বক্তব্য হলো- উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ভোটারদের নিয়ে হয়। নির্বাচিত চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যানরা পৌরসভার ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত হলেও তাদের সেবা করার কোনো সুযোগ থাকে না এই জনপ্রতিনিধিদের। পৌর এলাকায় কোনো ভিজিপি, ভিজিডি, জেলে কার্ড, কোনো গভীর নলকূপ কিছুই বরাদ্দ দেয়া যায় না বিদ্যমান আইন অনুযায়ী। তাহলে পৌরসভার ভোটাররা কেনো ভোট দিয়ে উপজেলায় তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে? ভোটারদের কেনো এই নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে? সে জন্য আইন সংশোধন করে হয় পৌর এলাকায় উপজেলা পরিষদের কাজ করার ক্ষমতা দেয়া হোক, অথবা পৌর এলাকার ভোটারদের উপজেলা নির্বাচন থেকে বাদ রাখা হোক। এই মর্মে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বাদী।