বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

বিপন্ন মানবতা
অনলাইন ডেস্ক

আদি মানব ‘আদম’ এবং মানবী ‘হাওয়া’ মিলে তাদের সৃষ্ট উত্তরসূরিদের মধ্যকার ছোট একটি দলে হয় একটি জাগতিক সংসার। যাদের নিয়ে এই সংসার তারাই মানব সন্তান। মানব সন্তানের পৃথক ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য রয়েছে। আর এই কারণেই প্রত্যেক মানুষের আচার আচরণে একটা পৃথক মৌলিকত্ব লক্ষ্য করা যায়। ডিজিটাল যুগের আধুনিক মানুষ যন্ত্রানুসারী। আদিযুগের আদম সন্তান ছিল প্রাকৃতিক নিয়মের অনুসারী। সর্বংসহা ধরিত্রীর বুকে জন্মেছে প্রকৃতি। তাই প্রকৃতির সার্বিক সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। আর আধুনিক যুগের মানুষ হচ্ছে স্বকপোলকল্পিত। এ বিশাল ধরাধামের বিভিন্ন ভূখণ্ডে প্রকৃতি বিচিত্র বিরাজমান। মরু অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ধূসর বালিময়। এর মধ্যে রয়েছে ¯্রষ্টার অপূর্ব লীলাময় মরুদ্যান, আর মরীচিকা। সমতলে যেমন তৃষ্ণা মেটানোর মাধ্যম অনেক, কিন্তু মরুভূমিতে তৃষ্ণা মেটানোর আশা ছলনাময়। মরুজাহাজ উট হলো মরুতে চলাচলের মাধ্যম। এসব অঞ্চলের মানুষ একদা জীবিকার তাগিদে কঠোর পরিশ্রমী ছিল। কিন্তু তেল আবিষ্কারের আশীর্বাদে তারা আজ অত্যন্ত আয়েসী এবং বিলাসী হয়ে গেছে। এ যেন এক অদৃশ্য নিউক্লিয়াস তত্ত্ব। নাতিশীতোষ্ণ এবং ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি অতিশয় মনোরম। এখানে প্রচুর ফল ফলাদি জন্মে। পশ্চিমা শীত প্রধান দেশগুলোর ভূ-প্রকৃতি এতোই শোভামণ্ডিত যে মানুষকে হাড়ে হাড়ে বিস্মায়াভিভূত করে। পশ্চিমা দেশগুলো সভ্যতার পথ পরিক্রমণে আধুনিকতার মূর্ত প্রতীক। পাক ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে মানব সৃষ্ট যে সমস্ত পৈশাচিক এবং অমানবিক ঘটনা সভ্যতার ললাটে কলঙ্ক লেপন করেছিল তা আজও শরীরে শিহরণ জাগায়।

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালীয়ানওয়ালাবাগ নামক স্থানে বাংলা নববর্ষের দিনে এক মেলায় গণজমায়াতের ওপর নির্বিচারে ব্রিটিশ সেনারা গুলি চালায়। এরা সবাই স্বাধীনতাকামী অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনমুক্ত ভারত চেয়েছিল। এখানে কত মানুষ শহীদ হয়েছিল তার সঠিক হিসাব আজও মিলে নাই।

আবার ১১৭৬ বঙ্গাব্দে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে ব্রিটিশ শাসক ভারতবর্ষে আনুমানিক ১০ মিলিয়ন মানুষকে হতাহত করেছিল। যাহা ৭৬-এর মন্বন্তর নামে খ্যাত। আবার স্বাধীন বাংলাদেশ বনাম আমেরিকার মধ্যে পিএল ৪৮০ চুক্তি বাস্তবায়নের গড়িমসির কারণে ১৯৭৪ সালের মন্বন্তরে যে করুণ মানবেতর অবস্থার উদ্রেক হয়েছিল তাহা ৭৬-এর মন্বন্তরের পুনরাবৃত্তি বললেও অত্যুক্তি হবে না। চির সত্য কথাগুলোর মধ্যে একটি কথা আছে, সকল ক্রিয়ারই একটি সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। এ যুগের যেকোনো স্তরের ক্ষমতাবানরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে এমন কিছু অপকৌশল অবলম্বন করে, যা সোজাসুজি মানবতাবিরোধী। এর ফলে প্রকৃতি হয়ে যায় আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। তখন প্রকৃতি হয়ে যায় প্রতিশোধ প্রবণ। প্রকৃতির নেয়া প্রতিশোধ অতিশয় নিষ্ঠুর। এসব প্রাকৃতিক প্রতিশোধগুলোই হলো আইলা, ঊনসত্তরের জলোচ্ছ্বাস, ইথিওপীয়ার অনাবৃষ্টি জনিত দুর্ভিক্ষ, ১৩২৬ বঙ্গাব্দের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি আরো অনেক ন্যাচারাল ক্যালামিটি। আদিম আদম সন্তান লোভাতুর হতে হতে আজ দুর্লোভী অতৃপ্ত মানব সন্তানের পরিবর্তিত হয়েই আদর্শ মানুষ হওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো বেমালুম ভুলে গেছে। তাই জাগতিক স্বাভাবিক শান্তির পরিবর্তে আজ সর্বত্রই কৃত্রিম শান্তি। ফলস্বরূপ সর্বস্তরেই আধুনিক মানব সভ্যতা আজ পথহারা পথিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। যে মানব সভ্যতা আজ শিকড় থেকে শিখরে উঠেছে, অসভ্যতা ও কুৎসিত থেকে অতল নারকীয়তায় পৌঁছেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের অশনি সংকেত হলো একটা জঘন্য প্রাকৃতিক প্রতিশোধের ইঙ্গিত। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে বলপূর্বক প্রতিষ্ঠা করা হয় ইহুদীবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র। এ সময় পিতৃ পুরুষের ভিটে ছাড়া করা হয় লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে। মসজিদ আল-আকসা বিশে^র পবিত্রতম মসজিদ, কারণ নবীজি এখান থেকেই শবে মেরাজে ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেছিলেন। মুসলমানদের এই পবিত্র স্থানটি আজ ইসরাইলের দখলে। এটা একটি বিপন্ন মানবতার নিদর্শন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়