প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে অপহরণের পর মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা না পেয়ে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে শিশু নাবিল রহমান ইমন (৬)কে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামী মোঃ শাহজালাল হোসেন সোহাগ (২৬)কে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। আসামী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩)-এর ৭ ও ৮ ধারায় পৃথকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়া দণ্ডবিধি ২০১ ধারায় তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নিযাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এ রায় দেন।
হত্যার শিকার শিশু নাবিল ওই ইউনিয়নের মদনেরগাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ির মোঃ মিজানুর রহমানের ছেলে এবং স্থানীয় চান্দ্রা বাজার শিশু-কিশোর একাডেমির প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিলো।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মোঃ শাহাজালাল হোসেন সোহাগ একই ইউনিয়নের খাড়খাদিয়া গ্রামের মোঃ শাহজাহান মেকারের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর দুপুরে শিশু নাবিল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়িতে ফেরার পথে আসামী সোহাগ অপহরণ করে তাকে চান্দ্রা বাজারে তার দোকানে নিয়ে যায়। দোকানে একটি কক্ষে শিশুটিকে আটকে রাখে এবং মোবাইল ফোনে শিশুর মার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ওইদিনই তার গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরবর্তীতে শিশুটিকে কাগজের কার্টুনে ঢুকিয়ে বাজারের গলির ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে রাখে। শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে ওইদিনই শিশুর পিতা মিজানুর রহমান ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ২ অক্টোবর বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ডাস্টবিনে শিশু নাবিলের মরদেহ কার্টুন থেকে উদ্ধার করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। মুক্তিপণের টাকা দাবি করা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আসামী সোহাগকে ১৩ অক্টোবর গ্রেফতার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। আসামীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়।
ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আখতার হোসেন ঘটনাটি তদন্ত করে ওই বছর ২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চলাকালীন সময় ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। তবে আসামী জামিনের পর পলাতক রয়েছে। তার অনপস্থিতিতে এই রায় দেন বিচারক। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার।