বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি-২

ইচ্ছে করে আবারো কলেজে ভর্তি হই, ক্লাস করি, মাঠে বসে আকাশ দেখি, স্বপ্ন আঁকি

------মিলন খান

ইচ্ছে করে আবারো কলেজে ভর্তি হই, ক্লাস করি, মাঠে বসে আকাশ দেখি, স্বপ্ন আঁকি
আলআমিন হোসাইন ॥

চাঁদপুর সরকারি কলেজের কৃতী শিক্ষার্থী মিলন খান। তিনি একাধারে কবি, গীতিকবি ও কৃষিবিদ। মোটকথা, বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এক মানুষ। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চাঁদপুর শহরে। ১৯৮১ সালে তিনি চাঁদপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। পেশাগত জীবনে প্রথমে শিক্ষকতা এবং পরে এটিএন মিউজিকে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা তিনি। দেশবরেণ্য বহু শিল্পী তাঁর লেখা গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

মিলন খানের লেখা গান অডিও, রেডিও, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে প্রচারিত হয়। পেশাগত জীবনের শুরু থেকে শুদ্ধ ধারার গান করার প্রয়াস অব্যাহত তাঁর। ‘টাইগার্স’ নামে ব্যান্ডদল গঠন করেন তিনি। স্বপ্নের পদ্মাসেতু নিয়ে গান দিয়ে ব্যান্ডটির যাত্রা শুরু হয়। ফেসবুকে ‘মিলন খান ডট টিভি’ পেজ ও ইউটিউবে ‘মিলন খান টিভি’তে তাঁর গানগুলো শ্রোতাদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।

সৃজনশীল ব্যক্তি মিলন খান কৃষিভিত্তিক শতাধিক গানের ডকুমেন্টারি ও কৃষি সেক্টরে মিউজিক্যাল মুভি নির্মাণ করেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ‘ঘাসফুলের কবি’ হিসেবে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তাঁর একমাত্র কাব্যগ্রন্থ ‘জলের নগর’।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা সম্পর্কে জানতে চাই।

মিলন খান : আমার জন্ম ৩১ মার্চ। চাঁদপুর শহরের তালতলা ও প্রফেসরপাড়ায় আমার বেড়ে ওঠা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কত সালে, কোন্ শ্রেণিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন?

মিলন খান : ১৯৮১ সালে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। ১৯৮৩ সালে প্রথম বিভাগে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সে সময় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিলো?

মিলন খান : কলেজ ক্যাম্পাসের মনোরম পরিবেশ ছিলো। বিশাল মাঠ ছিলো। কলেজের নান্দনিক পরিবেশে সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম। এক কথায়, খুবই সুন্দর ও মায়াময় ছিলো পুরো কলেজ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষক এবং সহপাঠী ছিলেন কারা। তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

মিলন খান : শিক্ষকদের কাছ থেকেই কিঞ্চিৎ ভালো ছাত্র হিসেবে একটু বেশি আদর-যত্ন পেয়েছি সবসময়। এজন্যে শিক্ষাজীবনের সব শিক্ষকই আমার প্রিয় শিক্ষক। সহপাঠীদের মধ্যে ফখরুল ইসলাম, সুমন সাঈয়েদ, বাবুল শেখ এদের সাথে বেশ সখ্যতা ছিলো আমার। দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, গান্ধী এরাও সবাই স্কুল ও কলেজ জীবনের বন্ধু। মেয়েদের মাঝে হীরা, সেঁজুতি সাহানা আমার ভালো বন্ধু।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজ জীবনের উল্লেখযোগ্য কোনো সুখের এবং দুঃখের স্মৃতির কথা জানতে চাই, যা আজও আপনার মনে পড়ে।

মিলন খান : আমার বাসা থেকে কলেজের দূরত্ব খুবই কম। তালতলা থেকে অল্প কয়েক মিনিটেই চলে আসতাম কলেজে। কলেজ মাঠে আমরা প্রচুর ফুটবল খেলতাম, ক্রিকেট খেলতাম। কলেজে পড়াকালেই আমার ভেতরে লেখালেখির বীজ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। চোখ বুঁজলে এখনো অনিন্দ্য সুন্দর কলেজ ক্যাম্পাস চোখে ভেসে ওঠে। কলেজ জীবন তো এক নিমিষেই উবে যায়। দেখতে দেখতে দুবছর চলে যায়, পুরো কলেজ জীবনটাই ছিলো আনন্দমুখর।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজে পড়াবস্থায় নিজেকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখতেন?

