প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
আমরা বাঙালি। এখন আমরা কি বাঙালি আছি? আমাদের কালচার কি আর বাঙালি আছে? কখনো ভারতীয়, কখনো ইউরোপ কিংবা অন্য কোনো দেশের কালচার অনুসরণ-অনুকরণ করছি আমরা। আমরা যতোটা না বাঙালি আছি আমাদের সন্তানেরা বোধকরি ততোটুকুও নেই। কথায়, চলায়, পোশাকে আমাদের মধ্যে এখন বাঙালিয়ানা খুঁজে পাওয়া যায় খুব কম। বাঙালির আগের খাবারগুলো যেনো উধাও। ইতালীয়ান, কাশ্মীরি, ইন্ডিয়ান, এরাবিক কিংবা ইউরোপীয় খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি আমরা। খই, মুড়কি, পিঠা যেনো হারাতে বসেছি আমরা। কোনো বাড়িতে এসব খাবার তৈরি হলেও সন্তানেরা খেতে চায় না খুব একটা। বলে ঐসব নাকি ‘ব্যাকডেটেড’। তখন ভাবি, আমরা কি আর বাঙালি আছি? আমরা যারা পঞ্চাশ পার করেছি তারা বাঙালিয়ানা ধরে রাখার চেষ্টা করি মাত্র। বিয়ে-শাদির পোলাও-কোরমা যেনো হারিয়ে গেছে। কাবাব, নানরুটি, বিরিয়ানি, এরাবিক টাইপের খাবার এখন বিয়ে বাড়িতে স্থান পাচ্ছে। দুধের মুরগির কোরমা এখন অনেকটাই সেকেলে খাবার। পোশাকে বেশ বদলেছি আমরা। স্টাইলিশ ইউরোপীয় ঢংয়ের পোশাকে অভ্যস্ত অনেক পরিবারের সদস্য। পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, ধুতি, নাগড়া মানুষে পরে কম। আমাদের ঝি-বৌয়েরা এখন শাড়ি খুব একটা পরে না। সালোয়ার, কুর্তি, জিন্স প্যান্টে অভ্যস্ত অনেকে। এসব পোশাক আশাক দেখে আজকাল আর নিজেদের বাঙালি ভাবি কী করে?
বছর ঘুরে বৈশাখ আসে, আর আমরা তখন ক্ষণিকের বাঙালি হয়ে যাই! বাঙালি হতে দিগি¦দিক ছুটি। বৈশাখ মাসটার পহেলাতে ঢাকা শহরেতো হাঁটার জায়গাও থাকে না। বাঙালি হতে অনেকেই ঘর থেকে ছোটেন, আমি সচরাচর ঘরেই কাটাই দিনটা। পহেলা বৈশাখের এইদিনে, আমি একদিনের বাঙালি হতে চাই না। বৈশাখের এই বিশেষ দিনটাতে সকালে পান্তা, শুঁটকি ভর্তা, ইলিশ খাই না।
শহরে থাকলেও শরীর থেকে গাঁয়ের (গ্রামের) গন্ধ মুছে যায়নি এখনও, মন থেকে মুছে ফেলিনি বাঙালিয়ানা। ঘণ্টা, মাস, বছর ধরেই নিজেকে বাঙালি ভাবি। চৈত্রের শেষদিনেও আমরা বাঙালি থাকতে চাই। বৈশাখের প্রথমদিনেও আমরা বাঙালি। তাই এবার রূপগঞ্জের পূর্বাচলের আমার বাঙাল বাড়িতে চৈত্রের শেষদিনে বাঙালি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে, বৈশাখের প্রথম দিনেও বাঙালি উৎসব হবে। আমরা চৈত্র, বৈশাখ, আষাঢ়, শ্রাবণ প্রতি মাসেরই বাঙালি, প্রতিদিনের বাঙালি, প্রতি ক্ষণেই আমরা বাঙালি।
