প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
পবিত্র আশুরা ও কারবালার শিক্ষা
আরবি সন হিজরি বর্ষ শুরু হয় মহররম মাস দিয়ে। মহররম মাসটি হলো ইসলামে যে চারটি মাসকে হারাম তথা সম্মানিত করা হয়েছে, তার একটি। আর এ মহররম মাসেই রয়েছে পবিত্র ‘আশুরা’, যা মহররমের ১০ তারিখ। আরবি সংখ্যায় এটিকে আশুরা বলা হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এ দিনে। এগুলোর মধ্যে মানুষের হৃদয়ে সবচে’ বেশি রেখাপাত করেছে ৬১ হিজরিতে ঘটে যাওয়া কারবালার মর্মান্তিক রক্তাক্ত ঘটনা। সেই নৃশংস ঘটনা যখন ঘটে তখন চার খলিফার স্বর্ণযুগ অতীত। মুসলিম জাহানে চলছিল চরম অরাজকতা। পাপাত্মা ইয়াজিদ ইসলামের রীতিনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে স্বেচ্ছাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করে। নিমজ্জিত হয়ে পড়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। তার অন্যায় অবিচার ও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেননি প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দৌহিত্র জান্নাতের যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইন (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু)। ন্যায় ও সত্যের পতাকা সমুন্নত রাখতে তিনি আপসহীন ছিলেন বলে কারবালা প্রান্তরে সেদিন হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়। ইয়াজিদের বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ে পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথীসহ ৭২জন মর্দে মুজাহিদ শাহাদতের সুধা পান করেন। আর বিশ্ববাসীকে এ শিক্ষা দিয়ে গেছেন, মুমিন মুসলমান মাত্রই কখনো অন্যায় অসত্য স্বৈরাচার ও অনৈতিকতার কাছে মাথা নত করতে পারে না। সীমিত শক্তি হলেও লড়ে প্রয়োজনে জীবন বিসর্জন দিতে হবে।
|আরো খবর
কারবালার ময়দানে ইয়াজিদ বাহিনীর ২২ হাজার সৈনিকদের মধ্যে ৭ হাজার কোরআনে হাফেজ ও ৩ হাজার মুফতি ছিলো। তারপরেও ইমাম হোসাইন (রাঃ) বলেছিলেন, তোমাদের মধ্যে কি কোনো ঈমানদার নেই যে হোসাইনকে সাহায্য করবে। ইমাম হোসাইন (রাঃ)- সেই কঠিন উক্তিটি স্মরণ এবং একটু গভীরভাবে অনুধাবন করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সেই বাস্তবতা এখনো বিরাজমান। ঠিক একইভাবে বলতে গেলে আমাদের দেশেও বর্তমানে আলেম আর মুফতির অভাব নেই। কিন্তু ঈমানদারের বড়ই অভাব।
এই নশ্বর পৃথিবীটা হচ্ছে পরজগতের বিচরণ ক্ষেত্র, মহান স্রষ্টার নেয়ামত। এখানে আমি যা বুনবো, পরজগতে সেটা ভোগ করবো। তাই ইহকালের ক্ষণস্থায়ী জিন্দেগিতে আমরা যেনো দুনিয়ার ভোগ-বিলাসের মোহে পড়ে পরকালের অনন্ত অসীম জিন্দেগিকে ভুলে না যাই। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে আমি/আমরা সে সব কর্মই করবো, তার ফলস্বরূপ পরজগত যেনো আমাদের শান্তিময় ও সুখময় হয়।