প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:১৯
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু
চাঁদপুরে তিন স্তরের নিরাপত্তা
অপেক্ষার প্রহর শেষ করে ৯ অক্টোবর বুধবার সারাদেশে শুরু হয়েছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আসুরিক শক্তি বিনাশ এবং দেশ ও জাতির সুখ শান্তি আর ঐশ্বর্য কামনা করে সনাতনী ভক্তবৃন্দ বুধবার বেলতলায় পূজার মধ্য দিয়ে বৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ সূচনা করেন। আগামী ১২ অক্টোবর শনিবার তর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দশমী যাত্রা শেষ করে সুবিধাজনক সময়ে দেবী কাঠামো বিসর্জনের পর শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। অবসান হবে সকল উৎকন্ঠা আর দুশ্চিন্তার। বুধবার আনুষ্ঠানিক পূজা শুরু হলেও আয়োজকসহ সনাতনীদের মাঝে রয়েছে নানা দুশ্চিন্তা। তাদের মাঝে বিরাজ করছে অজানা আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা শেষ হবে তো? তবে চাঁদপুর জেলার সনাতনী নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ সকলেই আশাবাদী, যে কোনো পরিস্থিতিতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জেলা চাঁদপুরে সম্প্রীতির ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রাখা হবে। তাদের সেই চিন্তা-চেতনা থেকেই লক্ষ্য করা গেছে চাঁদপুরে পূজার নিরাপত্তা প্রদানে রয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা প্রদানে কাজ করছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। তারা পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা প্রদানে সার্বক্ষণিক সক্রিয় রয়েছেন। প্রয়োজনীয় খোঁজ খবর নিচ্ছেন পূজারী থেকে শুরু করে স্থানীয় সনাতনী নেতৃবৃন্দের । এছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব সম্পন্নে অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্যগণও বেশ তৎপরতার সাথে কাজ করছেন বলে জানা যায়। তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন জেলার সকল পূজা মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে। পূজার নিরাপত্তা রক্ষায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার লক্ষ্যে মনিটরিং টিম গঠন করেছে চাঁদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। পাশাপাশি আরো কাজ করছে জেলা হিন্দু মহাজোট, সনাতনী ছাত্র সমাজসহ সনাতনী সংগঠন সমূহ। এই বছর চাঁদপুর জেলায় ২২২ টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর মধ্যে রয়েছে ২ টি ঘট পূজা। অর্থাৎ ২ টি মণ্ডপে দেবী প্রতিমা স্থাপিত হয় নি। গত বছর জেলায় এই পূজার সংখ্যা ছিলো ২২৬ টি। তবে পূজার সংখ্যার দিক থেকে চাঁদপুর সদর পৌরসভায় এই বছর পূজা হচ্ছে ৩৫ টি, যা জেলার অন্যান্য পৌরসভার চেয়ে বেশি। বুধবার উৎসবের প্রথমদিন ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হলেও মণ্ডপে দর্শনার্থীদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। তবে বৃহস্পতিবার থেকে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজায় দেখা মিলবে দর্শনার্থীদের। এই বছর অষ্টমী ও নবমী পূজা একদিন হওয়ায় দর্শনার্থীগণ অন্যান্য বছরের তুলনায় একদিন পূজা দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে আগামী ১২ অক্টোবর শনিবার তর্পণ বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হলেও এই দিন প্রতিমা বিসর্জন হবে না বলে জানান জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ। তারা বলেন, যথা নিয়মেই পূজা সম্পন্ন হবে এবং ১৩ অক্টোবর রোববার প্রতিমা বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হবে। সেই সিদ্ধান্তক্রমে ব্যাপক আয়োজনের মধ্যে দিয়ে চাঁদপুর পৌরসভার চৌধুরীঘাট এলাকায় সন্ধ্যা-রাতে বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হবে। এই বছর চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪১, হাইমচর উপজেলায় ০৬, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২১, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২৯, কচুয়া উপজেলায় ৩৯ (পূর্বে ৪২) , শাহরাস্তি উপজেলায় ১৯, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৩২, মতলব উত্তরে ৩৪ (পূর্বে ৩৬) টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে আয়োজনে প্রাচুর্য থাকলেও হৃদয়ের উৎসাহে কেমন জানি একটু শূন্যতা বিরাজ করছে পূজারী থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হৃদয়ে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে মহাসপ্তমী পূজা।