বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২২, ০০:০০

সাবাস জনতা!
অনলাইন ডেস্ক

ব্যস্ত নাগরিক জীবন যেনো যান্ত্রিকতায় আচ্ছন্ন। প্রতিবেশীর সুখে-দুঃখে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই কারো কারো। আবার সুযোগ থাকলেও মানসিকতা নেই। আত্মকেন্দ্রিকতায় মগ্ন অনেকেই। অন্যের কী হলো না হলো সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় নেই। সংবেদনশীলতাও হ্রাস পাচ্ছে অনেকের। হৃদয়ে মানবিকতার চাষবাস করতে চায় না অধিকাংশজন। রাস্তায় ছিনতাইয়ের দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী পাশ কেটে চলে যায়, চিৎকার করার সাহস দেখায় না কেউ কেউ। মেয়ে শিক্ষার্থীসহ যুব বয়সী নারীদের বিভিন্ন স্থানে উত্ত্যক্ত করা ও মাদক সেবনসহ নানা অপকর্মে নিয়োজিত উচ্ছৃঙ্খল কিশোর তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া কর্মকা-ে অনেকে ভয় পায়, সেজন্যে প্রতিবাদ করে না, বরং পাকড়াওয়ের জন্যে পুলিশ-নির্ভরতা প্রকাশ করে।

এমন যখন দুঃখজনক বাস্তবতা, তখন ফরিদগঞ্জে কিছু জনতাকে দেখা গেলো বাস্তবতার বিপরীতে অবস্থান নিতে। এ উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের গ্রামীণবাজার এলাকায় গত রোববার সকালে এক মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর জনৈক ছাত্রী স্থানীয় কিছু বখাটে দ্বারা উত্ত্যক্ত, শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের শিকার হলে তার ডাক-চিৎকারে জনতা এগিয়ে এসে তিন বখাটেকে ধরে ফেলে। এরা হলো : মোঃ ফয়সাল (২২), মোঃ মারুফ হোসেন (১৮) ও রবিন (১৮)। পরে এদেরকে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

আমাদের জানা মতে, সাম্প্রতিককালে খুব কম স্থানেই উত্ত্যক্তকারীদের পাকড়াও করতে স্থানীয় জনতা এগিয়ে এসেছে। বড় জোর উত্ত্যক্ত করার দৃশ্য দেখে আড়ালে আবডালে গিয়ে পুলিশকে ফোন করে জানায় এবং নিজের নাম গোপন রাখার জন্যে বলে, পরে না নিজে কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

অপরাধীরা কখনোই সংখ্যায় বেশি নয়, অনেক কম। তবে তারা সংঘবদ্ধ। আর ভালো মানুষরা সংখ্যায় বেশি, কিন্তু সংঘবদ্ধ নয়। এ সংঘবদ্ধ না থাকাটাই সমাজের জন্যে ক্ষতিকর। এটা অপরাধী তথা খারাপ মানুষদের জন্যে সহায়কও বটে। সমাজের ভালো মানুষগুলোকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সংঘবদ্ধ করার জন্যে পুলিশের পক্ষ থেকে চালুকৃত কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম সাম্প্রতিক সময়ে খুব চাঙ্গা নেই। এর ফলে এ সংগঠনের ব্যানারে ভালো মানুষগুলো সংঘবদ্ধ হতে পারছে না, বরং অপরাধীদের নানা কূটচালে দ্বিধা বিভক্ত বা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকছে। পরিণতিতে প্রতিবাদী চেতনার ঘাটতিতে ভুগছে এবং সাহসের অভাব অনুভব করছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ফরিদগঞ্জের পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের গ্রামীণবাজারে স্থানীয় জনতা মাদ্রাসা ছাত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া উত্ত্যক্তকারীদের পাকড়াও করার ক্ষেত্রে যে সাহস দেখিয়েছে, সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। অকপটে আমাদের বলতেই হয় ‘সাবাস জনতা’। আমরা মনে করি, পুলিশ যতক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ জনতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেশি বেশি সম্পৃক্ত করার নূতন-পুরাতন উপায়গুলোকে কাজে না লাগাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক হবে না তথা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়