শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে

হাইমচর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোস্তাক মিয়া বলেছেন, আজকে এখানে একটি সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। যে নেতৃত্ব আগামী দিনে হাইমচরের প্রতিটি এলাকাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দুর্গ গড়ে তুলবে। তাঁরা শহীদ জিয়ার, খালেদা জিয়ার, ও তারেক রহমানের দুর্গ গড়ে তুলবেন। আমি আশা করি, আজকে যে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবে, তাঁরা এই হাইমচরের দুঃখী মানুষের পাশে থাকবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, দীর্ঘ ১৬ বছর বিগত ফ্যাসিস্ট, ভোটার বিহীন নির্বাচনের শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই ধ্বংস হিসেবে হাইমচরেরও বিভিন্ন এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে আপনাদের পাশেই সারা বাংলাদেশে যে বদনামটি হয়েছিল বালুখেকো একটি নামের কারণে, সেই বালুখেকোর যাতে আবার জন্ম না হয়। আজকের এই নেতৃত্বকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। মানুষ যাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কোনো বদনাম করতে না পারে। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় আজকের নেতা-কর্মীদের সেটি খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানুষের রাজনীতি করি। সাধারণ মানুষের রাজনীতি করে এলাকার উন্নয়ন করে এলাকার মানুষের পাশে থাকবো সেটাই স্বাভাবিক।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে আপনারা দেখেছেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি সরকারের আমলে দেশ পরিচালনা করেছেন। বাংলাদেশকে স্বনির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন। মানুষ উন্নয়ন চায়। তাই আজকে সময় এসেছে আবারো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে আগামী দিনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় নিয়ে আসার। তিনি বলেন, ১৬ বছর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে, লুটপাট, রাহাজানি, টেন্ডারবাজি সারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে হাসিনা সরকারের দোসররা। এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি যাতে বাংলাদেশে আর না হয় সেটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এদেশের মানুষ ১৬ বছর কেন আন্দোলন করেছে? এই ১৬ বছরে হাজার হাজার নেতা-কর্মী মামলা-মোকদ্দমা খেয়েছে, এই ১৬ বছরে হাজার হাজার নেতা-কর্মী রক্ত দিয়েছে, গুম হয়েছে। এর পেছনে একটাই কারণ, বাংলাদেশের মানুষ একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। যেই নির্বাচনে প্রত্যেকেই মতামত স্বাধীনভাবে দিতে পারবে, প্রত্যেকের মতামত তাদের ইচ্ছেমতো প্রকাশ করতে পারবে, আর সেটার জন্যেই আমাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন। কিন্তু আজকে ষড়যন্ত্র চলছে কীভাবে আজকের এই সফলতাকে নস্যাৎ করা যায়। আমরা একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, কোনো টালবাহানা বাংলাদেশের মাটিতে চলবে না। সাময়িকভাবে করতে পারবেন, কিন্তু লাভ হবে না। নির্বাচন দিতে হবে এবং সেই নির্বাচনে আপনাদের রায় নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ইনশাআল্লাহ ক্ষমতায় আসবে, সেটা আমরা আশা করি।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিকেলে হাইমচরের দুর্গাপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যাহ সেলিম।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উল্লাহ বেপারীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাজহারুল ইসলাম শফিক পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফয়সাল গাজী বাহার, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাঈল হোসেন পাটওয়ারী, হাইমচর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম মাঝি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জহির মিয়াজী প্রমুখ।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল খালেক খান, প্রভাষক হারুনুর রশীদ, হাজী ইসহাক খোকন, মো. মিজানুর রহমান শেখ, মো. বিল্লাল হোসেন আখন, আজিজুল হক বাবুল, সরদার আবু তাহের, উপজেলা বিএনপি'র সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মো. জহিরুল ইসলাম মাঝি, মো. বোরহান উদ্দিন জুটন, দিদারুল ইসলাম জমাদার, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নান আখন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঁইয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. ফয়সাল আহম্মেদ আখন, সাধারণ সম্পাদক মো. মিলাদ হোসেন মাঝি, হাইমচর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. আহসান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজ আহমেদসহ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন ব্যতীত কোনো প্রার্থীর নাম না পাওয়াতে সভাপতি হিসেবে আমিন উল্লাহ বেপারী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাজহারুল ইসলাম শফিক পাটোয়ারীকে ঘোষণা করেন। এর ফলে দুজনই পুনর্নির্বাচিত হবার সুযোগ পেলেন।