বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৮

উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণার গল্প

মো. মাসুদ হোসেন
উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণার গল্প

পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসেই ব্যবসা সামলাচ্ছেন এ সময়ের অনেক নারী। নিজে উপার্জন করে অন্যের উপার্জনেও ভূমিকা রাখছেন তারা। এমনই একজন নারী উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা। হার্ট অ্যাটাক করে বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের টানাপোড়েনে দিশেহারা হয়ে যায় তার পরিবার। পড়াশোনা ঠিক রেখে অনলাইনে হোম মেইড খাবার বিক্রি করে সংসারের প্রায় সকল দায়িত্ব পালনেও অবদান রাখছেন এ-ই নারী উদ্যোক্তা।

হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম ও বেড়ে ওঠা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। তাই পরিবারের সকল কিছুতেই দায়িত্ব নিতে হয়ে তাকে। করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে ঘরবন্দি সময়ে বাসায় বসে ব্রেকিং করে নানা রকমের খাবার তৈরি করতেন তৃষ্ণা। পরিবারের লোকজন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের আগ্রহ এবং প্রতিনিয়ত নিজের ভালো করার প্রত্যাশা বেকিং নিয়ে কিছু একটা করতে চেয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের এ-ই ঘরবন্দি সময়ে ব্যবসায়ী বাবার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন তার সখের ব্যবসা। তিনি মনে করেন নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর। তেমনিভাবে একজন শিক্ষার্থীর পরিচয়ের পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তার পরিচয় গড়ে তুলেছে নিজের নামের পাশে তৃষ্ণা। চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রী পড়াশোনা চালিয়েও হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।

পাঁচ বছরের উদ্যোক্তা জীবনের এ পথচলায় পরিচিত হয়েছেন একজন ‘পিজ্জা আপু’ হিসেবে। আবার কারো কারো কাছে তিনি পরিচিতি অর্জন করেছেন ‘কেক আপু’ কিংবা ‘পায়েস আপু’ নামেও। কুড়িয়েছেন তিনি বিভিন্ন সম্মাননা।

খাবারের উপর প্রায় ৮-১০টি প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এ নারী উদ্যোক্তা। প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০২৩ সালে হঠাৎ বাবাকে হারিয়ে পড়ে যান চরম দুচিন্তায়। পরবর্তীতে আয়ের একটি অংশ থেকেই নিজের পড়াশোনার খরচ, পরিবারের দৈনন্দিন খরচসহ ছোট দুই ভাই-বোনের পড়ালেখার খরচও চালাতে হচ্ছে তাকে। বাকিটা ব্যয় করেন সামাজিক ও মানবিক কাজে।

অভৎড়ুধ'ং শরঃপযবহ নামে ফেসবুক পেইজ থেকে দেয়া হচ্ছে খাবারের সকল আপডেট। তার তৈরি করা কেক, পিজ্জা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন বিরিয়ানি, বিফ বিরিয়ানি, চিকেন ভুনা খিচুড়ি, কাচ্চি, হাঁসের মাংস, গরুর মাংসের কালা ভুনা, শাহী ডালা, পায়েস, আচারসহ বাহারি রকমের সুস্বাদু এই খাবার চলে যায় হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ চাঁদপুরের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অর্ডার পাওয়া খাবারগুলো প্রায় রাত জেগে জেগে তৈরি করতে হয়ে তাকে।

খাবার তৈরি ও বিক্রির পাশাপাশি তিনি শুরু করেন অর্গানিক হেয়ার অয়েল এর ব্যবসাও। ৫০টিরও বেশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি করা এ তেলের রয়েছে বিশেষ গুণ। চুল পড়া রোধ, চুলের পুষ্টি জোগানো, চুলের ডিপ কন্ডিশনিং, নতুন চুল গজাতে সাহায্য, হেয়ার ফলিকল মেরামত, খুশকি দূর, চুলের গোড়া মজবুত, চুলের অকালপাকা রোধ, চুলের আগাফাটা রোধসহ চুলের সকল সমস্যার সমাধান করে এই অর্গানিক হেয়ার অয়েলটি।