মিলন খান : মূলত স্কুলজীবনে মনের ভেতর গীতিকার হওয়ার বীজ বপন করি। কলেজ জীবনে ভাবতাম, আমি কি গীতিকার হতে পারবো? সারাক্ষণ এই ভাবনা ছিলো। কিন্তু ভয়ে-লজ্জায় বলতে পারতাম না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ক্লাস এবং আড্ডাবাজির স্মৃতি সম্পর্কে কিছু বলুন।

মিলন খান : আড্ডা সবসময়ই আমার খুব প্রিয় বিষয় ছিলো। কলেজের নিচতলাতে বিশাল বড় একটা রুমে ক্লাস হতো আমাদের। প্রায়ই পেছনের বেঞ্চে বসতাম, কেননা ক্লাস ফাঁকি দেয়ার জন্যে পেছনের দরোজা দিয়ে অনেক দিনই বেরিয়ে গিয়েছি। কলেজ জীবনেই ক্লাস ফাঁকি দেয়া শিখি। অস্থির স্বভাবের অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিলাম। বেশ লাজুক ছিলাম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমানে কলেজে এলে কোন্ স্মৃতি বেশি মনে পড়ে?

মিলন খান : আহারে জীবন! মনে হয় আবারো কলেজে ভর্তি হই, ক্লাস করি। কলেজের মাঠে বসে আকাশ দেখি, লাল-নীল স্বপ্ন আঁকি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ৭৫ বছরপূর্তিতে আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

মিলন খান : ৭৫ বছরপূর্তি হয়তো উপভোগ করবো, শতবর্ষ কি পারবো? অনেক পুরানো বন্ধু-বান্ধবের সাথে দেখা হবে, কথা হবে, আড্ডা হবে, ভালো লাগার ¯্রােতে ভেসে যাবো দুরন্ত প্রথম যৌবনে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ কেনো সেরা?

মিলন খান : চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার মান খুবই ভালো। পাশাপাশি নান্দনিক মনোরম পরিবেশ তো মনমাতানো। মেধাবী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এ কলেজের প্রাণ। শুধু চাঁদপুর জেলা নয়, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে চাঁদপুর সরকারি কলেজের ফলাফল সবসময় ভালো অবস্থানে থাকে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা/স্বপ্ন কী?

মিলন খান : চাঁদপুর সরকারি কলেজের উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজ জীবনের উল্লেখযোগ্য অর্জন কী?

মিলন খান : আমি একজন চাঁদপুরীয়ান, চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়েছি-এটাই কম কী?

চাঁদপুর কণ্ঠ : কোন্ কোন্ সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন?

মিলন খান : মনে পড়ছে না, তবে ভেতর-বাইরে আমি ছিলাম ভালো ছাত্রের লেবাসে ষোলআনা বাউলিয়ানা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : নতুনদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন।

মিলন খান : নতুনদের বলছি, আকাশের তারা গোণো, পাখির গান শোনো, মেঘনা-ডাকাতিয়ার ঢেউ মাপো, জীবন তো একটাই, একে হেসে-খেলে উড়িয়ে দাও।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উল্লেখিত প্রশ্নের বাইরে আপনার কোনো কথা থাকলে বলুন।

মিলন খান : চাঁদপুর আমার জলের নগর, ডাকাতিয়া আমার জলপরী, পুনর্জন্ম হলেও যেনো আমি হই চাঁদপুরী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়