সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

করোনার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু

ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

করোনার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু
অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার এই সময়টাতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। দুটো মহামারি যদি একত্রে চলমান থাকে, তাহলে সেটি মানুষের জীবনের জন্য একটি প্রবল হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এ নিয়ে চলমান আগস্ট মাসের ৬ দিনে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ১,৪৫৭ জন। ৫ আগস্ট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ২১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছে ২১১ জন। ৬ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১০১০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৯৭২ জন আর বাকি ৩৮ জন অন্যান্য বিভাগে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৪,১১৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩,০৯৫ জন।

বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ওই বছর প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু বিস্তৃত হয়েছে ৬৪ জেলায়। সে সময় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায়। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪৮জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। যদিও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আড়াইশ’রও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। সে বছর ১ হাজার ৪০৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ডেঙ্গু সন্দেহে ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ডেঙ্গুর কারণে ৭ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২০১৯ সালের আগে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ২০০০ সালে, ৯৩ জন। ওই বছরই রোগটি প্রথম ভয়াবহ আকার নেয়, আক্রান্ত হয় ৫ হাজার ৫৫১ জন। এরপর ধারাবাহিকভাবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসে। ২০০৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের নিচে ছিল, মৃতের সংখ্যাও ছিল খুব কম।

২০১৬ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়ালেও পরের বছর তা কমে যায়। এরপর আবারও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে ২০১৮ সালে। সে বছর প্রাদুর্ভাব বেড়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নতুন নতুন রেকর্ডের জন্ম দেয়। ওই বছর ১০ হাজার ১৪৮ জন আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় ২৬ জন। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ১৪৮ জনের ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নেওয়ার তথ্য সরকারের কাছে নথিভুক্ত রয়েছে। তার পরের বছর গত ১৯ বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে শুধু অগাস্ট মাসেই শনাক্ত হন ৫২ হাজার ৬৩৬ জন।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ :

* ডেঙ্গু জ্বর : ডেঙ্গু-ভাইরাসের সংক্রমণে উপসর্গবিহীন থেকে নানা রকমের উপসর্গযুক্ত হতে পারে, এমনকি তাতে মৃত্যুও ঘটে। সচরাচর দৃষ্ট ডেঙ্গুজ্বর, যাকে প্রায়ই ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু বলা হয়, সেটি একটি তীব্র ধরণের জ্বর, যাতে হঠাৎ জ্বর হওয়া ছাড়াও থাকে মাথার সামনে ব্যথা, চক্ষুগোলকে ব্যথা, বমনেচ্ছা, বমি এবং লাল ফুসকুড়ি। প্রায়ই চোখে প্রদাহ এবং মারাত্মক পিঠব্যথা দেখা দেয়। এসব লক্ষণ ৫-৭ দিন স্থায়ী হয় এবং রোগী আরও কিছুদিন ক্লান্তি অনুভব করতে পারে এবং এরপর সেরে ওঠে। বেশির ভাগ সংক্রমণই, বিশেষত ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণ লক্ষণহীন অথবা ন্যূনতম লক্ষণযুক্ত হতে পারে। ত্বকে স্ফোট দেখা দেয় প্রায় ৫০% ক্ষেত্রে, যা প্রথমে হাতে, পায়ে এবং পরে ঘাড়ে ছড়ায়। জ্বর চলাকালীন সময় মুখ, গলা বা বুক রক্তাভ দেখায়। রোগীর চোখে রক্তক্ষরণ হয়।

* রক্তক্ষরা ডেঙ্গুজ্বর : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধানত শিশুদের একটি রোগ। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু হলো ডেঙ্গুর একটি মারাত্মক ধরণ। মূল লক্ষণগুলো বয়স নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রেই অভিন্ন। এ ডেঙ্গুজ্বরের শুরুতে হঠাৎ দেহের তাপ বেড়ে যায় (৩৮০-৪০০ সে.) এবং ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত চলে। রক্তক্ষরণ বা ডেঙ্গু-শক সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেখা দেয়। এতে থাকে মাথাব্যথা, ক্রমাগত জ্বর, দুর্বলতা এবং অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশীর তীব্র ব্যথা। শ্বাসযন্ত্রের ঊর্ধ্বাংশের সংক্রমণসহ রোগটি হালকাভাবে শুরু হলেও আচমকা শক ও ত্বকের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ ও কান দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়ে যায়। রক্তে ক্রমাগত অনুচক্রিকা কমতে থাকে এবং রক্তের বর্ধমান রক্তবিকেন্দ্রক প্রবণতা থেকে আসন্ন শকের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরোগীর প্রয়োজন উত্তম সেবাশুশ্রূষা ও পর্যবেক্ষণ, কেননা উপরোক্ত পরিবর্তনগুলো খুব দ্রুত ঘটতে পারে এবং রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে উঠতে পারে।