বৈশাখের প্রথম দিনে খুব একটা বাড়াবাড়ি করি না। এক বৈশাখের কথা। আমি বাসায় বসে লিখছি। বাসা একেবারে ফাঁকা। সেদিন পরিবারের সবাই বাঙালি হতে ছুটে গেছেন রমনা বটমূলে। বাসায় যারা কর্ম করেন তারাও কেউ ছিলেন না। সবাই একদিনের বাঙালি সাজে বেরিয়ে পড়েন ঘর থেকে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়। মসজিদের আজান শুনতে পাই। পেটে বেশ টান ধরেছে। মনে হলো মাঝে মধ্যেইতো নোনা ইলিশ, পান্তা, শুঁটকি খাই, বৈশাখের এই দিনটাতে না হয় বিরিয়ানি খাওয়া যাক। হাই প্রেশারের রোগী, তবুও মতিঝিলের হাজীর বিরিয়ানি খেলাম পেট পুরে। বাসায় ফিরার সময় ক্যাপিটাল থেকে বার্গার, পেস্ট্রি আর স্যান্ডুইচ কিনে নিলাম ক’পিচ। ছেলে দুটোর বেশ পছন্দ ওগুলো। সহজে কিনে দিই না বিদেশী ধাঁচের এসব খাবার। আমার অগোচরে বেইলি রোডে গিয়ে খায় মাঝে মধ্যে। বৈশাখে কেনো জানি নষ্ট সমাজের কষ্ট বাড়ানো ওই খাবারগুলোই কিনেছিলাম ওদের জন্যে। ঘরে কখনো মুড়িমুড়কি, কড়িমুড়ালি, নিমকি কিংবা জিলাপি এনেছিতো আমার ছোট ছেলেটা ভেংচি কাটে। ওদের এগুলো মোটেও পছন্দ নয়। বড় ছেলেটাতো বলেই ফেলে, বাবা এগুলো ব্যাকডেটেড খাবার। রাগ করি না। ভাবি ওদের কী দোষ? আমরাইতো ওদের সাহেব বানিয়ে ফেলেছি। ওরা বলে পান্তায় নাকি লাখ লাখ ব্যাক্টেরিয়া জন্মে। আমার দাদাতো এগুলো খেয়েই ১শ’ ২২ বছর পার করেছেন। মৃত্যুর আগে কোনো রোগবালাই দেখিনি। হাসপাতালে যাননি কখনও। জীবনের শেষ দিনের সকালেও বিনে চশমায় পত্রিকা পড়েছেন। তিনি পাট ব্যবসায়ী ছিলেন। অর্থকড়ির কমতি ছিলো না। তবুও তার খাবার তালিকায় ছিলো কেবলই বাঙালি খাবার। বিচিকলা, বাঙ্গি, খিরাই, মিষ্টি আলু, ডাল ভাত ছিলো প্রিয় খাবার। আমার গিন্নি মাঝে মধ্যে মোরগ পোলাও কিংবা কাচ্ছি বিরিয়ানি পাকালে বলতেন ‘ওসব ছাইপাশ দিও না, ভাত দাও।’ ভাতের মতোই সোজাসাপটা কথা দাদার। বাবার মাঝেও ভাব দেখিনি কখনও। বাঙালি মেজাজেই চলেন এখনও। খাবার-দাবারেও এখনও তিনি ষোলআনা বাঙালি। দিন যতো গড়াচ্ছে, ভাবি ছেলেগুলো বাঙালি থাকবে তো? ভিনদেশী দাপটে ওদের বাঙালি রাখাইতো কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘরে-বাইরে কোথাও বাঙালিয়ানা নেই। পশ্চাত্য ঢং সবখানে। পোশাকে, খাবারে, চলাফেরা সবখানেই ভিনদেশী ভাব। কী সাহিত্যে, কী চলচ্চিত্রে সব জায়গায়ই বাঙালি হটাও মনোভাব। শতাধিক টিভি চ্যানেলে নাচণ্ডগান আর পরকীয়া-মার্কা নাটক-সিনেমায় আমাদের বাঙালি থাকাই দায়। লাভ ইন সিংগাপুর মার্কা চলচ্চিত্র। আমাদের টিভি-চ্যানেলের অনুষ্ঠান সব কিছুতেই কেমন যেনো সাহেবী মেজাজ। এগুলো দেখে আমাদের আগামী প্রজন্ম বাঙালি থাকে কী করে?
