প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৬
শুধু কি কালিমা পড়লেই কি ঈমানদার হয়?

মৌখিক মুসলমান সুদ, ঘুষ, হারাম সবই খায় কিন্তু একজন খাটি ঈমানদার কখনোই পাপকার্যে লিপ্ত হয় না। যদি কখনো হয়, তাহলে সে তওবা করে আবার আগের অবস্থানে চলে যায়।
কিন্তু নামে মুসলমান একবার পাপাকার্যে লিপ্ত হলে সেখান থেকে সহজে বের হতে পারে না। আপনার আশেপাশে তাকালেই দেখবেন যে, ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে পড়ে, বছরে ৬ মাস তাবলিগে চিল্লা দেয়, বাৎসরিক মাহফিল, দান সদকা সব কিছু করার পরেও, সুদ খায়, ঘুষ খায়, বোনের সম্পত্তি ঠিক মত বন্টন করে না। তাহলে এই নামাজ তাকে কী ফায়দা দিল?
এরাই আবার নামাজের সালাম ফিরানোর পরপরই দাড়িয়ে বলে উঠবে, সুন্নাতের পর বসবেন, কুরআন হাদীসের আলোচনা হবে। বহুত ফায়দা হবে। কিন্তু এই ফায়দা তাকেই পরিবর্তন করতে পারে নাই। কেন?
তাহলে খাটি ঈমানদার হওয়ার অর্থ কি? কিভাবে হওয়া যায়? পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, অর্থাৎ সফল হলো সে ব্যক্তি, যে তার নফসকে পবিত্র করল। আর ধ্বংস হলো সে ব্যক্তি, যে তাকে কলুষিত করল। (সূরা আশ শামস:৯-১০)
অন্যত্র বলেছেন: অর্থাৎ সফল হলো সে ব্যক্তি, যে আত্মশুদ্ধি করল এবং তার রবের নাম স্মরণ করল, অতঃপর নামাজ আদায় করল। (সূরা আলা: ১৪-১৫)
* এই আয়াতে খুবই স্পষ্ট যে, সফল হওয়া তথা এসব গুনাহ থেকে বাচতে হলে আগে নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। পরের আয়াতে আরো স্পষ্ট যে, নামাজ আদায়ের সাথে সাথে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে হবে, রবের জিকির করতে হবে। তাহলেই এসব গুণাহ থেকে হেফাজত থাকা সম্ভব।
স্বাভাবিকভাবে এখন প্রশ্ন আসবেই যে, তাহলে আত্মা পরিশুদ্ধ করার উপায় কি? নামাজও যদি আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে না পারে, তাহলে এর সঠিক উপায় কোনটি?
এর সঠিক উপায় হচ্ছে, আল্লাহর নেককার বান্দাদের সোহবত। ত্বরীকতের চর্চা করা। দুনিয়াতে মানুষের নফসের পরিশুদ্ধতার জন্য অনেকগুলো ত্বরীকা বা পথ এসেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাদেরিয়া ত্বরীকা।
হযরত গাউসে পাক আব্দুল কাদীর জিলানী রা. হচ্ছেন এই ত্বরীকার মহান ইমাম। তিনি আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশনায় এই মহান ত্বরীকত লাভ করেছেন।
সারা বিশ্বে তার এই ত্বরীকতের চর্চা হয়ে থাকে। এই ত্বরীকা থেকে আরো বহু ত্বরীকা বের হয়েছে। ওনার এই ত্বরীকতের ফায়েজ প্রাপ্ত হয়েই বিশ্বের আনাচে-কানাচে আল্লাহর নেক বান্দাগন ছুটে গেছেন ইসলাম প্রচার করতে।
বাংলাদেশে এসেছিলেন হযরত শাহ জালাল ইয়ামানী রহ. সহ অসংখ্য নবী প্রেমিকগণ। যারা সকলেই কোনো না কোনোভাবে কাদেরিয়া ত্বরীকার সাথে সম্পর্কিত।
গাউসে পাকের দেখানো পথেই সারাবিশ্বে ব্যাপকভাবে ইসলামের প্রচার ও প্রসার হয়েছে। ত্বরীকত পন্থীরা কখনোই সুদ, ঘুষ গ্রহণ করে না। পরের হক্ব নষ্ট করে না। কেউ যদি ত্বরীকত পন্থী দাবী করেও এসব কার্যক্রম করে বেড়ায় তাহলে বুঝে নিতে হবে, তার মধ্যে ত্বরীকার নূর প্রবেশ করেনি। তার আক্বীদা, আমল বা কোন একটা সমস্যার কারণে সে ত্বরীকতের নূর থেকে বঞ্চিত।
গাউসে পাকের জীবনী, তার অবদান সারাজীবন লিখলেও শেষ করা সম্ভব না। তিনি এত বেশি খেদমত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ওনার ফায়েজ ও বারাকাত আমাদের দান করুন।
সালামুন আলাইকা ইয়া গাউসুল আজম দস্তগীর।
আল-মাদাদ ইয়া গাউস মাআসসালাম








