শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২২, ০০:০০

বর্তমান বিশ্বের বিস্ময়কর এক সুদক্ষ রাষ্ট্রনায়ক ও মানবতার জননীর প্রতিকৃতি জননেত্রী শেখ হাসিনা!
অনলাইন ডেস্ক

উন্নয়নের মহাসড়কের পথ ধরে এগিয়ে চলা একটি দুর্যোগপ্রবণ জনবহুল ক্ষুদ্রায়তনের একটি দেশ, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। বাংলাদেশের উন্নয়নের কাণ্ডারী যাকে ভালোবেসে আস্থায় নিয়ে ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে বারবার, তিনি আর কেউ নন বাংলাদেশের রূপান্তরের রূপকার বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বসভায় আপন মহিমায় স্থান করে নেয়া একজন সফল বিচক্ষণ সুদক্ষ রাষ্ট্রনায়ক ও মানবতার জননীর প্রতিকৃতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক নানান ইস্যুতে তাঁর বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ একদিন তার হাত ধরে উন্নয়নের সকল ধাপ অতিক্রম করে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে এক কাতারে শামিল হবে। সেটিও বেশি দূর নয়, এখন থেকে মাত্র দুই দশকের প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী উন্নত দেশ।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকদের জন্যে শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব। তিনি দেশ-বিদেশের নেতাদের কাছে হয়ে গেছেন আস্থা ও ভরসাস্থল। স্বাধীনতার চার দশক পর হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে তিনি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। মাথা নত করেননি দেশি-বিদেশি অজস্র চক্রান্তের কাছে। উল্টো সাহসিকতা, মানবিকতা ও নেতৃত্ব গুণে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পেয়েছেন শতাধিক পুরস্কার, অর্জন ও উপাধি। এরই মধ্যে টানা ১০ বছরের শাসনামলে একটি মধ্যম আয়ের দেশের সোপানে তুলে বাস্তবায়ন করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি এখন বিশ্বনেত্রী। শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা ও স্থপতি, বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তাঁর মাতার নাম বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব। শেখ হাসিনা ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ টুঙ্গিপাড়ায় (টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, পূর্ব বাংলা, পাকিস্তান, বর্তমানে বাংলাদেশ) জন্মগ্রহণ করেন এবং বাল্য ও প্রাথমিক শিক্ষা সেখানেই নেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর হতে ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে বসবাস করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। তিনি সাবেক ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বদরুন্নেসা গার্লস কলেজ ) ও বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় (পুত্র) ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (কন্যা) নামে দুই সন্তান রয়েছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে একদল তস্কর খুনি, দুষ্কৃতকারী, নিমকহারাম মীর জাফরের প্রেতাত্মা রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক ‘বঙ্গবন্ধু ভবনে’ হানা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বাঙালি জাতির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তার প্রিয়তমা স্ত্রী বাঙালির স্বাধিকার সংগ্রামের অন্যতম প্রেরণাদাত্রী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তাদের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক শেখ কামাল, মেঝো ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, ছোট ছেলে কিশোর শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে।

একই রাতে তস্কর খুনি দল হানা দেয় বঙ্গবন্ধু সরকারের তৎকালীন মন্ত্রী অবিসংবাদিত কৃষক নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। সেখানে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর কিশোর ছেলে আরিফ, কিশোরী মেয়ে বেবী, নাতি ছোট্ট শিশু সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু এবং ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত ও আত্মীয় আবু নাঈম রিন্টুকে। মারাত্মকভাবে আহত করে সেরনিয়াবাতের স্ত্রীকে তস্কর চক্র। আরো হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও জাতীয় যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তাকে রক্ষা করতে এলে ৩২ নম্বর রোডের মুখে ঘাতক চক্র আরো হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর এককালীন সামরিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল জামিলকে। এই কালোরাতে শেখ হাসিনার একমাত্র বোন শেখ রেহানা ব্যতীত পরিবারের সকল সদস্যকে হারান। তিনি ও তাঁর বোন শেখ রেহানা ওইসময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন।

