রাণীর দেশের সবাই কাঁদিয়ে ইউরোর চ্যাম্পিয়ন ইতালি

অবেশেষে ইতালির দীর্ঘ অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটল অবশেষে। ইউরো কাপ ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ১-১ ড্রয়ের পর ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়েছে ইটালি। ১৯৬৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের স্বাদ পেল কোচ রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা।

তবে সেসব কিছুকে এবার পেছনে ফেলার দারুণ ইঙ্গিতই দিচ্ছিল থ্রি লায়ন্সরা। তারা এগিয়ে গিয়েছিল ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই। মাত্র ১১৭ সেকেন্ডে কিয়েরান ট্রিপিয়ারের ক্রস থেকে লুক শ’র ইতিহাস গড়া এক গোলে। ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে যে এর চেয়ে কম সময়ে আর কখনো গোল হয়নি।

তবে এখানে যেন ঠিক তিন বছর আগে লুজনিকি স্টেডিয়ামের সেই স্মৃতি ফিরে ফিরে আসছিলো। সেদিন যে ক্রোয়াটদের বিপক্ষে ইংলিশরা এগিয়ে গিয়েছিল শুরুতেই। কাকতালীয় আরও আছে। গোলটা এসেছিল ট্রিপিয়েরের পা থেকে, এদিন গোল না করলেও যোগানটা যে এসেছিল তার পা থেকেই।

খেলার শুরুর গোলটা হজম করে যেন কিছুটা হকচকিয়েই গিয়েছিল আজ্জুরিরা। তাদের জন্য পরিস্থিতিটা কঠিন করে তুলেছিল ইংলিশ রক্ষণ। ফলে প্রতিপক্ষ গোলমুখে তাদের প্রথম শটটা ম্যাচের আধঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর। যদিও ফেদেরিকো কিয়েসার শটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে । এরপর ইটালির চিরো ইমোবিলের শট ঠেকান জন স্টোনস, ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।

১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে শুরুর ধাক্কা সামলে ইতালি প্রথমার্ধে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছিল। সে ধারাটা অব্যাহত রইল বিরতির পর। তবে ইংল্যান্ডের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না কোচ সাউথগেটের শিষ্যরা। অবশেষে প্রথম শটটা নেওয়া সম্ভব হলো ৬২ মিনিটে। কিয়েসার শটটা ঠেকাতে অবশ্য বেগ পেতে হয়নি পিকফোর্ডকে।

ইংলিশ দুর্গে ইতালিয়ানদের হানা পড়ল ৬৭ মিনিটে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে মার্কো ভেরাত্তির হেডার ঠেকিয়ে দেন আবারো পিকফোর্ড। কিন্তু ফিরার চেষ্টায় লিওনার্দো বনুচ্চির চেষ্টা আর ফেরাতে পারেননি পিকফোর্ড। সমতা ফেরে ইউরোপ ফাইনাল ম্যাচে। বনুচ্চি এবার গড়ে ফেলেন আরেক ইতিহাস। ইউরোর ফাইনালে তার চেয়ে বেশি বয়সে গোল নেই যে আর কারো!

ইটালির কাজটা তখনো শেষ হয়নি। এরপর জয়সূচক গোলের লক্ষ্যে আক্রমণ শানিয়েছে দুই দলই। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ হয়নি কোনো দলেরই। নির্ধারিত সময়ে এ পরিস্থিতি খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও সেই একই দৃশ্যের আবারো পুনরাবৃত্তি। টাইব্রেকারে বাঁশি বাজে তাতে। সেখানেও ইংলিশরা এগিয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয় পেনাল্টিতে আন্দ্রেয়া বেলোত্তির মিসে। তবে এর পরের পেনাল্টিতেই আবার দুই দল ফেরে সমতায়। মার্কাস র‍্যাশফোর্ডের পেনাল্টি গিয়ে লাগে গোলপোস্টে। পরের দুই পেনাল্টিতেও ব্যর্থতাই পেল ইংলিশরা। আর নিজেদের দুটো পেনাল্টিতে গোল করে জয় নিশ্চিত করে ইতালিয়ানরা। পেনাল্টিতে ৩-২ ব্যবধানে এই জয় ৫৩ বছরের ইউরো অপেক্ষা শেষ করে ইতালির। রবার্তো মানচিনির দল বনে যায় ইউরোপসেরা।