প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
হাইমচরে কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে ভয়াবহ আগুন ॥ আহত ১০
হাইমচর এলাকার মেঘনা নদীতে ভোলা ইলিশা ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এমভি কর্ণফুলী-৩ চলন্ত লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে আকস্মিক আগুন লাগলে যাত্রীদের হুড়াহুড়িতে ১০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় যাত্রীদের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লঞ্চটিতে হাজারের বেশি যাত্রী ছিল বলে জানা যায়।
২০ এপ্রিল শনিবার সকাল ১১টার দিকে হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের মাঝেরচর মেঘনা নদীতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
হাইমচর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান পেদা ও নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের সর্দার তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
যাত্রীরা জানান, লঞ্চ স্টাফরা নদী থেকে পানি তুলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। চালক লঞ্চটি কোনোমতে চাঁদপুর এলাকার ওই চরের কাছে নিয়ে গেলে যাত্রীরা আগুন থেকে রক্ষা পেতে লাফিয়ে পড়ে নদীর তীরে আশ্রয় নেয়। এ সময় শত শত যাত্রী পানিতে ভিজে ও রোদে পুড়ে তীব্র দাবদাহে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
চাঁদপুর কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার জানান, ভোলার ইলিশা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৩ লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন লাগার পর তা নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। যাত্রীরা নিরাপদে রয়েছেন এবং বিকল্প লঞ্চের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, বেলা ১২টার সময় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে বিআইডব্লিউটিএ ও চাঁদপুর কোস্টগার্ড টিম দুর্ঘটনা স্থলে যায় এবং যাত্রীদের উদ্ধার তৎপরতার কাজে সহযোগিতা করে। লঞ্চটি চরে ভিড়ানোর কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে যাত্রীরা রক্ষা পায়।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, আগুন লাগার পর লঞ্চটি দ্রুত চরে ভিড়িয়ে দেয়া হয়। কর্ণফুলী-৩-এর যাত্রীদের কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের মাধ্যমে ঢাকায় নেয়া হয়। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের মাস্টার মোবারক হোসেন আমাকে ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসসহ আমাদের তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে কাজ করছে। কীভাবে লঞ্চে আগুন লেগেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে বলা যাবে। এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তাই ভোলার বিভিন্ন লঞ্চঘাটগুলোতে বেড়েছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়। কর্ণফুলী-৩ লঞ্চটিতেও কর্মস্থলে ফেরা বহু যাত্রী ছিল। আল্লাহর রহমত থাকায় অগ্নিকাণ্ডের এ দুর্ঘটনা থেকে লঞ্চযাত্রীরা প্রাণে রক্ষা পায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ওই এলাকার চরের মানুষগুলো জানান। আগুন লাগার ঘটনা ইঞ্জিন রুম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো। এই আগুন লঞ্চের উপরে এবং সামনে ছড়িয়ে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনার সম্ভাবনা ছিল। রাখে আল্লাহ মারে কে।