১৯৮১ সালে এক দুঃসময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতিক্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে তাঁর অনুপস্থিতিতেই দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহনকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অবৈধ ঘোষণা করে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সামরিক শাসক স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে এই সামরিক শাসকের অধীনেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। সামরিক শাসক স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদ এবং তার সাঙ্গপাঙ্গগণ নির্লজ্জভাবে সুকৌশলে ভোট ডাকাতি ও মিডিয়া ক্যুর মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও পেশাজীবী সংগঠনের সহায়তায় এরশাদ বিরোধী দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।

আওয়ামী বিরোধী চক্র ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়। তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের তৎকালীন বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে প্রকাশ করে। তিনি মহান সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয়লাভ করে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে প্রথমবারের মত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় বিএনপি-জামাত চারদলীয় জোট সরকারের সন্ত্রাস, নির্যাতন, অত্যাচার, জেল-জুলুমের প্রতিবাদে সন্ত্রাস বিরোধী সভায় বক্তৃতাদানকালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান। উক্ত হামলায় তাঁর দেহরক্ষী, আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ১৯জন মৃত্যুবরণ করেন ও শতাধিক নেতা-কর্মী মারত্মকভাবে আহত হন। যাঁরা আজো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই হামলাকে বিদেশী ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়। তৎকালীন চারদলীয় বিএনপি-জামাত ঐক্যজোট সরকার ও তাদের তাঁবেদার প্রশাসন এই গ্রেনেড হামলার তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ‘জজ মিয়া’ নাটকসহ বেশকিছু প্রহসন সৃষ্টি করেছিলো। পরবর্তীতে দেশী ও বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র তারেক রহমান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতা নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুজাহিদ, পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্ত) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেতা মুফতি হান্নানসহ তৎকালীন বিএনপি-জামতের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন ২০০৭ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সকাল ৭টা ৩১ মিনিটে। যৌথ বাহিনী শেখ হাসিনাকে তাঁর বাসভবন ‘সুধা সদন’ থেকে গ্রেফতার করে। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে আদালত তাঁর জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে সাব-জেল হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অন্তরীন রাখা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে যান। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। একটি হলো ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্যে হত্যা মামলা এবং অন্যটি হল প্রায় তিন কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলা। এর মাঝে একটির বাদী ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি তুলে নেন। জেল থেকে মুক্তিলাভের পরে তিনি চিকিৎসার্থে কয়েক মাস বিদেশে অবস্থান করেন। এরপর দেশে ফিরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাঁর প্রাণপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ ও দেশের জনগণকে প্রস্তুত করেন।

শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টো ‘দিনবদলের সনদ’ প্রদান করে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা করেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়লাভ করে। তাঁর দল আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ২৬০টি আসন লাভ করে আবারও ক্ষমতায় আসে। বিজয়ী দলের সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে তিনি ৬ জানুয়ারি ২০০৯-এ ২য় বারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। মহাজোট নেত্রী হিসেবে তিনি নির্বাচনের পূর্বে রূপকল্প ভিশন ২০২১ ঘোষণা দেন।

১৮ নভেম্বর, ২০১৩ নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠিত হয়। নির্বাচনের পূর্বে তিনি ঘোষণা দেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করবেন। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহাজোটের প্রার্থীগণ বিজয়ী হন। ৫ জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাকি ১৪৬টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ওই নির্বাচনের কোনোই বিকল্প ছিলো না। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি ৩য় বারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথগ্রহণ করেন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর ৭ জানুয়ারি ২০১৯ শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে এবং চতুর্থবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র আয়তনের উন্নয়নশীল একটি দেশ হয়েও ইতোমধ্যে সারাবিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতে, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দুঃসময় কাটিয়ে আবারও জেগে উঠেছে। এই জেগে ওঠার রহস্যটা কী? বাঙালি উঠতি মধ্যবিত্তের শ্রেণি চরিত্র আওয়ামী লীগেও বর্তমান। এই মধ্যবিত্তের ভালো-মন্দ, সুবিধাবাদিতা, আপোষ-সংগ্রাম সবই আছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক চরিত্রে। কিন্তু আওয়ামী লীগ একটি খুঁটির জোরে বেঁচে গেছে। এই খুঁটিটি হলো তার জন্মসূত্রে পাওয়া সংগ্রামের নীতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী চেতনা ও আদর্শ। ১৯৮১ সালে শরণার্থী জীবন থেকে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যখন আবার এই নীতির খুঁটি জড়িয়ে ধরেছেন, তখনই আওয়ামী লীগ আবার জেগে উঠেছে’। সব বাধা উপেক্ষা করে ও জীবনবাজি রেখে তিনি নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন। তাঁর এই ফিরে আসাটা ছিল গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির নবস্বপ্ন।

