সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

এমন আমরণ অনশনে কারো  টনক কি নড়বে?
অনলাইন ডেস্ক

ফরিদগঞ্জে একটি বিষয় ক্রমশ জটিলতার দিকেই এগুচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। গত এক বছরের অধিক সময় ধরে এ বিষয়টি গণমাধ্যমে সংবাদের উপজীব্য হলেও প্রশাসনের কারো ভাবনার উপজীব্য হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। যার ফলে বিষয়টি আমরণ অনশন পর্যন্ত গড়িয়েছে। কথা হলো, এতেও কি কারো টনক নড়বে?

গতকাল দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘পৈত্রিক ভূমি রক্ষা ও হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থার দাবিতে ফরিদগঞ্জে আমরণ অনশনে এক পরিবার’ শীর্ষক সংবাদ থেকে জানা যায়, প্রতিপক্ষ কর্তৃক দুবছর ধরে পৈত্রিক ভূমি থেকে উচ্ছেদের জন্যে নানাভাবে হয়রানি, প্রকাশ্য দিবোলোকে হামলা-মারধর, টিনের ঘর, দোকানঘর ভাংচুর, গাছগাছালি কেটে সাবাড়ের ঘটনায় আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছ থেকে কোনো আইনি সহযোগিতা না পাওয়ায় আমরণ অনশনে বসেছেন। সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের পাশে তারা অনশনে বসেন। এতে অংশ নেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ফয়েজ মৃধা, ফরিদ এবং তাদের পরিবারের শিশু সন্তান।

ভুক্তভোগীরা জানান, রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের ফয়েজ মৃধা গংয়ের সাথে মুগদা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাহার গং তাদের প্রতিবেশী হওয়ায় জমিজমা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাদের দখল ও দলিল মূলে তারা বেশ ক'টি দাগে ৪৮.৬২ শতক ভূমির মালিক এবং এ পর্যন্ত দখলে থেকে ভোগ করে আসছেন তারা। কিন্তু প্রভাবশালী একটি চক্র (মোশারফ হোসেন বাহার, মোজাম্মেল হোসেন বাবুল, আবুল কাশেম, দেলোয়ার হোসেন, লোকমান আমিন গং) তাদের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উক্ত ভূমি দখল করার চেষ্টাসহ নিয়মিত হয়রানি করে আসছেন। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ কর্তৃক কয়েকবার প্রকাশ্যে শারীরিক হামলার শিকার হয়েছেন তারা। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবোলোকে তাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অংশ হিসেবে প্রতিপক্ষ হামলা, মারধর, টিনের ঘর, দোকানঘর ভাংচুর, গাছগাছালি কেটে সাবাড়ের ঘটনা ঘটায়। এমতাবস্থায় তারা নিরূপায় হয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ দুই দফা ঘটনাস্থলে গেলেও হামলা, ভাংচুর ও গাছগাছলি কেটে নেয়ার ঘটনায় অদ্যাবধি মামলা নেয়নি।

উক্ত নালিশি ভূমির বিষয়ে ১৪৫ ধারার মামলার ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে দখলীয় প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিলে স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উল্টো প্রভাবশালী পক্ষের দখল দেখিয়ে গত কয়েক মাস পূর্বে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ভূমি অফিসের প্রতিবেদনকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ লোকমান আমিনের ছেলে ওমর ফারুক জানান, আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় ফয়েজ মৃধাদের দখলে থাকা ওই সম্পত্তি ২০ ডিসেম্বর তারা দখলমুক্ত করেছেন। ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার এমন আশ্বাস যাতে তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতায় প্রহসনে পরিণত না হয় সেটিই এখন দেখার বিষয়। আর আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় আদালতের কোনো নির্দেশ ছাড়া নালিশি ভূমি দখলমুক্ত করার প্রয়াসের ব্যাপারে প্রতিপক্ষের স্বীকারোক্তি আমরণ অনশনরত ফয়েজ মৃধা গংয়ের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণের জন্যে সহায়ক এবং প্রতিপক্ষের দখলে না থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় ভূমি অফিস তর্কিত নালিশি ভূমি প্রতিপক্ষের দখলে থাকার যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে, সেটি যে ভুল তাও প্রমাণ করে। সে আলোকে আমরা পুলিশকে প্রভাবমুক্ত থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি, যাতে আমরণ অনশনরতরা তাদের দৃঢ়তায় পরিস্থিতি ঘোলাটে করার পর্যায়ে নিয়ে যেতে না পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়