প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ০০:০০
ইতিহাস তৈরির জন্যে আপনি জন্ম নিয়েছেন
অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার
কিছু মানুষের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে একটা সময়ে সহনশীলতার আবরণ থেকে বের হয়ে এসে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে, তোমাদের ঘৃণা করতেও ঘৃণা হয় আমার। কারণ সব সমালোচনা, সমালোচনা হয়ে উঠে না। যে সমালোচনায় স্বার্থ থাকে, ঈর্ষা থাকে, ঘৃণা থাকে, যুক্তিহীন ক্ষোভ থাকে, তা কখনো সমালোচনা হয়ে উঠে না। বরং তা হয়ে উঠে দীপ্যমান সূর্যের আলোকরশ্মিকে টেনে ধরার মতো অসহিষ্ণুতা। নিজে না পারার অক্ষমতা থেকে হতাশা। তবে সূর্যের আলোকে থামিয়ে দিয়ে তার গতিরোধ করবে এমন সাধ্য কি সমালোচকদের আছে? সূর্যের আলো মানে সমালোচিত মানুষ। মানে মেঘনা পাড়ের দ্যুতি ছড়ানো কন্যা আমাদের প্রিয় আপা ডাঃ দীপু মনি।
|আরো খবর
শিক্ষিকা মা এবং রাজনৈতিক পিতার আদর্শে গড়ে উঠে যিনি শিখেছেন সমালোচনা নয়, উদারতা আর মহত্ব দিয়ে জীবনবোধ তৈরি করতে হয়। তিনি পরমতসহিষ্ণু, উদার এবং নৈতিকতাসম্পন্ন। তিনি ভেবেছেন একটু অন্যভাবে। বলতেও পেরেছেন, মন খুলে নিজেকে বিলিয়ে দাও মানুষের কল্যাণে।
সমালোচনা করতে যোগ্যতা লাগে না। তবে যিনি সমালোচিত হবেন তাঁর যোগ্যতা লাগে। প্রশ্ন আসে নিন্দুক কি তবে সমালোচক? অবশ্যই না। যদি তা-ই হয়, তবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বদান্যতার উৎস এখানেই যে, তিনি এদের পরম বন্ধু বলেছেন। যেমনটি তার কবিতার ছত্রে ছত্রে। বাষ্পরুদ্ধ বিস্ময় চমকিত হয়ে বলেছে ........
‘নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল,
যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আঁলো।
সবাই মোরে ছাড়তে পারে, বন্ধু যারা আছে,
নিন্দুক সে ছায়ার মত থাকবে পাছে পাছে।
কারণ নেতিবাচক চিন্তা দ্বারা পুষ্ট মানুষ অগঠনমূলক সমালোচনাকে তাদের অস্ত্র বলে মনে করে। তখন ঠিক এটা সমালোচনা না হয়ে নিন্দুক চরিত্র ধারণ করে। নিন্দুক চরিত্রের মানুষগুলোকে তিনি দূরে ঠেলে দিয়ে আহ্বান করেছেন এভাবে
“বিনামূল্যে ময়লা ধুয়ে করে পরিষ্কার,
বিশ্বমাঝে এমন দয়াল মিলবে কোথা আর?
নিন্দুকে সে বেঁচে থাকুক বিশ্ব হিতের তরে;
আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে।’
সমাজের সবচেয়ে অযোগ্য মানুষগুলোরই প্রধান হাতিয়ার হলো অপরের ভালো-মন্দ সবকিছুতে নির্বিচারে নিন্দা করা ও সমালোচনা করা। কেউ যখন তার যোগ্যতা দিয়ে নতুন কিছু করবে তখনই একদল অযোগ্য লোকের আঁতে ঘা হয়ে লাগে এবং নিন্দা সমালোচনা শুরু করে। যারা সমালোচনা করার মাধ্যমে ডাঃ দীপু মনির ক্ষতি করছে বলে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন, তারা পরোক্ষভাবে দীপু মনির উপকার সাধন করে ফেলেছেন। কিন্তু সেটা বোঝার মতো মাথাটা আপনাদের যে জায়গাটাতে থাকা দরকার ছিলো সেখানে নেই।
এরপরও সমালোচিতরা থেমে থাকে না। কংক্রিটের দরজা ভেঙে এগিয়ে যায় তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে। আর সমালোচনাকারীরা আটকে যায় নিজেদের বানানো অবরুদ্ধ নগরে। পৃথিবী সমালোচনাকারীদের কখনো মনে রাখে না। তবে সমালোচিতরা সময়ের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে ইতিহাস হয়ে যায়। মেঘনাপাড়ের কন্যা ডাঃ দীপু মনি ইতিহাস তৈরির জন্যে জন্ম নিয়েছেন। তিনি ইতিহাস তৈরি করে চলেছেন।