‘আওয়ামী লীগ এখন আর একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম নয়। এখন একটি আদর্শভিত্তিক রাজনৈতিক পার্র্টি। বাংলাদেশে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভয়ঙ্কর ঝড়ো বাতাসের মুখে গণতন্ত্রের নিভুনিভু বাতি আগলে আছেন। তাঁর দূরদর্শী ও সুযোগ্য নেতৃত্বে সব ত্রুটি-বিচ্যুতি, স্খলন-পতন সত্ত্বেও এখনও গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমের ঘাঁটি আওয়ামী লীগ আগলে আছে। এটা শুধু উপমহাদেশে নয়, সারা দক্ষিণ এশিয়ায় একুশ শতকের একটি স্মরণীয় বড় ঘটনা’।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার সাহসী নেতৃত্ব বাংলাদেশের জনগণকে কঠিন সময়েও আশার আলো দেখিয়েছে।’ উন্নয়ন থেকে নিরাপত্তা সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মোদিজি জানান।

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ১৯৭৫-এর পর পদে পদে অন্ধকারের সরীসৃপ এবং মৃত্যু-ঝুঁকি মোকাবিলা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অভাব-অনটন ক্ষুধার রাজ্যে সফল নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে এনেছেন, যা আজ বহু রাষ্ট্র নেতা বহু দেশের কাছে ঈর্ষণীয়। বলা যায়, শেখ হাসিনা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন দূরদর্শী রাজনীতি দিয়ে কীভাবে একটি দরিদ্র দেশকে সমৃদ্ধির মহাসড়কে তুলে আনা যায়।

নারী শিক্ষা ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মহীয়সী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, বেগম শামসুন নাহার মাহামুদ, সর্বজন শ্রদ্ধেয়া বেগম সুফিয়া কামালের সারিতে শেখ হাসিনার নাম এখন দিবালোকের সূর্যের মত জ্বলজ্বল করে আলো ছড়াচ্ছে।

এ মুহূর্তে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ১১/১২ কোটি সেল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে, ডেক্সটপ ও লেপটপ পিসি সহজলভ্য হওয়ায় এখন তা বাংলার ঘরে ঘরে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাফল্যজনকভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে শেখ হাসিনার সরকার।

অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখছে। বিদ্যুতায়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে আজ যে কোনো সময় ও কালের চেয়ে বেশি প্রাণচাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। আজ শহর-গঞ্জের দিন মজুরের চেয়ে গ্রামের কৃষি, অবকাঠামো ও পরিবহন শ্রমজীবীরা বেশি রোজগার করছে। জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা গ্রামীণ জীবনকে এমন পর্যায়ে তুলে এনেছেন যেখানে মানুষ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে যেমন স্বাস্থ্য সেবা দোরগোড়ায় পাচ্ছেন। অনলাইন তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদেশে কর্মরত স্বামী সন্তানের সাথে যেমন সরাসরি কথা বলতে পারছেন, তেমনি বিদেশ হতে প্রেরিত অর্থ অনায়সে তুলতে পারছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পরীক্ষার রেজাল্ট প্রাপ্তি কিংবা চাকরির আবেদন বা ব্যবসায়ীরা গ্রামে বসে অনলাইনে টেন্ডার ড্রপ তথা ব্যবসায়ে অংশ গ্রহণ করছেন।

