প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
রাস্তার ক্ষত নিয়ে আগাম ভাবনা থাকা দরকার
প্রতি বছর বর্ষা ও বন্যা এবং অতি বৃষ্টিতে জাতীয় মহাসড়ক, মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক, জেলা ও উপজেলা সংযোগ সড়কসহ সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি ও পৌরসভার আওতাধীন সড়ক সমূহ এবং জালের মতো বিস্তৃত গ্রামীণ কাঁচা-আধা পাকা সড়কগুলো কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনটি হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। নিম্নমানের কাজ ছাড়াও অতি ভারী যানবাহন চলাচলের কারণেও পিচ ঢালাই সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের জানা মতে, পিচ ঢালাইকৃত সড়কের শত্রু হচ্ছে জমাকৃত পানি। পানি যাতে না জমে সেভাবে সড়কে ঢালাই করলেই হয়। কিন্তু অধিকাংশ সড়কে যথাযথ মনিটরিংয়ের অভাবে ঢালাই নিখুঁতভাবে হয় না। এছাড়া নিম্নমানের বিটুমিন বা পিচ ব্যবহারের কারণেও সড়কের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের মতো সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে ক্রমশ এই ক্ষতগুলো গর্তে পরিণত হয়। আর গর্ত বড় হতে থাকলে ঘটে দুর্ঘটনা।
|আরো খবর
বর্ষা-বন্যা-অতিবৃষ্টিহেতু সড়কে কম-বেশি ক্ষত হতে পারে-এটা সওজ, এলজিইডি, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষই জানে। এ জানা থেকেই সাময়িক ম্যান্টেনেন্স বা মেরামতের জন্যে আগাম প্রস্তুতি থাকা দরকার। সেজন্যে আলাদা বরাদ্দ রাখা দরকার। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এ প্রস্তুতি ও বরাদ্দ কোথাও থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটি এড়িয়ে যায় অথবা নিয়োজিত ঠিকাদার কাজ না করে পুকুর চুরি করে। আবার কোথাও আগাম ভাবনা ও বরাদ্দ কোনোটাই থাকে না। এমতাবস্থায় যানবাহনের ড্রাইভাররা চাঁদা তুলে কিংবা স্বেচ্ছাশ্রমে গর্ত ভরাট করে কোনো কোনো সড়ককে মোটামুটি চলাচল উপযোগী করে রাখে। আবার স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অনুদানে কোনো কোনো সংগঠন বর্ষা মৌসুমে দুর্দশাগ্রস্ত সড়ক মেরামতে এগিয়ে আসে। যেমনটি এবার মতলব উত্তরে বার বার দেখা গেছে।
সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে বিশেষ করে জুলাই-আগস্ট মাসের বৃষ্টিতে চাঁদপুর শহরের ছোট-বড় সড়কের বিভিন্ন স্থানে কিছু ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, যেগুলো এখনও গর্তে পরিণত হয়নি। দৈনন্দিন ছোটখাট মেরামতে এ ক্ষতগুলো সেরে যেতে পারে, যেটা গর্তে পরিণত হবে না বলে মনে করি। চট্টগ্রামের সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সংক্ষিপ্ত যোগাযোগ স্থাপনকারী হরিণা-আলু বাজার ফেরি অভিমুখী ভাটিয়ালপুর-চান্দ্রা চৌরাস্তা অংশের সড়কটি প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে গর্তময় বিপজ্জনক অবস্থা ধারণ করে। এই গর্তগুলো সাময়িক মেরামতের মাধ্যমে সেরে ফেলার উদ্যোগ না থাকায় পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের দুর্ঘটনা কবলিত হওয়াটা এখন নিত্য দিনের কমন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনের মালিক ও পণ্যের মালিক তথা ব্যবসায়ীরা।
চাঁদপুরের হরিণা থেকে শরীয়তপুরের আলুবাজার পর্যন্ত মেঘনা নদী পাড়ি দিতে সৃষ্ট এই ফেরিটি দিনের পর দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই গুরুত্ব বিবেচনায় ফেরিটির দু পাশের সংযোগ সড়কগুলোর টেকসই উন্নয়নে সওজ কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপগ্রহণ অত্যাবশ্যক বলে আমরা মনে করি।