প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭
হাজীগঞ্জে ভোক্তা অধিকারের অভিযানের আরো ধারাবাহিকতা চাই

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর কার্যালয় ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। রোববার (২ নভেম্বর ২০২৫) হাজীগঞ্জ বাজারে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযানে পচা-বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ও অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য তৈরির অপরাধে স্টার হোটেল এন্ড সুইটসে ২০ হাজার টাকা, নোংরা পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য তৈরির অপরাধে গাউছিয়া হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে ৫ হাজার টাকা, একই অপরাধে নার্গিস ফুড প্যাভিলিয়নে ৫ হাজার টাকা ও রাজমহল হোটেলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সময় মূল্য তালিকা না থাকায় ভিআইপি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৫ হাজার টাকা, কেকে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকায় ওয়েলকাম সুপার শপে ৫ হাজার টাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির জন্যে সংরক্ষণ করার অপরাধে নিউ বন্ধু ফার্মেসিতে ১০ হাজার টাকাসহ সাত প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, অভিযুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠান পুনরায় এই ধরনের অনিয়ম থেকে বিরত থাকবে বলে অঙ্গীকার করে। এছাড়া নিয়মিত মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে সতর্ক করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। হাজীগঞ্জে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ৯ অক্টোবর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ও পচা-বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরিতে দুটি হোটেল ও একটি বেকারীকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ অভিযানের ২৩ দিনের মাথায় ২ নভেম্বর ২০২৫ (রোববার) হাজীগঞ্জ বাজারে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে চার হোটেল, এক বেকারী, এক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এক ফার্মেসিকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। এক মাসের কম সময়ে ভোক্তা অধিকারের এমন অভিযান ভোক্তাদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। অতীতে পরপর এতোটা কাছাকাছি সময়ে এরূপ সাঁড়াশি অভিযান দেখা যায় নি। অবস্থা ছিলো এমন, ক’জনকে জরিমানা করে ভয় দেখিয়ে ম্যানেজড্ হয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্যে অভিযান না চালানো। এতে অনিয়ম বন্ধ হয় নি। আমাদের পর্যবেক্ষণে হাজীগঞ্জ বাজারের জনাকীর্ণ পরিবেশে ভোক্তাদের অধিকার হরণে কিংবা প্রতারিতকরণে স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ী সর্বদা তৎপর থাকে। এদের প্রতিহত করতে স্থানীয় প্রশাসনের জনবল সঙ্কটসহ আরো কিছু সীমাবদ্ধতায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয় না। এতে অসাধু ওই ব্যবসায়ীরা আশকারা বা প্রশ্রয় অনুভব করে এবং ভোক্তা ঠকানোর অপতৎপরতা অব্যাহত রাখে। সেজন্যে অতীতে যে কোনো সাঁড়াশি অভিযানের পর সাধারণ্যে এমন অভিযানের ধারাবাহিকতা অনুভূত হয়। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা দালাল ও প্রভাবশালীদের মাধ্যমে সে অভিযান ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করার হীন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে। এবার দেখা যাচ্ছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের নূতন কর্মকর্তাকে এখনও ম্যানেজ করতে পারে নি। এই না পারাটা ভোক্তাদের জন্যে ইতিবাচক। আমরা আশা করি, হাজীগঞ্জ বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাঁড়াশি অভিযান বারবার চলবে এবং ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার কাজটি টেকসই হবে। এ ব্যাপারে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের লোকজন ও স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের তৎপরতা, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে বাজার পরিদর্শনের বিষয়টিও সহায়ক হওয়া বাঞ্ছনীয়।




