মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

নিভৃতচারী লেখকের অক্লান্ত প্রয়াস !
অনলাইন ডেস্ক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে আজকাল আগ্রহী ব্যক্তিমাত্রই খুব সহজে তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। এই প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহের মধ্যে টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ইত্যাদির ব্যবহার অনেক কিছুকেই পূর্বের চেয়ে অনেক সহজতর করে দিয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশনা শিল্পের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতেই হয়। এ শিল্পটির অনেক সহজতর ও আশাব্যঞ্জক বিকাশ ঘটেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষতার বদৌলতে। এক সময় মফস্বল থেকে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করা ছিলো গলদঘর্ম হবার বিষয়, আর দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করা ছিলো আকাশ কুসুম কল্পনার সমতুল্য। বর্তমানে সকল ধরনের পত্রিকা প্রকাশই মামুলি ব্যাপারে পরিণত হয়েছে, যদি মান নিয়ে সম্পাদক মোটেও না ভাবেন। একইভাবে বই প্রকাশও খুব সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এককালে প্রচ্ছদ শিল্পীর খোঁজে বই প্রণেতাকে হয়রান হতে হতে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতায় হতাশ হতে হতো, আজকাল একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার সেই হয়রানি ও হতাশাকে নিমিষে দূর করে দেন। ফলে লেখকরা স্বস্তিবোধ করে স্বল্প সময়ান্তরে একের পর এক বই প্রকাশে মোটেও দ্বিধান্বিত হন না।

আজকাল গুগলে চার্চ দিলে খ্যাত লেখক তো বটেই, অনেক অখ্যাত লেখক সম্পর্কেও কম আয়াসে সম্যক ধারণা অর্জন করা যায়। এর মধ্যে পর্যবেক্ষণ করলে বেরিয়ে আসে যে, বইয়ের সংখ্যাধিক্যেও কিছু লেখক নিজেকে খ্যাতিমান করতে পারেন না। কারণ তার বইয়ের প্রচ্ছদ ও ছাপার চাকচিক্য সত্ত্বেও লেখার মানহীনতায় পাঠকপ্রিয়তা অর্জনে তিনি ব্যর্থ। এমন বাস্তবতায় যদি জানা যায়, একজন লেখকের বই বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে এবং সেটি দেশের সীমানা পেরিয়েছে, তখন ভালো লাগার অনুভূতিতে বিস্মিত হতে হয় বৈকি। এমনই এক লেখক হচ্ছেন চাঁদপুরের গর্ব ড. এ এইচ খান। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ্ কর্তৃক ৯ সেপ্টেম্বর পরিবেশিত ‘মতলবের কৃতী সন্তান ড. এ এইচ খান রচিত ফাদার অব দ্যা নেশন এখন বিশ্ব দরবারে’ শীর্ষক সংবাদ থেকে চাঁদপুরবাসী এই লেখক সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছে।

এ সংবাদে লিখা হয়েছে, ড. এ এইচ খান পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি গ্রীন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও ডিরেক্টর হিসেবে যুগপৎ দায়িত্ব পালন করেন। রয়েছেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের দায়িত্বেও। তিনি মতলব দক্ষিণ উপজেলার ২নং নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের পাঁচ ঘড়িয়া খান বাড়ির লঞ্চ ব্যবসায়ী মকবুল খানের বড় ছেলে। তিনি বহু বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন উৎস থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণসমূহ এবং নিজ হাতে লেখা চিঠিপত্র সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত এ তথ্য ভাণ্ডারকে সকল ধরনের পাঠকের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত ভাষণ’ নামক চার খণ্ডে প্রকাশিত বইয়ের মাধ্যমে। তিনি বঙ্গবন্ধুর পূর্ণাঙ্গ জীবনী নিয়ে উপন্যাসের আদলে লিখেছেন ‘ফাদার অব দ্য নেশন’। ২০০৬ সালে এ বইটির প্রকাশনা উৎসবের রাতেই অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি তৎকালীন (বিএনপি-জামায়াত) সরকারের রোষানলে পড়েন এবং মিথ্যা মামলায় আটক হন। ইতোমধ্যে বইটি বাংলা ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। এখন বিশ্বের সবচে’ বড় অনলাইন মার্কেট প্লেস এমাজান. কম-এ আপলোড হয়েছে।

ড.এএইচ খান বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। তিনি বহু গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, প্রামাণ্য গ্রন্থ ও কাব্য গ্রন্থসহ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ের রচয়িতা। তিনি অভিনয়ের সকল ক্ষেত্রে (চলচ্চিত্র, টেলিফিল্ম, নাটক ও মঞ্চে) কম-বেশি পারঙ্গমতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি লিখেছেন গানও। বাংলাদেশ কালচারাল ফোরামের সভাপতি এবং নানা সংগঠনের সদস্য হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করছেন।

ড.এ এইচ খানকে অন্যান্য অনেক লেখকের ব্যাপক প্রচার ও প্রদর্শনেচ্ছার সাথে তুলনা করলে নিভৃতচারীই মনে হয়। অথচ লেখালেখিতে ও প্রামাণ্য গ্রন্থ প্রকাশে তাঁর সে কী অক্লান্ত প্রয়াস। আমরা এমন লেখকের কাছ থেকে নিশ্চয়ই সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর এমন কিছু প্রকাশনা প্রত্যাশা করবো, যাতে আমাদের সাহিত্য অঙ্গন আলোকিত হয়, ভাষার গৌরব বৃদ্ধি পায়। আমরা বাংলাকে বিশ্বায়নের ক্ষেত্রে ড. এ এইচ খানের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও প্রয়াস প্রত্যাশা করি। 

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়