* ডেঙ্গু-শক সিনড্রম : এটি রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরই আরেকটি রকমফের, তাতে সঙ্কুচিত নাড়িচাপ, নিম্ন রক্তচাপ অথবা সুস্পষ্ট শকসহ রক্তসঞ্চালনের বৈকল্য থাকে। দেহের বাইরে থেকে যকৃত স্পর্শ করা যায় ও নরম হয়ে ওঠে এবং উৎসেচকগুলোতে সাধারণত অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তবে কদাচিৎ জন্ডিস হয়ে থাকে। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে অব্যাহত পেটব্যথা, থেকে থেকে বমি, অস্থিরতা বা অবসন্নতা এবং হঠাৎ জ্বর ছেড়ে ঘামসহ শরীর ঠাণ্ডা হওয়া ও দেহ সম্পূর্ণ নেতিয়ে পড়া। মহামারীতে নতুন জাতের ভাইরাস ও সেরোটাইপ দেখা দেওয়ায় ডেঙ্গুর মহামারী আক্রান্ত দেশের সংখ্যা ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালের মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৮০ সালের পূর্বে মারাত্মক ধরণের সংক্রমণ খুব কমই দেখা গেছে। কিন্তু ১৯৯৭ সালের মধ্যেই রক্তক্ষরা ডেঙ্গু বাংলাদেশসহ উষ্ণম-লীয় ও উপ-উষ্ণমণ্ডলীয় দেশগুলোতে একটা স্বতন্ত্র রোগ হিসেবে বড় কয়েকটি এবং ছোট ছোট অনেকগুলো মহামারী ঘটায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। প্রতি বছর আক্রান্ত প্রায় ৫০ লক্ষ রোগীর মধ্যে অন্তত ৫ লক্ষ রক্তক্ষরা ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, যাদের একটা বড় অংশই শিশু এবং মারা যায় শতকরা প্রায় পাঁচ জন। বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর এ পুনরাবির্ভাব এবং রক্তক্ষরা ডেঙ্গু উৎপত্তির মূলে আছে নজিরবিহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, বিমান ভ্রমণ বৃদ্ধি, মশক দমনের অভাব এবং গত ৩০ বছরে জনস্বাস্থ্যের কাঠামোর অবনতি।

* ডেঙ্গু কেনো শীতের পরে? এই শতাব্দীর শুরু থেকেই আমাদের দেশে প্রতি বছর শীতের পর পরই যখন বৃষ্টি হয়, বেড়ে যায় মশার উপদ্রব। বেড়ে যায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। তাই এই করোনাকালে থেমে নেই বৃষ্টি, থেমে নেই মশার প্রজনন। ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ খুব বেশি। তবে সারা দেশেই ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ যাবৎকালে ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। মারাও গিয়েছিল বেশি।

কোন্ মশা ডেঙ্গু ছড়ায়? ঢাকাসহ সারা দেশেই বছরব্যপী থাকে মশার উপদ্রব। কিন্তু ডেঙ্গুর প্রকোপ সারাবছর থাকে না। কারণ ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য দায়ী এডিস মশা জন্মায় পরিষ্কার পানিতে। আর এই পরিষ্কার পানি পাওয়া যায় বৃষ্টির পর পরই। বৃষ্টির পানি কোনো স্থানে জমে থাকলে ওখানটাতেই ডিম পাড়ে এই এডিস মশা।

* ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় কী? প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। শুধু উত্তম বললেও কম বলা হয়। এটাই বাঁচার ভাল উপায়। করোনার এই নাকাল অবস্থায় কারো ডেঙ্গু হলে অবস্থাটা কী হতে পারে ? এটা যার হবে সে-ই বুঝতে পারবে। তবে যার হয়নি সেও চিন্তা করলে মাথা ঠিক থাকার কথা নয়। তাই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশার প্রজনন বন্ধ করা আর মশা নির্মূলের কোনো বিকল্প নাই। পানি জমতে পারে এমন কোনো অবস্থাই যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সকল প্রকারের ডাবের খোসা, গাড়ির টায়ার, ভাঙ্গা বোতল, পরিত্যক্ত ফুলের টব ইত্যাদি সবই সরিয়ে ফেলতে হবে নিজ উদ্যোগে। সরকারের একার পক্ষে ১৭ কোটি মানুষের ভাঙ্গা বোতল, ঘাস, ডাবের খোসা, বালতি, টায়ার খুঁজে বের করা বা সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। বাঁচতে হলে যার যার নিজ উদ্যোগেও এগুলোতে অংশগ্রহণ করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার বাড়ির পাশের মশা আপনাকেই আক্রমণ করবে।

* ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকারে ঘরোয়া পরামর্শ : ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।

মধু-প্রতিদিন সেবনে ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

* কালিজিরা তেল-কালিজিরা বা কালিজিরা তেলকে বলে সকল রোগের মহৌষধ। তবে প্রতিদিন ৩ চা চামচের বেশি খাওয়া ঠিক নয়। আগে কখনো না খেয়ে থাকলে আধা চামচ করে শরীরে এডজাস্ট করে নিতে পারেন। যে কোনো পেশেন্ট ও গর্ভবতী মহিলা সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

* নিমের তেল : বাড়িতে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে পানির সাথে নিমের তেল মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ১০-১৫ ফোঁটা নিম তেল আধা কাপ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গায়ে লাগালেও মশারা আর ধারে কাছে ঘেঁষবে না।

* নারকেল তেল : নারকেল তেল গায়ে লাগালে মশারা কাছে ঘেঁষে না ।

* হলুদের গুড়ো : হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি নানা পদার্থ রয়েছে। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন দুধ বা পানির সাথে হলুদের গুঁড়ো বা রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব। হলুদ সাধারণত বিভিন্ন রান্নায় পরিমাণ মতো ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া সরাসরি সেবন করা যায়, তবে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত নয়। পেশেন্ট, বিভিন্ন ওষুধ সেবনকারী ও গর্ভবতী মহিলারা সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

* দুধ, কলা, ডিম : এগুলোকে সুষম খাদ্য বলা হয়। প্রতিদিন সেবনে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। অনেকের এ সকল খাদ্যে এলার্জি থাকে অথবা বিভিন্ন রোগ (যেমন : কিডনি রোগ, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স ইত্যাদি)-এ দুধ একটি নিষিদ্ধ খাদ্য।

* পেঁপে এবং পেঁপে পাতা : পেঁপে খুব দ্রুত রক্তের প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে সক্ষম। মালয়েশিয়ার এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডেঙ্গু জ্বরের কারণে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে পেঁপে পাতার রস তা দ্রুত বৃদ্ধি করে। রক্ত প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে প্রতিদিন পেঁপে পাতার রস কিংবা পাকা পেঁপের জুস পান করুন।

* ড্রাগন ফল : ড্রাগন ফলে আছে প্রচুর এন্টিক্সিডেন্ট। এটি ব্লাডের সাদা সেল (ডইঈ) বাড়াতে সাহায্য করে।

* মিষ্টি কুমড়া এবং কুমড়া বীজ : মিষ্টি কুমড়া রক্তের প্লাটিলেট তৈরি করতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়াতে আছে ভিটামিন এ, যা প্লাটিলেট তৈরি করতে সহায়তা করে। তাই রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া এবং এর বীজ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

* লেবু : লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। ফলে প্লাটিলেট ধ্বংস হওয়া থেকেও রক্ষা পায়।

* দেশী মাছ : দেশি বিভিন্ন মাছ (যেমন : কই, শিং, মাগুর, শোল, বাইন, ছোট মাছ, পাঁচ-মিশালী মাছ ইত্যাদি) শরীরে রক্ত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

* করণীয় : ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে উচ্চ তাপমাত্রা রোধ করতে শরীর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুছে দিতে হবে। শরীর বেশি ঠাণ্ডা মনে হলে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। তাকে পূর্ণ বিশ্রামে রেখে বেশি করে পানি খেতে দিতে হবে।

* হোমিও প্রতিবিধান : রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এজন্যে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ হ্যানিমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে ডেঙ্গুরোগ সহ যে কোনো জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যভিত্তিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিতে হয়। আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডেঙ্গু জ্বরে আরোগ্য লাভ সম্ভব।

* হোমিও চিকিৎসা : অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ যেসব মেডিসিন প্রাথমিকভাবে ব্যবহার করে থাকেন, একোনাইট, বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, রাসটক্স, ইউপেটেরিয়াম পার্ফ, আর্সেনিক এলবাম, কার্বোভেজ, ইপিকাক, সালফারসহ আরো অনেক ঔষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে, তাই ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে হলে অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য; স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি; কো-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সোসাইটি। ইমেইল. ফৎসধুবফ৯৬@মসধরষ.পড়স। মোবাইল ফোন : ০১৮২২৮৬৯৩৮৯

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়