১৫ বছর আগে যে উত্তরবঙ্গ ছিল ভয়াবহ মঙ্গা কবলিত, সেখানে ‘মঙ্গা’ শব্দটিই আজ হারিয়ে গেছে। মানুষ দু’বেলা পেট পুরে খেতে পারছে, আনন্দময় জীবন-যাপন করতে পারছে। আমাদের কৃষি ও মৎস্য গবেষক ও বিজ্ঞানীগণ আমাদের বিলুপ্রাপ্ত কৃষিপণ্য এবং মৎস্য পুনরুদ্বার বা গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে চলেছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ রক্তপাত নেই, বরং কমলা, আঙ্গুর, আপেল, মাল্টা, স্ট্রবেরী প্রভৃতি বিদেশী ও আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা দেশীয় ফলও প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন ও বাজারজাত হচ্ছে। টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির প্রসারের সুফল হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের পোশাক-আশাকেও অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। এসব কিছুর কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার।

নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে বিচার করেন চিহ্নিত রাজাকার-আলবদর নেতাদের। যদিও শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের যারা এক সময় মন্ত্রী-এমপি ছিলেন, তাদের বিচারকে প্রভাবিত করতে দেশ ও বহির্বিশে^র নানা চাপ ছিলো। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতা হত্যার বিচার এবং প্রায় ৪০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের শহীদানের ঋণ পরিশোধ ও জাতির আশা আকাক্সক্ষা অনুযায়ী একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠান ও অপরাধীদের শাস্তি প্রদানেও তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করে যেভাবে সাহসিকতার সাথে জেএমবি, আল-কায়েদা, আইএস, বোকা হারাম, মুসলিম ব্রাদারহুড, তালেবানদের এজেন্ট জামাত-শিবির, হিযবুত তাহরীর হিযবুল মুজাহিদিন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হামযা ব্রিগেডের মত জঙ্গিদের মোকাবিলা করে চলেছেন, তা বিশ্বের কাছে এক বিস্ময়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ : বন্যা, খরা, টর্নেডো, শৈত্যপ্রবাহ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বা জলবায়ু পরিবর্তনে বা মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নিকাণ্ডে তার সঠিক ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

প্রথাগত দফাওয়ারি রাজনৈতিক কর্মসূচির দীর্ঘ তালিকার পরিবর্তে শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শনের আলোকে প্রণীত রূপান্তরের রূপকল্প ২০২১ হলো বাঙালির অপূর্ণ উন্নয়ন ভাবনার স্বপ্নগাঁথা। যার অভীষ্ট ছিল স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশে মধ্যম আয়ের চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে রূপকল্প তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন। ২০১৪ সালের পর ২০২১ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতকরণ, ভারতের পার্লামেন্ট কর্তৃক স্থল সীমানা চুক্তির অনুমোদন এবং দুই দেশ কর্তৃক অনুসমর্থন, (এর ফলে দুদেশের মধ্যে ৬৮ বছরের সীমানা বিরোধের অবসান হয়েছে), মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭শত মার্কিন ডলারে উন্নীতকরণ, প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের ওপর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, স্বপ্নের পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন ইত্যাদি।

পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও একধাপ উপরে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মাসেতু হতে যাচ্ছে এটি দেশের ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। সেতু প্রকল্প মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথের মাধ্যমে দেশের কেন্দ্রের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সরাসরি সংযোগ তৈরি করেছে। এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। প্রকল্পটির ফলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪৪,০০০ বর্গ কিঃ মিঃ (১৭,০০০ বর্গ মাইল) বা বাংলাদেশের মোট এলাকার ২৯% অঞ্চল জুড়ে ৫ কোটিরও অধিক জনগণ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে। ফলে প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে ভবিষ্যতে রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সম্প্রসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ‘বহুমুখী পদ্মাসেতু প্রকল্প’টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়ার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, পদ্মাসেতু প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকসহ দাতাদের সঙ্গে সরকারের তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাই সরকার এ প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও তুলে ধরতে চায় সরকার। দ্বিতীয়ত, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সরকারের প্রতি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আস্থাও বহুগুণ বেড়ে যাবে।

