বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২২, ০০:০০

রাতের আঁধারে কেনো এই দখল?
অনলাইন ডেস্ক

গতকাল দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে ব্যানার হেডিং হয়েছে ‘রাতের আঁধারে খাল দখল করে দোকান নির্মাণ’। এ সংবাদের সারাংশ হচ্ছে : গত শুক্র ও শনিবার রাতের আঁধারে চাঁদপুর পৌরসভাধীন বাবুরহাট বাজারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খাল দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে কোনো রকমের অনুমতি না নিয়েই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও জেলা পরিষদের নাম ভাঙ্গিয়ে বাবুরহাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির ক’জন সদস্য এ নির্মাণের উদ্যোক্তা সেজেছেন।

চাঁদপুরের ডাকাতিয়া ও মতলবের ধনাগোদা নদীর সাথে সংযোগ রক্ষাকারী খালটি চাঁদপুর পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম। রাতের আঁধারে সেই খালে দোকান নির্মাণে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপসহ কোনো বাধা না থাকায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদের সাথে সংযুক্ত ছবিতে দেখা যায়, একটি প্রবহমান খালকে কীভাবে পূর্ব থেকেই স্থাপনা নির্মাণ করে সঙ্কুচিত করা হয়েছে। উপর্যুপরি খালের বর্তমান শীর্ণ ধারার ওপরই সর্বশেষ দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। ছবিতে চোখ রাখলেই সহজে অনুধাবন করা যায়, দখলদারিত্ব আর কাকে বলে।

বাবুরহাট বাজার ও আশেপাশে জেলা পরিষদের জায়গাসহ সরকারি অন্যান্য জায়গায় অবৈধ দখলদারিত্বের বিষয়টি নূতন কোনো ঘটনা নয়। কোনো কোনো অবৈধ দখল নানা কূটকৌশলে বৈধতা না পেলেও স্থায়িত্ব পেয়েছে তথা টেকসই হয়েছে। এটা যে দখলদারদের জন্যে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রশ্রয় সেটা তো আর বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন পড়ে না। বাঁশের খুঁটি, আরসিসির সরু পিলারের ওপর কোনো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলে উচ্ছেদকারী কর্তৃপক্ষ সেটাতে বড় জোর অভিযান চালায়, আর পুরোপুরি পাকা স্থাপনা গড়ে উঠলে তাতে শ্যেন দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেও ভেঙ্গে ফেলার সাহস(!) সাধারণত দেখায় না।

আমাদের জানা মতে, ভূমি দস্যুতা বা অবৈধ দখলদারিত্বে সিন্ডিকেট গড়েই কাজ করা হয়। এই সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তির সাথে নানা উপায়ে সখ্যতা বা সুন্দর যোগাযোগ গড়ে তোলে। আর সেটা না পারলে ওই কর্তাব্যক্তির অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশেই তাদের কাজ করে থাকে। এক্ষেত্রে থানা ও গোয়েন্দা সংস্থা, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সচেতন মহলকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতেও উক্ত সিন্ডিকেট পারঙ্গমতা প্রদর্শন করে। এজন্যে এদের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত কেউ অভিযোগ করতে গেলেও পাত্তা পায় না, বরং আপস করার জন্যে কৌশলে পরামর্শ দেয়া হয়। পরামর্শ মোতাবেক কাজ না করলে তিরস্কার বা ভর্ৎসনাও হজম করতে হয়।

আমরা সহজভাবে যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে, জেলা পরিষদ, পৌরসভার পরিত্যক্ত বা অব্যবহৃত জায়গাসহ সরকরি যে কোনো জায়গা বৈধভাবে লীজ নেয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু এ লীজ বা ইজারা দেয়ার ক্ষেত্রে দখল বা নৈকট্যকে গুরুত্ব দেয়া হয়। এ বিষয়টি কম-বেশি বিতর্কিত। কেননা এর ফলে অঢেল ভূসম্পদের মালিকও লীজ পেয়ে যায়, আর ভূমিহীন লীজের আবেদন করেও হয় বঞ্চিত। বাবুরহাট বাজারে যারা বার বার অবৈধ দখলদারিত্ব চালায় তারা তো লীজের প্রচলিত ধারাতেই অভ্যস্ত বলে মনে হচ্ছে। তাই বলে কি প্রবহমান খালের মাঝখানে রাতের আঁধারে দোকান তুলেও কি পাবে লীজ?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়