আমরা বৈশাখ এলেই একতারা হাতে ছুটে চলতে চাই কাঙালিনী সুফিয়ার মতো। ঢোল, তবলা, সারিন্দা নিয়ে গেয়ে উঠতে চাই হাছন আর লালনগীতি। গাইতে চাই আবদুল করিমের ‘গাড়ি চলে না চলে না চলে নারে’। কিন্তু বৈশাখ চলে গেলে আবার সেই জ্যৈষ্ঠের খর রোদ্দুরে মলিন হয়ে যাই। হতাশ হয়ে যাই কালবৈশাখীর মতো জীবনের কিছু ঝড়ের কবলে পড়ে। সব যেনো শেষ হয়ে যায়। ধুয়ে-মুছে যায় বাঙালিয়ানা। বাসায় মায়েরা সন্তানদের নিয়ে ভিনদেশী চ্যানেলে দেখছে ‘দুর্গা’, ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ কিংবা ‘আউ আউ আউ’-মার্কা গান। এতো গেলো বাসার খবর।
আমাদের নীতিনির্ধারকরাও এ ব্যাপারে বেশ উদাসীন। তারা ভিনদেশী অপসংস্কৃতিকে ভাড়ায় আনছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে আনা হয় ভারতীয় শিল্পীদের। আর আনবেই না কেনো? বাঙালিতো আর বসে নেই। লাখো দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ে মাঠে। সরাসরি টিভি চ্যানেলেও ওই অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। অথচ আমাদের সরকার শত চেষ্টায়ও পার্শ্ববর্তী ভারতে আমাদের টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে না। ওরা আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির শেয়ার নেবে না আর ওদেরটা আমাদের ধরিয়ে দেবে, তা কী করে হয়। ওদের নাটক-সিনেমার প্রভাব কিন্তু আমাদের সমাজে পড়তে শুরু করেছে। সংসারে অশান্তি, কুটিলতা, হত্যা বেড়ে গেছে। কী দেখছি আমরা এসব অনুষ্ঠানে। বাইজিখানায়ওতো শালীনতা থাকে। ডানাকাটা প্রায় উলঙ্গ নারী নাচিয়ে ভারতীয়রা আমাদের পকেট কেটে উড়াল দেয়। এখানেই যদি শেষ হতো, না হয় কথা ছিলো না। কিন্তু লেগে থাকা ওই অনুষ্ঠানের নোংরা বিষ্ঠা আমাদের মন থেকে কি মুছে ফেলতে পারছি আমরা?
ডিসেম্বরের থার্টিফাস্ট নাইট নিয়ে কিছু না বললে লেখা অপরিপূর্ণ থেকে যায়। “বেহুঁশ বাঙালি। ফুর্তি করে খায় রঙ্গিন জুস। কেউ থাকে আধাখোলা, কেউ বা থাকে পুরা। ছুঁড়ি বুড়ি সবাই নাচে; কত নারী আপন ছেড়ে পরকে ডাকে কাছে। কে দেশি? কে বিদেশি? বোঝা বড় দায়!” ‘একদিন বাঙালি ছিলামরে’ তাই মনে পইড়া যায়। এই হচ্ছে থার্টিফাস্ট নাইট-সমাচার। খুবই ঘৃণার সাথে বলতে হয়, আজ আমাদের সংস্কৃতি চলছে বিদেশী খবরদারির ওপর। হাল জামানার যুবকরা হাছন রাজাকে গাইছে পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্র দিয়ে। কলুষিত করছে লালনশাহর সাধকীয় ভাবশৈলীকে।
সবকিছুতেই বিদেশী রঙ। যে রঙের ধাঁধায় পড়ে আমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া রঙের মাঝে মরিচা ধরেছে। একশ্রেণীর কিশোর-কিশোরীরা যখন গিটার আর ড্রামস্ ছাড়া বাংলা গান কি এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে না, সেও যখন হাতে একতারা বা গলায় ঢোল বেঁধে নেয়, তখন বুঝতে হবে আকাশে ঝড়ো মেঘ জমেছে। বৈশাখ মানেই বাঙালির আটপৌরে জীবনে লালের দাপট, ঝড়ের সংকেত আর নতুনের আবাহনে স্টাইলিশ লাইফ। যেটা কেবলই ক্ষণিকের। যখন লিখেছি, যখন আপনারা লেখাটি পড়ছেন তখন হয়তো আমাদের কন্যা-জায়া-জননীগণ টিভিতে দেখছেন ‘সাস ভি কাভি বহু থি’ অথবা ওই টাইপের কিছু। আমরা মাইন্ড করিনি, কষ্ট পাই না। কষ্ট পেলেই কষ্ট হবে মনে। যা রোধ করবার নয়, কষ্ট পেয়ে লাভ কি তাতে?