তরুণ প্রজন্মকে ব্যক্তিস্বার্থ ও ভোগবিলাস ত্যাগ করে দেশ ও দশের জন্য কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণে অনুপ্রাণিত করতে দিনবদলের সনদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে রূপকল্প ২০২১। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দূরদর্শী রূপকল্প দলিল।

গত এক দশকে অর্থনীতি ও সামাজিক মানদণ্ডে এ পরিকল্পনা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ত্বরান্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির কারণে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো; আগুনের ছাই থেকে উঠে এসেও নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশকে। অথচ এ দেশেই একদিন আততায়ীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হন বাবা-মা, ভাই-ভাবীসহ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন। নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকবার। এত কিছুর পরও মাটিকে ভালোবেসে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে পথ চলছেন তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব। খাদ্যনিরাপত্তা, শান্তিচুক্তি, যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, সীমান্ত বিজয়, সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি, স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষায় সমুজ্জ্বল তিনি।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আজ দক্ষতায়, মেধায়, প্রজ্ঞায়, মননে, দূরদর্শিতায় সবাইকে পেছনে ফেলে নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ধরিত্রীর আদরের কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি আজ বিশ্বে সম্মান ও মর্যাদার শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠিত। ১৯৭১, ১৯৭৫, ২০০৪ ও ২০১৩-এর ঘাতকরা পরাভূত। ঘাতকরা ১৯ বার তাঁকে হত্যার চক্রান্ত করে, কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ কৃপা যে, তিনি তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়ক, মধ্যম আয়ের দেশ-এর শীর্ষ কাতারে নিয়ে যেতে শক্তি যুগিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এ লক্ষ্য অর্জনে নিরন্তন চেষ্টা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনও করেছেন। দেশ আজ কৃষিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। শিক্ষায় এসেছে গতি। চারবারের (টানা তিনবারের) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কোটি কোটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সম্মান বৃদ্ধি, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্দ্বী ভাতার সংখ্যা ও পরিমাণ বৃদ্ধি, শহরের বস্তিবাসীদের ঘরে (গ্রামে) ফেরা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু, কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক চালুর মাধ্যমে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা প্রভৃতি এক মহা যুগান্তকারী কার্যক্রম। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল।

সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। শেষ করেছেন জাতির পিতার হত্যা মামলা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বিচারের রায় বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে আজ বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল পরিণত হয়েছে। বিশ্বে যে পাঁচটি দেশ দ্রুত উন্নয়ন করছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিশ্ব উন্নয়ন ও শান্তি প্রচেষ্টায় তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্বনেত্রী। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। তিনি দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে চলছেন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা পানি চুক্তি; বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিদের মধ্যকার দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি । শেখ হাসিনার আমলেই ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকেই দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো।

২০০৯ সালে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য হেগের সালিস আদালতে নোটিস করে। এর পথ ধরেই ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমার রায় পায়। এতে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের রাষ্ট্রীয় সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল মহীসোপান এলাকায় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। শেখ হাসিনার চলতি মেয়াদে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি কার্যকর করায় দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান হয়। ৬৮ বছর পর নাগরিক হিসেবে পরিচয় পায় ছিটমহলবাসী। পাশর্র্^বর্তী মিয়ানমার হতে নতুন করে অন্যায় ও নিষ্ঠুরভাবে বিতাড়িত প্রায় ১৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করে তিনি বিশ্ববাসীর কাছে এখন মানবতার জননী।

নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন শেখ হাসিনা। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা তাকে সম্মাননা দিয়েছে। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি প্রদান করে। নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য একই বছর পেয়েছেন ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যের টেলিভিশন ‘চ্যানেল ফোর’ তাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ আখ্যা দেয়, দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস আখ্যা দিয়েছে ‘স্টার অব দি ইস্ট’। তাঁরই প্রচেষ্টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ বাঙালি জাতির মহান বিজয়।

