সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

নায়েরগাঁও বাজারে ডাকাতি প্রসঙ্গে

নায়েরগাঁও বাজারে ডাকাতি প্রসঙ্গে
অনলাইন ডেস্ক

সড়ক ও নৌপথে যাতায়াত করা যায় এবং পালিয়ে যাওয়ার সুবন্দোবস্ত আছে এমন বাজার বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডাকাতি করার জন্যে ডাকাতরা ওঁৎ পেতে থাকে। ডাকাতি করার পূর্বে ডাকাতরা নির্দিষ্ট স্থানে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ বা রেকি করে থাকে এবং তারপর অপারেশন চালায় ও সাফল্য খুঁজে পায়। চাঁদপুর জেলায় এমন কিছু বাজার বা স্থান আছে, যেগুলোর মধ্যে মতলব উত্তরের কালীপুর এবং মতলব দক্ষিণের নায়েরগাঁওয়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ক’বছর আগে এ দুটি বাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা শুধু চাঁদপুর জেলা নয়, সমগ্র দেশেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। সেই স্মৃতি মন থেকে মুছে না যেতেই নায়েরগাঁও বাজারে গত সোমবার দিবাগত রাতে আবার ডাকাতি হয়েছে। লুট হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ টাকার মালামাল।

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত ২টার পরে ১৫-১৬ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল নদী পথে ট্রলারযোগে নায়েরগাঁও বাজারে প্রবেশ করে। তারা বাজারটির আটজন নৈশ প্রহরীর মধ্যে সাতজনকে এবং একজন দর্জিকে একত্রিত করে একটি দোকানের ভেতর নিয়ে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচ টেপ পেঁচিয়ে শাটার বন্ধ করে দেয়। তারপর ৪টি জুয়েলারি দোকান ও ১টি মোবাইলের দোকানে তালা ভেঙ্গে ঢুকে ২০-২২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪ ভরি রূপা, নগদ ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও ২০টি দামী এন্ড্রয়েড মোবাইল সেটসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নির্বিঘ্নে নৌপথে পালিয়ে যায়। এ ডাকাতিকে মতলব থানার ওসি রহস্যজনক বলে মনে করছেন। দায়েরকৃত মামলার তদন্তে নিশ্চয়ই এ রহস্য উদ্ঘাটনে তার থানার নিয়োজিত তদন্ত কর্মকর্তা সফল হবে-এটা আমরা বিশ্বাস করি।

নায়েরগাঁও হচ্ছে মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত এলাকার একটি বাজার। এটি ২নং নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নে ধনাগোদা নদীর তীরে এবং বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই সড়কের পাশে অবস্থিত। নিঃসন্দেহে এটি ডাকাতিপ্রবণ বাজার। সেজন্যে এ বাজারে আটজন নৈশ প্রহরীকে নিয়োগ দিয়েছে বাজার কমিটি। কথা হলো, কোনো বাজারে নৈশ প্রহরী নিয়োগ দিলেই কি সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট সকলের?

আমাদের মতে, নৈশ প্রহরী নিয়োগ দিলেই হবে না, চুরি-ডাকাতিসহ নৈশকালীন অন্যান্য অপরাধ রোধে তাদেরকে দক্ষতা ও কৌশল শেখানোর জন্যে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থাগ্রহণে বাজার কমিটি কিংবা অন্য নিয়োগ কর্তাকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সেটি সাধারণত করা হয় না। লাঠি-বাঁশি ও পোশাক দিয়েই নৈশ প্রহরীর নিয়োগদাতারা নিশ্চিন্ত হয়ে যান। এদের গতিবিধি ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করা এবং কার্যক্রম তদারকিতে নিয়োগদাতারা থাকেন ভীষণ উদাসীন। বস্তুত এমন উদাসীনতাই বিপজ্জনক।

মতলবের নায়েরগাঁও বাজারের ডাকাতির ঘটনা বিশ্লেষণে নৈশ প্রহরীদের দক্ষতা ও কৌশলের অভাব এবং দায়িত্বপালনে উদাসীনতার বিষয়টি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে। নিশ্চয়ই তদন্তে এ বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এ ডাকাতির সাথে নৈশ প্রহরীদের কারো না কারো পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অনুমান করে বলে তাদেরকে পুলিশি হয়রানির মুখে ফেলে দেয়াটা কারো জন্যেই সমীচীন হবে না। আমরা ডাকাতিপ্রবণ নায়েরগাঁও বাজারে অবিলম্বে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে শুধু বাজারটিকে নয়, বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই সড়কটির নৈশকালীন নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি জোরালো আবেদন রাখছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়