আমাদের দেশে হিন্দি সিরিয়ালের ক্রেজকে একটা মহামারীর সাথে তুলনা করাটা বোধহয় ভুল হবে না। আমি অনেক পরিবারে একই সাথে বাবা-মার সাথে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের গভীর মনোযোগের সাথে হিন্দি সিরিয়াল উপভোগ করতে দেখেছি। দেখেছি কীভাবে তারা অকপটে পারিবারিকভাবে গিলে যাচ্ছেন একের পর এক অসামাজিক কাহিনি, যেমন : মালটি-ডাইমেনশনাল পরকীয়া প্রেম, বউ-শাশুড়ির ষড়যন্ত্র, মামার সাথে ভাগ্নির সম্পর্ক, ডিভোর্সের প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মতো জঘন্য কিছু বিষয়। এর অবশ্য একটা ভালো (?) দিক আছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা বাংলার পরিবর্তে হিন্দি বলে যাচ্ছে অনর্গল।
তাদের অভিভাবকরাও নিজের সন্তানের মুখ দিয়ে হিন্দি বুলি বের করে বেশ গর্ববোধ করেন। বাংলাদেশে আজকের সামাজিক অবক্ষয় আর পারিবারিক ও সামাজিক সুস্থ নিয়মনীতির ভেঙ্গে পড়ার পেছনে হিন্দি সিরিয়ালের অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়! আর এ প্রশংসার দাবিদার যারা আমাদেরকে এ জাতীয় অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে তারা। এ রাষ্ট্র এজন্যে ধন্যবাদ পায় বৈকি!
আমাদের সাবধান হতে হবে। বাঙালি মনকে আরও শাণিত করতে হবে, মনের ভেতরকার জং মুছে ফেলতে হবে; আরও গভীর থেকে দেশকে ভালোবাসতে হবে, বাংলা ভাষাকে ভালোবাসতে হবে। আমি বাঙালি, এটা ভেতরে লালন করতে হবে। নিজেদের পরিচয় নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো শক্তি জোগাতে হবে। গুরুসদয় দত্ত তার গানে বলেছিলেন ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ, বাঙালি হ, বাঙালি হ।’ অর্থাৎ সাহস জোগাতে হবে। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে নিজের ভেতরে। কেবল বৈশাখে নয়, বাঙালি হয়ে যেতে হবে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে। যেনো স্মৃতি হাতড়ে না বলতে হয়, ‘একদিন বাঙালি ছিলাম রে। একদিন বাঙালি ছিলাম রে..।’
এই কি সেই বৈশাখ, সারাটা বছর আমি যার প্রতীক্ষায় কাতর হয়ে থাকি? কোন্ ঋতু আমার প্রিয়, কারণ প্রকৃতি তখন রাজকুমারীর মতো তার রূপের পসরা নিয়ে হাজির হয়। কোন্ ঋতুতে রংবেরঙের নতুন সবজিতে রঙিন হয়ে ওঠে বাজার। কিন্তু বৈশাখের দাবি সবার চেয়ে আলাদা। যা কিছু পুরানো, ব্যর্থতা আর হতাশার, সে সব পেছনে ফেলে বৈশাখ নিয়ে আসে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। তবু তার জন্যই সেটি আলাদা নয়। বৈশাখের আরও বড় আহ্বান মিলন উৎসবের, মানুষে মানুষে যোগের। এই মিলনের ডাক যে কী অকৃত্রিম আর কী সপ্রাণ, যারা নববর্ষ দিবসের বাংলাদেশ দেখেননি, তাদের পক্ষে কল্পনা করাও কঠিন।
আমি সবসময় বলি, বাংলাদেশের প্রাণস্পন্দন যদি অনুভব করতে চাও, এসো পয়লা বৈশাখের ঢাকায়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনার বটমূলে গানে গানে নববর্ষবরণ। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্তের গানে ভরে ওঠে চারপাশ। ভোর দিনের দিকে গড়ায়, আর পথ হতে থাকে লোকারণ্য। আক্ষরিক অর্থেই লোকের অরণ্য। জন¤্রােতে একের পর এক রাজপথ হয়ে ওঠে মিলনক্ষেত্র। গাড়ি আটকে যায়। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা কারুশিল্পীদের হাটও ততোক্ষণে বসে গিয়েছে পথে পথে। আর এই একটু সময়ই এখন নিজেদের বাঙালি মনে হয়। আর এই সুখ নিয়েই হয়তো আমাদের বেঁচে থাকা।
মীর আব্দুল আলীম : সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ-গবেষক।