২০১৬ সালে শেখ হাসিনাকে ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার’ ও ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ পুরস্কার প্রদান করে জাতিসংঘ। ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ৭০তম অধিবেশনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরষ্কার-২০১৫ ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য পান ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’। রাজনীতিতে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনের জন্যে পান ওম্যান ইন পার্লামেন্ট (ডব্লিউআইপি) গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড। বিশেষত দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধা নির্মূল, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন, জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যুর হার কমানো এবং মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের অগ্রপথিক। এর স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্বের অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক পদক এবং পুরস্কারে ভূষিত করেছে। তন্মধ্যে এমডিজি-১ অর্জনে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কর্তৃক ‘উরঢ়ষড়সধ অধিৎফ’ এমডিজি-৪ অর্জনে জাতিসংঘ কর্তৃক ‘টঘ গউএ অধিৎফং ২০১০, এমডিজি-৫ এর সাফল্য ‘ঝড়ঁঃয-ঝড়ঁঃয অধিৎফ’ অন্যতম। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনাকে ‘শান্তিবৃক্ষ পদক’ পুরস্কারে ভূষিত করে ইউনেস্কো। পাশাপাশি শেখ হাসিনা তাঁর নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের কারণে বিভিন্ন স্বীকৃতিও অর্জন করেছেন। এর মধ্যে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের ক্ষমতাধর শত নারীর তালিকায় ৩৬তম এবং নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরিপে ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় সপ্তম স্থান দখল করেন।

৩০ ডিসেম্বর, ২০১১ সালে শেখ হাসিনাকে বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলা একাডেমি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। এছাড়াও, ১২ জানুয়ারি, ২০১২ তারিখে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রী প্রদান করে। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার লাভ করেন।

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন অবদানের জন্য ‘মান্থন অ্যাওয়ার্ড’, ‘ডিপ্লোমা অ্যাওয়ার্ড’, ‘কালচারাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড’, ‘গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড’, জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড’, ‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক-২০০৯’, ‘পার্ল এস বাক পদক’, ‘ডক্টরস অব হিউম্যান লেটার্স’, ‘সেরেস পদক’, ‘মাদার তেরেসা পদক’, ইউনেস্কোর ‘ফেলিং হুফে বইনি শান্তি পুরস্কার’, ‘নেতাজি মেমোরিয়াল পদক-১৯৯৭’সহ বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ও সম্মাননা পেয়েছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ও প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে অর্জনের পরিসংখ্যান বিশাল। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যু হার কমানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের করা মন্তব্য এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতে, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেবার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের।’ বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার ও জন্ম হার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান, শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম, মহামারী কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ, খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, সর্বোপরি যথাসময়ের মধ্যে দেশের মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিন, বুস্টার ডোজ প্রদান অন্যতম।

১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে না আসলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ পাকিস্তানের মতই ব্যর্থ জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত হতো। চারিদিকে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হায়নার গ্রাস করতো সব সুন্দরকে। হয়ত এতদিন পাল্টে ফেলতো এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত । বন্ধ হতো নারী শিক্ষা। দেশ এগিয়ে চলতো মধ্যযুগের সেই বর্বতার দিকে।

প্রায় চার দশকের মতো সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের মতো আলো ছড়াচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। মানবতার জননী, নির্লোভ, আপোষহীন, তেজী, দুরদৃষ্টি সম্পন্ন এই নেত্রী সংগ্রাম করেই আজ বিচক্ষণ, সুদক্ষ এক রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন। তাঁর দিকেই তাকিয়ে থাকে সারা জাতি। তিনি জাতির শেষ আশা ভরসার স্থল । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ন্যায় তিনিও হতে চলেছেন তৃতীয় বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, মেহনতি মজলুম জনগণের বন্ধু মানবতার জননী।

লেখক : মোঃ নূর ইসলাম খান অসি। পরিচালক (অপারেশন)-ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সভাপতি-বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ১৯৭০-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মুজিববাদী ছাত্রলীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। মুঠোফোন : ০১৮১১-৪৫৮৫০৭।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়