প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২১, ০০:০০
মতলবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় হাশেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিল
মতলব দক্ষিণে উদ্বোধনের অপেক্ষায় হাশেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিল। মিলটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং মেশিনপত্র স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। স্থানীয়ভাবে সাধারণ মানুষ এমন একটি শিল্প-কারখানাকে এলাকার উন্নয়নের জন্যে ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করছে। এতে স্থানীয় অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
|আরো খবর
বাংলার সোনালী আঁশ পাট একসময় দেশের প্রধান অর্থকরি ফসল ছিলো। সে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে দেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এমনি একজন উদ্যোগী ব্যক্তিত্ব মতলব দক্ষিণ উপজেলার সারপাড় খান বাড়ির মোঃ বদরুজ্জামান খান লোকমান এবং মোঃ জাকির হোসেন খান বাবুল। উভয়ের বাবা মরহুম আবুল হাশেম খানের নামানুসারে উপজেলার ঘিলাতলী সাইনবোর্ড মোড়ে হাশেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিল স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন প্রায় ১০ বছর আগে। দুই ভাই যথাক্রমে মিলের চেয়ারম্যান এবং এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তাঁদের মেধা ও যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে সার্বিক কাজ তদারকি করছেন।
অগ্রণী ব্যাংক মতিঝিল শাখার আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এই জুট মিল। এই মিল থেকে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির সুতা, চটের বস্তা, চট, চালের বস্তা, সুতলী, ব্যবহৃত পোশাকের সুতা ইত্যাদি উৎপাদন করা হবে বলে জানান জুট মিলের চেয়ারম্যান মোঃ বদরুদজ্জামান খান লোকমান।
নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হয় এ মিলের কার্যক্রম। এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনা মাহামারী আঘাত করলে পরিস্থিতি সাধ্যের বাইরে চলে যায় বলে জানান মিলের এমডি মোঃ জাকির হোসেন খান। কারণ মিলের সকল যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করে আনতে হয়। তারপরও গত এক বছর যাবৎ নিরলসভাবে কাজ করে মিলটিকে উৎপাদনমুখী করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন মেশিন ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
মিলের সার্বিক তত্ত্ববধানকারী মোঃ সুফি আহমেদ খান জানান, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আগামী ৩ মাসের মধ্যে মিলের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবো বলে আশা করি।
মিল এলাকার অধিবাসী ও ৩নং খাদেরগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম ঢালী জানান, হাশেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিলটি দ্রুত চালু হোক এটা আমরা চাই। এতে এলাকা উন্নত হবে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমি এ জুট মিলের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
মিলের জিএম মোঃ মহব্বত আলী মিয়া জানান, নিয়মমাফিক জুট মিলটি পরিচলনা করতে পারলে এখানে প্রতিদিন এক্সপোর্ট কোয়ালিটি মানের ৮টন পাটের সুতা উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি তাঁতের সুতা উৎপাদন হবে ৬ টন। আর এই কাজ বাস্তবায়ন করতে হাশেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিলে দুই শিফটে প্রায় ৫শ’ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এটা বেকারত্ব দূরীকরণে সাহায্য করবে। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির সুতা বিদেশে বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মিলের জিএম মোঃ মহব্বত আলী মিয়া জানান, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে প্রতিদিন এখানে ১৫ টন শুকনো পাট প্রয়োজন হবে। যার যোগান পাশর্^বর্তী জেলা থেকে এবং স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হবে।
এমন একটি উৎপাদনশীল চিন্তা এই অজ পাড়াগাঁয়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা কেন করছেন জানতে চাইলে মিলের চেয়ারম্যান বদরুদজ্জামান খান লোকমান জানান, আমি ছোটবেলা থেকেই উৎপাদনশীল কিছু একটা করার চেষ্টা করতাম। আমরা পারিবারিকভাবে হাজীগঞ্জ উপজেলার হামিদিয়া জুট মিলটি কয়েক বছর ভাড়া নিয়ে চালিয়েছি। পরে এমন একটা মিল নিজের এলাকায় স্থাপন করার চিন্তা করি। যাতে নিজের এলাকা উন্নত হয়, স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান হয় এবং জাতীয় অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।