প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ওমরাবাজি ও চরিত্রের অবনতি কোণ
দেশে ওমরাহ হজ্বের হোলসেল ও ডেলিভারির বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বহু আগেই ছাড়িয়ে গেছে। অবৈধ ও কালো টাকার অসহনীয় তাপমাত্রায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বকধার্মিকেরা একাধিকবার ওমরা করে ফেলছেন। ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিভিন্ন চটকদার অফারও এতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
ইহরামের পোশাক পরা ছবিতে এদের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের ওয়াল জাহিরী নূরে ঝলমল করছে। আহা, চারিদিকে শুধু খোদায়ী নূর আর নূর!!! এখন আর হাজী সাহেবের অভাব নেই, কিন্তু চরিত্রবান মানুষের অভাব অত্যন্ত প্রকট।
মুহূর্তেই লাস ভেগাস ও ব্যাংককের নাইটক্লাবে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে রাত্রিযাপন এবং মদের বারে গালা নাইট শেষে মক্কায় গিয়ে ওমরাহর মাধ্যমে পাপমুক্তি নিয়ে এরাই আবার মিয়ামি ও পাতায়া ফিরে যাচ্ছেন।
ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লাগিয়ে কাবা শরিফে পৌঁছে বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন নিত্যপণ্যের জন্যে দোয়া করছেন।
টাকা পাচারকারীরা দেশকে ভিখারি বানিয়ে ওমরায় গিয়ে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা দেশের প্রতিবন্ধী অর্থনীতি ও পঙ্গু ব্যাংকিং খাতের উন্নত চিকিৎসার জন্যে আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করছেন।
রাজনীতিবিদরা জনগণের শোষণ করা লুণ্ঠিত অর্থে ওমরায় গিয়ে আরো শোষণ করার মহান উদ্দেশ্যে জনগণের বার্ষিক মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে মক্কা-মদিনায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে সেজদায় লুটিয়ে পড়ছেন।
আর সাংবাদিক, আইনজীবী, আমলা, পুলিশ, প্রশাসনসহ অন্যান্য শ্রেণী-পেশার দুর্নীতিবাজ, দুশ্চরিত্র ও লম্পট ব্যক্তিরা চারিত্রিক দালানের উন্নতি কোণের সম্প্রসারণের পরিবর্তে অবনতি কোণের জ্যামিতিক হারে বিস্তৃতি ও পরিধি ক্রমশ বৃদ্ধি করে চলেছেন।
এই দুর্বৃত্ত ও বকধার্মিকদের প্রতিবছর ওমরাহর লোডশেডিং হয়, কিন্তু চরিত্র পাল্টায় না, অথচ আল্লাহর কাছে ওমরার চেয়ে চরিত্র পাল্টানো অতীব জরুরি।
বিভিন্ন দেশের কুখ্যাত খুনি ও স্বৈরশাসকরা তো সৌদি রাজপরিবারের বিশেষ অতিথি হয়ে একেবারে হেরেম শরীফের ভেতরে ঢুকে নামাজ আদায় করছেন। আমরা খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী হিসেবে ওমরাহ হজ্ব কিনি আর সৌদি আরব সোল ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে তা বিক্রি করেন, আহা! কী অদ্ভুত বটে!!!
লেখক : সাইফুল খন্দকার, আইনজীবী, চাঁদপুর জজ কোর্ট।