মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

বিষয়টি দুঃখজনক

বিষয়টি দুঃখজনক
অনলাইন ডেস্ক

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি না হলেও যদি কেউ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়/প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারায়, তাহলে মৃত ব্যক্তির প্রতি সকল শ্রেণীর মানুষের মনে কারুণ্য জন্মায়, শোকাহতদের প্রতি সমবেদনা, সংবেদনশীলতা তৈরি হয়। এমনটি প্রকাশে প্রতিবেশী, বন্ধু, আত্মীয়স্বজন তো বটেই, শত্রুপক্ষও অগ্রণী হয়। তারা শোকার্তদের পাশে দাঁড়ায়, কষ্টের অংশীদার হয় এবং সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু গত ২৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার কচুয়ার কড়ইয়া গ্রামে কচুয়া-হাজীগঞ্জ সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো তিন শিক্ষার্থীর বাড়িতে ঘটনার পর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা লাগাতার ভিড় জমালেও কোনো জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা যাওয়ার সময় পাননি। এ সংক্রান্ত একটি খবর গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে।

‘সড়ক দুর্ঘটনার ৪ দিনেও কান্না থামছে না নিহত তিন শিক্ষার্থী পরিবারের সদস্যদের। শোকার্তদের সমবেদনা জানাতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কারো দেখা নেই’ শীর্ষক সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় ঊর্মি মজুমদার ও সাদ্দাম হোসেন নামে কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের মাস্টার্সের দু শিক্ষার্থী এবং মাহবুব আলম রিফাত নামে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের এক ছাত্র কচুয়া থেকে স্ব স্ব কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে হাজীগঞ্জের উদ্দেশ্য রওনা হয়। বিধি বাম। রওনার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঢাকা অভিমুখী বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায় অটোরিকশাটি। এতে ঘটনাস্থলেই উক্ত তিন শিক্ষার্থী প্রাণ হারান এবং আরো এক শিক্ষার্থী ও অটোরিকশা চালক গুরুতর আহত হন। নিহতদের লাশ তাদের পরিবারের ইচ্ছায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে পোস্টমর্টেম ছাড়াই দাফন/দাহ করা হয়। এমনকি এ দুর্ঘটনায় থানায় কোনো মামলাও করেনি কেউ। তবে বিআরটিসি বাসটি আটক করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ চালককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

দোয়াটি গ্রামের নিহত ঊর্মির বাবা ৮ বছর আগে কুয়েতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। উচ্চ শিক্ষা লাভ করে ঊর্মির শিক্ষক হবার আশা পূরণ আর হয়নি। নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সাদ্দাম ও কোয়া গ্রামের মাহবুব বিবাহিত। সাদ্দামের রয়েছে তিন মাস বয়সী পুত্র সন্তান। এদের অকাল মৃত্যুতে তাদের স্ত্রীরা হয়েছেন বিধবা ও অসহায়। মাহবুবের স্বপ্ন ছিলো কৃতিত্বের সাথে শিক্ষা জীবন শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রশাসনিক ক্যাডার পদে চাকুরি করা। মাহবুব পিতার বার্ধক্যহেতু বেকারত্বের কারণে নিজে রোজগার করতেন এবং পড়ালেখাও করতেন। মাহবুবুরে মৃত্যুতে তার পরিবার এখন শুধু অন্ধকারই দেখছে।

মাহবুবের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তার চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ তিনজন শিক্ষককে তাদের বাড়ি পাঠিয়েছেন, শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আর্থিক সহায়তা করেছেন। আর ঊর্মি ও সাদ্দামের বাড়িতে তাদের কলেজের দায়িত্বশীল কেউ আসেনি। এই তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংবাদ শিরোনাম হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আর্থিক সহায়তা নিয়ে তাৎক্ষণিক এগিয়ে আসা তো দূরের কথা, সমবেদনা জানানোর ন্যূনতম কাজটুকুও করেন নি। এটা দুঃখজনক। আমরা আশা করি, তিনটি শোকাহত পরিবারের পাশে দেরিতে হলেও জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা দাঁড়াবেন, দুঃখ ও ক্ষোভ নিরসন করবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়