সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

এমন বিজয় মেলা চাঁদপুরের জন্যে অনেক বড় গর্বের
অনলাইন ডেস্ক

প্রতি বছর অক্টোবর মাস থেকে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা আয়োজনের তোড়জোড় শুরু হয়। প্রথম প্রস্তুতি সভায় পূর্বের বছরের হিসাব নিকাশ ও নেতৃত্বের ভুল-ত্রুটি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় বলে অংশগ্রহণকারীদের অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন। সভা থেকে বেরিয়ে কেউ কেউ বলে ফেলেন, এবার বোধহয় বিজয় মেলা আর করা যাবে না। বিজয় মেলা নিয়ে কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে খোঁচাখুঁচিও করেন। এতে চাঁদপুরের সংস্কৃতিকর্মীরা পিছু না হটে সচেতন হয়ে যান এবং বিজয়মেলা বিরোধী অপশক্তিকে ধৈর্য, সহনশীলতা, বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলের সাথে ঐক্যবদ্ধতায় মোকাবেলা করেন। সর্বোপরি চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আন্তরিক সহযোগিতা, স্বাধীনতার সপক্ষের রাজনৈতিক দল, সুধীজন, স্থানীয় এমপিসহ অন্য জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদনে বিজয় মেলা থমকে না দাঁড়িয়ে আয়োজনের ধারাবাহিকতার দিকে অগ্রসর হয়।

চলতি ২০২২ সালে বিজয় মেলার প্রথম প্রস্তুতি সভার অভিজ্ঞতা আয়োজকদের অনেকের জন্যেই সুখকর ছিলো না। কারো কারো ওপর মিথ্যা অপবাদ চাপিয়ে, অপপ্রচার করে স্বল্প সংখ্যক লোক চেয়েছিল বিজয় মেলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। কিন্তু তাদের এ প্রয়াসকে ব্যর্থ প্রমাণ করে আয়োজকরা তাদের স্বচ্ছতা ও দৃঢ়তায় বিজয় মেলার ধারাবাহিকতা রক্ষার দিকেই কেবল এগিয়ে যান। বস্তুত এ কারণে তারা সফলতার মুখও দেখেছেন। চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. ওয়াদুদের সহসিকতা ও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতায় এবার বিজয় মেলা অনুমোদিত সময়ের তিনদিন পূর্বে অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয়ে যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সাংসদ, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তারপর ৮ ডিসেম্বর তথা চাঁদপুর মুক্ত দিবস থেকে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে শুরু হয় এই বিজয় মেলা, যেটি চলবে ১০ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত।

শুরুর দিন থেকেই বিজয় মেলায় ব্যাপক জনসমাগম হতে থাকে। প্রতিদিন বিকেল ৪টার পর থেকে বিজয় মেলা অভিমুখী জন¯্রােত চোখে পড়ার মতো। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এই মেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক সমাগম হয়। এ মেলার কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্যে লাগানো ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরার হিসাব অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে, বিজয় দিবসে বিজয় মেলায় প্রায় পঁয়ষট্টি হাজার লোকের সমাগম ঘটেছে। এছাড়া গড়ে অন্যান্য দিন ২০-২২ হাজার লোকের সমাগম হয়েছে।

পুলিশ, স্কাউট সহ স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতায় মেলায় আগত লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় এবং আয়োজকদের মধ্যে মহাসচিব হারুন আল রশীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে চাঁদপুরের এই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মদণ্ডজুয়া-হাউজি ও অশ্লীলতা ছাড়াই অনেক জমজমাট। অর্থ সংস্থানের জন্যে স্টল বরাদ্দ দেয়ার কারণে নিন্দুকেরা এ মেলাকে বাণিজ্য মেলা বললেও আয়োজকরা মেলাটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারের উদ্দেশ্য থেকে মোটেও বিচ্যুত হন নি। সে কারণে প্রচ্ছন্ন-অপ্রচ্ছন্ন বাধা মোকাবেলা করে চাঁদপুরে বিজয় মেলা চলছে কার্যত মসৃণভাবে। সত্যিই চাঁদপুরের এই বিজয় মেলা চাঁদপুরের জন্যে অনেক বড় গর্বের, প্রতিটি চাঁদপুরবাসীর জন্যে আত্মশ্লাঘার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়