মায়ের ব্যাপক উৎসাহ আরও অনুপ্রেরণায় সফল হওয়া নারী উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা বলেন, এ পর্যন্ত আমি মানুষের কাছে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তবে শুরুতে অনেকে হাসাহাসি করলেও আজ তারা আমার অবস্থান দেখে নিজেরাই আমার প্রশংসা করছে। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত আমার খাবারের অনেক অনেক রিভিউ রয়েছে এবং আমি যে-সব জায়গায় ডেলিভারি দিতে পারি না তারা দূর থেকে এসে আমার খাবার নিয়ে যাচ্ছে। এখন আমার বেশিরভাগ কাস্টমারই রিপিট কাস্টমার। তিনি আরো বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে আত্মনির্ভরশীল ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই বিজনেসটা শুরু করেছি। কিন্তু এখন বাবা মারা যাওয়ার পরে এটা আমার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। এই বিজনেসটা দিয়েই আমি আমার পরিবারের পাশে দাঁড়াই। তৃষ্ণা বলেন, এ ব্যবসায় তেমন কোনো বড় বাধা পড়েনি, কিন্তু আশেপাশের কিছু মানুষ হাসি-ঠাট্টা করত। মুন্সিবাড়ির মেয়ে খাবার বিক্রি করে, আবার নিজে মানুষের বাসায় গিয়ে খাবার দিয়ে আসে। এমনকি মেলায় গিয়েও খাবার বিক্রি করে এসব বাধাই এসেছিল। তাদের এসব কথা আমলে না নিয়ে আমি আমার বিজনেস নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। চাকরি আমার কখনোই পছন্দ ছিল না। আমি নিজে প্রতিষ্ঠান দিব আর নিজের সেই প্রতিষ্ঠানে আমি কাজ করব। সরকারি প্রশিক্ষণ এবং সরকার থেকে ক্ষুদ্র ঋণ পেলে কষ্টে গড়া আমার এই প্রতিষ্ঠানটি আরো সামনে এগিয়ে নিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী। এতে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারবো ইনশাআল্লাহ। পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসেই ব্যবসা সামলাচ্ছেন এ সময়ের অনেক নারী। নিজে উপার্জন করে অন্যের উপার্জনেও ভূমিকা রাখছেন তারা। এমনই একজন নারী উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা। হার্ট অ্যাটাক করে বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের টানাপোড়েনে দিশেহারা হয়ে যায় তার পরিবার। পড়াশোনা ঠিক রেখে অনলাইনে হোম মেইড খাবার বিক্রি করে সংসারের প্রায় সকল দায়িত্ব পালনেও অবদান রাখছেন এ-ই নারী উদ্যোক্তা।

হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম ও বেড়ে ওঠা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। তাই পরিবারের সকল কিছুতেই দায়িত্ব নিতে হয়ে তাকে। করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে ঘরবন্দি সময়ে বাসায় বসে ব্রেকিং করে নানা রকমের খাবার তৈরি করতেন তৃষ্ণা। পরিবারের লোকজন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের আগ্রহ এবং প্রতিনিয়ত নিজের ভালো করার প্রত্যাশা বেকিং নিয়ে কিছু একটা করতে চেয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের এ-ই ঘরবন্দি সময়ে ব্যবসায়ী বাবার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন তার সখের ব্যবসা। তিনি মনে করেন নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর। তেমনিভাবে একজন শিক্ষার্থীর পরিচয়ের পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তার পরিচয় গড়ে তুলেছে নিজের নামের পাশে তৃষ্ণা। চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রী পড়াশোনা চালিয়েও হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।

পাঁচ বছরের উদ্যোক্তা জীবনের এ পথচলায় পরিচিত হয়েছেন একজন ‘পিজ্জা আপু’ হিসেবে। আবার কারো কারো কাছে তিনি পরিচিতি অর্জন করেছেন ‘কেক আপু’ কিংবা ‘পায়েস আপু’ নামেও। কুড়িয়েছেন তিনি বিভিন্ন সম্মাননা।

