রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
  •   এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা
  •   হাজীগঞ্জের সকল মৃত্যুর খবরই গুজব!
  •   দিনমজুরকে জবাই করে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
  •   অবশেষে চাঁসক সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাছানকে বদলি

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

শেষদিন পর্যন্ত পুলিশ সুপার দৃঢ় থাকুন তাঁর বক্তব্যে---

অনলাইন ডেস্ক
শেষদিন পর্যন্ত পুলিশ সুপার দৃঢ় থাকুন তাঁর বক্তব্যে---

চাঁদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেছেন, আমার পুলিশ প্রশাসনের কোনো দপ্তরে ঘুষ বা দুর্নীতি থাকবে না। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবো। গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক), কিশোর গ্যাং, চাঁদপুর শহরের অটোবাইক, মাদক নির্মূল,যৌথ অভিযান, পুলিশ ও সাংবাদিক একসাথে মিলে কাজ করা, নিরাপদ চাঁদপুর গড়ে তোলাসহ আরো কিছু বিষয়ে অনেক কথা বলেছেন। তবে তাঁর প্রথম কথাটিই সকলের মনে ধরেছে। কেননা এ পর্যন্ত চাঁদপুরে কোনো পুলিশ সুপার যোগদানের অব্যবহিত পরে এমন ঘোষণা দেননি। তারা সাধারণত মাদক সহ অন্য বিষয়ে তাদের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ঘুষের ব্যাপারে সেটা করেন নি।সেজন্যে চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার হিসেবে মুহম্মদ আব্দুর রকিব ব্যতিক্রম ভাবমূর্তি তৈরির ক্ষেত্রে পা রাখলেন। তিনি তাতে সফল হোন--সেটাই সচেতন প্রতিটি মানুষ প্রত্যাশা করে।

পুলিশ ঘুষ খায়--এটা ওপেন সিক্রেট বিষয়। আবার সবসময় পুলিশ যে ঘুষ খায় না, বরং অনেকেই পুলিশকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘুষ দেয়--সেটা নিয়ে কথা আছে, গল্প আছে। সেই কথা ও গল্পের বিবরণ এখানে তুলে ধরলে সম্পাদকীয় নিবন্ধ নয়, এটি হয়ে যাবে রম্য রচনা।

পুলিশের ঘুষ নিয়ে চাঁদপুর প্রসঙ্গে আসি। এখানে সাবেক এক পুলিশ সুপার নিজেকে ঘুষমুক্ত দাবি করতেন। কিন্তু তাঁর স্পাউস মাত্রাহীন ঘুষের টাকা গ্রহণ করে পুলিশ সুপারকে দিয়ে অন্যায় কাজ করাতেন। আরেক সাবেক পুলিশ সুপারের স্পাউসকে শুধু ঘুষের টাকা গ্রহণ নয়, আমোদণ্ডফূর্তির জন্যে একের পর এক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার সহ স্থানীয় রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে পক্ষপাতদুষ্ট কাজে সংশ্লিষ্ট হতে দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ের এক সাবেক পুলিশ সুপারের স্পাউসের জন্মদিন ও বিবাহবার্ষিকী পালনসহ নানা আমোদণ্ডফূর্তিতে ওসিসহ অন্য ঊর্ধ্বতন ও অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি/ গ্রহণের বিষয়টিতো ছিলো রীতিমত মুখরোচক। এসব নিয়ে স্থানীয় কোনো গণমাধ্যম কর্মীর টু-শব্দটিও করার সুযোগ তো দূরের কথা, পুলিশের ন্যূনতম অনিয়ম নিয়ে কোনো সংবাদ পরিবেশন করলেও স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিকে বিব্রতকর চায়ের দাওয়াতে অংশ নিতে বাধ্য করানো হতো। সেই পুলিশ সুপারের সৌম্য কান্তির অবয়বে পিতার পরিচয়ে অহমিকা, পদের জোরে দাম্ভিকতাপূর্ণ আচরণ যেভাবে ফুটে উঠতো, তা হজম করা অনেকের জন্যেই ছিলো ভীষণ কষ্টকর।

আজ এই সম্পাদকীয় নিবন্ধে এতোটুকু লিখার সাহস হয়েছে দেশটি দ্বিতীয়বার স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে বলে। সেই সাহসের বলেই নূতন পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিবের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনি চাঁদপুর জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি হিসেবে ঘুষের বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেন, নিঃসন্দেহে সেটা প্রশংসনীয়, তবে অনেক চ্যালেঞ্জিং। কারণ পুলিশকে ঘুষ থেকে বিরত রাখতে আপনি দৃঢ় থাকবেন ঠিকই, কিন্তু অবৈধ কার্য সম্পাদনে অতি উৎসাহী কিছু মানুষের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘুষ প্রদানের গোপন প্রয়াসকে থামাতে আপনি কোন্ কৌশল অবলম্বন করবেন? নিশ্চয়ই সে কৌশলও আপনার জানা আছে কিংবা সেটি জানতে আপনি আন্তরিক হবেন। আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, আপনি চাঁদপুরে আপনার শেষদিনের অবস্থান পর্যন্ত ঘুষের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে দৃঢ় থাকুন এবং সেই দৃঢ়তার আলোকে এমন কিছু করে দেখান, যেটা দেশের জন্যে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়