প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
কচুয়ায় শিক্ষার মানোন্নয়নে মতবিনিময় সভায় ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি
বঙ্গবন্ধু নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন
একজন বেসরকারি শিক্ষকের বেতন সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসের দারোয়ানের সমতুল্য : ড. মুনতাসীর মামুন
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি বলেছেন, সকল বাধা-বিঘœ সত্ত্বেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ৮ ভাগেরও বেশি, খাদ্যের ঘাটতি নেই, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে। এ লক্ষ্যে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন নারী ও পুরুষকে শিক্ষাক্ষেত্রে সমান সুযোগ প্রদান করতে হবে। এ উপলব্ধি থেকে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে একই মানের অবৈতনিক শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুর সে স্বপ্ন ও উপলব্ধির আলোকে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। আলোকোজ্জ্বল সমাজ গঠনে শিক্ষকদেরকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। শিক্ষক সমাজের উন্নয়নে আজ যেসব দাবি এ মতবিনিময় সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে আমার পক্ষ থেকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনবো। তিনি গতকাল রোববার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে শিক্ষার মানোন্নয়নে আয়োজিত মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
|আরো খবর
সাবেক যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ইতিহাসবিদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার, লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, কচুয়ার শিক্ষার গুণগত মান ও পথ সুগম করতে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর নিরলস ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে তিনি শিক্ষাসহ সকল স্তরকে উন্নয়নের আওতায় এনে দেশের অন্যতম উপজেলা হিসেবে রূপান্তর করেছেন। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অতীতের মত আজ শিক্ষকদের মান মর্যাদা ও সম্মান নেই। অতীতে শিষ্যরা শিক্ষকদের পা ছুঁয়ে সালাম করতো ও দোয়া নিতো। এখন শিক্ষকরা রাজনীতিবিদদের কাছে ছুটে যেতে হয়। কিন্তু অতীতে রাজনীতিবিদরা শিক্ষকদের নিকট ছুটে আসতো। এ অবস্থার প্রধান কারণ শিক্ষকতার বৈশিষ্ট্য নিয়ে শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। পেশাজীবী হিসেবে বেসরকারি শিক্ষকরা যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছেন না। একজন বেসরকারি শিক্ষকের বেতন সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসের দারোয়ানের সমতুল্য। তাই শিক্ষকদের কাছ থেকে দারোয়ান-সমতুল্যের বেশি কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে বহু অর্থ ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষক সমাজের উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ আজও নেয়া হয়নি। শিক্ষকদের মান-সম্মান ও ঐতিহ্য অটুট রাখতে অবশ্যই তাদেরকে উত্তম বৈশিষ্ট্য অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির, প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতানা খানম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইবনে আল জায়েদ, পৌর মেয়র নাজমুল আলম স্বপন, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের সমন্বয়ক আশেক আলী খান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহ জালাল চৌধুরী, কচুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহিদ উল্যাহ পাটওয়ারী ও জমিয়াতুল মোদার্রেছিন কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি আলী আক্কাছ সর্দার প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় উপজেলার ৮৬টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। একই দিনে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনারের শুভ উদ্বোধন করেন।