খাবারের উপর প্রায় ৮-১০টি প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এ নারী উদ্যোক্তা। প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০২৩ সালে হঠাৎ বাবাকে হারিয়ে পড়ে যান চরম দুচিন্তায়। পরবর্তীতে আয়ের একটি অংশ থেকেই নিজের পড়াশোনার খরচ, পরিবারের দৈনন্দিন খরচসহ ছোট দুই ভাই-বোনের পড়ালেখার খরচও চালাতে হচ্ছে তাকে। বাকিটা ব্যয় করেন সামাজিক ও মানবিক কাজে।

Afroza's kitchen নামে ফেসবুক পেইজ থেকে দেয়া হচ্ছে খাবারের সকল আপডেট। তার তৈরি করা কেক, পিজ্জা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন বিরিয়ানি, বিফ বিরিয়ানি, চিকেন ভুনা খিচুড়ি, কাচ্চি, হাঁসের মাংস, গরুর মাংসের কালা ভুনা, শাহী ডালা, পায়েস, আচারসহ বাহারি রকমের সুস্বাদু এই খাবার চলে যায় হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ চাঁদপুরের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অর্ডার পাওয়া খাবারগুলো প্রায় রাত জেগে জেগে তৈরি করতে হয়ে তাকে।

খাবার তৈরি ও বিক্রির পাশাপাশি তিনি শুরু করেন অর্গানিক হেয়ার অয়েল এর ব্যবসাও। ৫০টিরও বেশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি করা এ তেলের রয়েছে বিশেষ গুণ। চুল পড়া রোধ, চুলের পুষ্টি জোগানো, চুলের ডিপ কন্ডিশনিং, নতুন চুল গজাতে সাহায্য, হেয়ার ফলিকল মেরামত, খুশকি দূর, চুলের গোড়া মজবুত, চুলের অকালপাকা রোধ, চুলের আগাফাটা রোধসহ চুলের সকল সমস্যার সমাধান করে এই অর্গানিক হেয়ার অয়েলটি।

মায়ের ব্যাপক উৎসাহ আরও অনুপ্রেরণায় সফল হওয়া নারী উদ্যোক্তা তানজিনা আফরোজ তৃষ্ণা বলেন, এ পর্যন্ত আমি মানুষের কাছে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তবে শুরুতে অনেকে হাসাহাসি করলেও আজ তারা আমার অবস্থান দেখে নিজেরাই আমার প্রশংসা করছে। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত আমার খাবারের অনেক অনেক রিভিউ রয়েছে এবং আমি যে-সব জায়গায় ডেলিভারি দিতে পারি না তারা দূর থেকে এসে আমার খাবার নিয়ে যাচ্ছে। এখন আমার বেশিরভাগ কাস্টমারই রিপিট কাস্টমার। তিনি আরো বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে আত্মনির্ভরশীল ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই বিজনেসটা শুরু করেছি। কিন্তু এখন বাবা মারা যাওয়ার পরে এটা আমার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। এই বিজনেসটা দিয়েই আমি আমার পরিবারের পাশে দাঁড়াই। তৃষ্ণা বলেন, এ ব্যবসায় তেমন কোনো বড় বাধা পড়েনি, কিন্তু আশেপাশের কিছু মানুষ হাসি-ঠাট্টা করত। মুন্সিবাড়ির মেয়ে খাবার বিক্রি করে, আবার নিজে মানুষের বাসায় গিয়ে খাবার দিয়ে আসে। এমনকি মেলায় গিয়েও খাবার বিক্রি করে এসব বাধাই এসেছিল। তাদের এসব কথা আমলে না নিয়ে আমি আমার বিজনেস নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। চাকরি আমার কখনোই পছন্দ ছিল না। আমি নিজে প্রতিষ্ঠান দিব আর নিজের সেই প্রতিষ্ঠানে আমি কাজ করব। সরকারি প্রশিক্ষণ এবং সরকার থেকে ক্ষুদ্র ঋণ পেলে কষ্টে গড়া আমার এই প্রতিষ্ঠানটি আরো সামনে এগিয়ে নিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী। এতে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়