প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুরে সামগ্রিকভাবে সাংবাদিকতার সুবর্ণ সময়সহ নানা বিষয়ে উপযোগিতা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত উপযোগিতা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যারা সাংবাদিকতা করেন, তাদের অধিকাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় খুব বেশি ডিগ্রিধারী থাকেন না। এর বাইরে সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ অবারিত থাকে না। এ সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)সহ অন্য কোনো সংস্থা এগিয়ে আসলেও একাধিক সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে পরস্পরবিরোধী স্বতন্ত্র অবস্থান, সর্বোপরি সাংবাদিকদের মধ্যে স্থানীয় অনৈক্য কম-বেশি সমস্যা ও জটিলতা সৃষ্টি করে। এই সমস্যা-জটিলতা অনুভব করে পিআইবিসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ প্রদানকারী সংস্থা প্রথমত এগিয়ে আসলেও পরবর্তীতে পিছিয়ে যায়।
বাংলাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রেসক্লাব কিংবা অন্য নামের সাংবাদিক সংগঠন থাকলেও নিজস্ব কার্যালয় কিংবা সুপরিসর জায়গা স্বল্প ক’টি স্থানেই আছে। এমন একটি স্থানই হচ্ছে চাঁদপুর। এখানে জেলা সদরে একটি মাত্র প্রেসক্লাব আছে, সাংবাদিকদের সুদৃঢ় ঐক্য আছে এবং প্রেসক্লাবের সুপরিসর ভবন আছে। চাঁদপুর জেলা সদরে কর্মরত আছেন অন্তত শতাধিক সাংবাদিক। এরা জাতীয় পর্যায়ে প্রিন্টিং, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত থাকার পাশাপাশি স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে কর্মরত আছেন। এদের সাংবাদিকতা যেনো মানসম্পন্ন হয় এবং সাংবাদিকতার নীতিমালার সমান্তরালে চলে, সেজন্যে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তারা নিজেরা যেমন অনুভব করেন, তেমনি তাদের নিয়োগকর্তা সম্পাদক-প্রকাশকরাও অনুভব করেন। সেমতে, প্রশিক্ষণের যে কোনো আয়োজনে অনুকূল সাড়া দেন সম্পাদক-প্রকাশকসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা। এ প্রসঙ্গে পিআইবির বর্তমান মহাপরিচালক, একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, বিশিষ্ট কবি জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, চাঁদপুরের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে, রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। চাঁদপুর শহর থেকে অনেক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, আর এসব পত্রিকায় কাজ করছেন মেধাসম্পন্ন সাংবাদিকবৃন্দ। যারা সকলেই সচেতন ও কর্মদক্ষতাসম্পন্ন। এদের জন্যে কিছু করার লক্ষ্যেই পিআইবি বার বার চাঁদপুরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজন করছে। তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর প্রেসক্লাবে পিআইবি কর্তৃক তিনদিনব্যাপী বুনিয়াদি ও অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেছেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ গ্রহণের আন্তরিকতা রয়েছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের কাক্সিক্ষত উপযোগিতা রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী আনিছও অনুরূপ কথা বলেছেন।
পিআইবির মহাপরিচালক এবং দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক চাঁদপুরে সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতার বিষয়ে যে প্রশংসামূলক মতামত ব্যক্ত করেছেন, তাতে চাঁদপুরের সাংবাদিক সমাজ গর্বিত। পিআইবির মহাপরিচালক চাঁদপুরের সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে আরো প্রশিক্ষণ আয়োজনের আশ্বাস দেয়ায় এখানকার সাংবাদিকগণ উৎফুল্ল। আমরা বিশ্বাস করি, পিআইবির ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঁদপুরের সাংবাদিকরা সুসাংবাদিকতার চর্চা করতে পারবে এবং এর ফলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো ক্রমশ পাঠকপ্রিয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার পথে দ্রুত এগিয়ে যাবে। আমরা প্রশিক্ষণ আয়োজনে চাঁদপুর প্রেসক্লাব ও এ ক্লাবের নেতৃবৃন্দের আন্তরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।