প্রকাশ : ১৯ মে ২০২২, ০০:০০
ছাড়পত্র
মানুষের যদি না তাকে চিন্তায় গভীরতা,
কোনো কাজেই আসে না তার জীবনে সফলতা ॥
মনের সৌন্দর্যে যে অতীব সার্বিক ধনী,
সার্থক জনম তার, সকলের চোখের মণি ॥
ক্ষমতার দম্ভে যে জন বনে যায় অন্যের ভাগ্য বিধাতা,
মূর্খ সেজন অতি, হারাতে হয় সজ্জিত মর্যাদা ॥
প্রতিভায় সৃষ্টিশীল ব্যক্তি যদিও বা হয় ক্ষমতাধর,
তাঁর সৃষ্টিগুলোই হবে মানবের চির কল্যাণকর ॥
যে জন আচরণে নৈষ্ঠিক, শ্রদ্ধা চর্চিত সংসারে,
জন্ম যেন আজন্ম পুণ্যে ভরপুর, সর্ব চরাচরে থাকে ॥
রূপের উন্মাদ যারা, গুণের ভাবনা মুক্ত তারা,
জোশ ফুরালে স্পন্দনহীন জীবনেই মাত্র ভরসা ॥
রাজা-মহারাজা-নবাব-সম্রাট-এর প্রাচুর্য ছিল মহীতে,
সকলেই পাগলপ্রায় ছিল ইট-পাথরের স্থাপনার স্মৃতিতে ॥
এদের মধ্যে সৃষ্টিশীল-প্রগতিশীল আর মানবতাবাদী যারা,
চিরঞ্জীব রয়েছে-আছে-থাকবে মানব অন্তরে তারা ॥
আশার ছলনে, নিরাশার বালু চরে যেবা বাঁধে ঘর,
স্থানান্তরের ছাড়পত্র অবশ্যই জুটে যাবে তারপর ॥
*
মর্ত্যপ্রীতি
স্রষ্টার সৃষ্টি রহস্য বিচিত্র অতিশয়,
দিবাকর পরশ ছাড়া সব কিছুর ঘটে লয়।
জন্মিলে মরিতে হবে এটা তো নিশ্চিত,
মর্ত্যলোকে বিচরণ কালের সময় তো অনিশ্চিত।
মানুষ মরণশীল জেনেও মরিতে চাহে না এ সুন্দর ভুবনে,
মর্ত্যরে অনিত্য মাধুর্যরস চয়নে মত্ত থাকতে চায় তিলে তিলে।
অনন্তকাল জান্নাতে পরম সুখের কথা যারা ভাবে,
মর্ত্যলোকে শুধু জীবে প্রেম আর উপাসনায় তাদের কাটে।
স্রষ্টার সৃষ্টির সেবায় যে সাধ্যবানের না থাকে মনন,
নিজকে নিজে ঠকাচ্ছে সে কোথায় যেন থাকে অচেতন।
জীবে প্রেমে আর পুণ্যে অবণীতে মানুষ যা কিছু রেখে যায়,
তাহাতে চিরস্থায়ী মানবাত্মায় অমরত্ব থাকে ঘোষণায়।
স্রষ্টার সৃষ্টির বিভিন্নতায় ঝলমলে আছে অনেক,
জীবন শ্রেষ্ঠ মানুষের পছন্দের চমকটাই মানবতার বিবেক।
মুমূর্ষু অবস্থায়ও মানুষ বাঁচিতে চাহে ঐ না নন্দন কাননে,
এর চাইতে আশ্চর্য আর থাকিতে পারে না এই যে ভুবনে।
যত সব মহামানবের আবির্ভাব হয়েছিল এই বসুমতিতে,
সকলেরই উপদেশ ছিল মানবতার উৎকর্ষ সাধনে।