বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

সেচ প্রকল্পগুলোর জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নিন

অনলাইন ডেস্ক
সেচ প্রকল্পগুলোর জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নিন

একটু ভারী বৃষ্টি হলেই মতলব উত্তর উপজেলাধীন মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা হওয়াটা একটা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এমনটি চাঁদপুরের অন্য একটি সেচ প্রকল্প চাঁদপুর সেচ প্রকল্প তথা সিআইপিতে সচরাচর দৃষ্টিগোচর হতো না। এবার সেটি হয়েছে এবং স্মরণকালের মধ্যে সবচে' বেশি হয়ে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে, যার ক্ষতি বলা যায় অপরিসীম। এমতাবস্থায় সিআইপির অন্তর্গত ফরিদগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালাতে হয়, যেটি নিকট ও সুদূর অতীতে কখনো দেখা যায় নি। একই সাথে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা হলেও ত্রাণ তৎপরতা চালানোর মতো পরিস্থিতি হয় নি। তবে পানির চাপে সেচ প্রকল্প বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার মতো ঝুঁকি তৈরি হয়। দল-মত নির্বিশেষে সকল স্তরের সকল বয়সী মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজ করায় সে ঝুঁকি কেটে যায়। তারপরও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তর ভাগ ক্ষয়ক্ষতি মুক্ত ছিলো এমনটি কিন্তু নয়।

গত সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠে চলতি বর্ষা-বৃষ্টি মৌসুমে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ভারী বৃষ্টিতে বারবার জলাবদ্ধতায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে ইসমত বাহার লিখেছেন, কৃষি উৎপাদন মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। ১০ হাজার ৬ শ' ৪১ জনের অধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মূলধন হারিয়ে কৃষকের পথে বসার আশংকা তৈরি হয়েছে।ময়লা-আবর্জনায় ও জায়গা দখলের কারণে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর খাল ও সরকারি খালগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে ও গেছে। খাল গুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় প্রতি বছরই কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে কয়েক ধাপে টানা প্রবল বর্ষণে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। কৃষকরা বার বার জমিতে ফসল চাষ করে উৎপাদনে যেতে পারছে না। ফসল মার খাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, এ বছর দফায় দফায় বৃষ্টিতে পানি জমে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বীজতলা পচে গেছে। জমিগুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় চারা রোপণ করা যাচ্ছে না। রোপণকৃত চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। সরকার থেকে প্রণোদনা পাওয়া ধানের বীজও বেশির ভাগ গজায়নি। ফসল উৎপাদন না হলে মূলধন হারিয়ে পথে বসতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, ধাপে ধাপে বৃষ্টি হওয়ায় বার বার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জমির বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় রোপা ধান ও বীজতলা, সবজি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলি মাঠ থেকে পানি যদি না কমে এবং বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ফসল উৎপাদন কমবে।

জলাবদ্ধতার জন্যে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে যেসব কারণ, চাঁদপুর সেচ প্রকল্পেও তা-ই। তবে ফসল চাষের চেয়ে ঘের তৈরি করে মাছচাষের ব্যাপক প্রবণতায় চাঁদপুর সেচ প্রকল্প অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা অস্বাভাবিক হয়েছে এবং সেজন্যে মাছচাষিদের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতায় আক্রান্ত হতে হয়েছে, যেটা লুকানোর মতো বিষয় নয়। উপর্যুপরি দুটি সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউজগুলোর কার্যকারিতা আগের মতো নেই। যে কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের পারঙ্গমতার অভাবহেতু জলাবদ্ধতার স্থায়িত্ব বাড়ে এবং সে কারণে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ে। আমরা শুধু চাঁদপুরের দুটি সেচ প্রকল্প নয়, দেশের অন্য যে সকল সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতার সমস্যা আছে, সবক'টির অনুরূপ সমস্যার টেকসই সমাধানের প্রয়োজনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু জরিপ কাজ কালবিলম্ব না করে এখন থেকেই শুরু করার অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে জলাবদ্ধতার প্রকৃত কারণগুলো নির্ণয় করে আগামী বর্ষার আগেই সম্ভাব্য সকল উদ্যোগগ্রহণ করা যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়