প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৩
সাংস্কৃতিক উৎসবে সপ্তসুর সংগীত একাডেমির মনোজ্ঞ পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শকরা

চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা বিএনপির ১৬ দিনব্যাপী জমজমাট ‘মেইড ইন চাঁদপুর কালচারাল ফেস্টিভ্যাল’-এ মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে হাজির হয়েছিলো চাঁদপুরের অন্যতম প্রসিদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন সপ্তসুর সংগীত একাডেমি। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর ২০২৫) উৎসবের ১৫তম দিনে সপ্তসুরের শিল্পীরা তাদের পরিবেশনা দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে নেয়।
সন্ধ্যা নামতেই জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে শুরু হয় সপ্তসুরের সাংস্কৃতিক পর্ব। অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, কোরিওগ্রাফি ও সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রূপালী চম্পক। তাঁর নিপুণ দিকনির্দেশনায় সপ্তসুরের শিল্পীরা একের পর এক জমকালো পরিবেশনা উপহার দেন। শিল্পীরা রবীন্দ্রসংগীত, লোকসংগীত, আধুনিক গান ও চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয় একটি মনোমুগ্ধকর রবীন্দ্র নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর শিল্পীরা মঞ্চে পরিবেশন করেন একটি প্রাণবন্ত দলীয় লোকসংগীত। এর রেশ কাটতে না কাটতেই শিল্পীরা দর্শকদের উপহার দেন জলের গান ব্যান্ডের জনপ্রিয় গান ‘চান্দের আলো লাগে ভাল’। তাদের গায়কি এবং পরিবেশনা দর্শকদের মাঝে নতুন মাত্রা এনে দেয়। এরপর মঞ্চে পরিবেশিত হয় লোকসংগীতের আরেক ধারার গান হাসন রাজার গান। গানটি দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন শিল্পী মানসী চক্রবর্তী ও তৃষ্ণা বণিক। তাদের সুরেলা পরিবেশনা শ্রোতাদের আধ্যাত্মিক জগতে নিয়ে যায়। এ গানশেষে মঞ্চে আসেন নৃত্যশিল্পীরা। তারা পরিবেশন করে চমৎকার দলীয় নৃত্য (ঝুমুর ঝুমুর নূপুর)। নূপুরের ঝংকারে দর্শক সারিতে নেমে আসে অন্যরকম আবেশ।
এরপরের পরিবেশনায় ‘ফুল ফুটেছে গন্ধে সারামন’ গানটি পরিবেশন করে মেঘলা, অর্পিতা ও সহশিল্পীবৃন্দ। তাদের সুরেলা কণ্ঠ ও উপস্থাপনা দর্শক-শ্রোতাদের প্রশংসা কুড়ায়।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো ‘সুজন সখী’ সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘সব সখিরে পার করিতে’। এই কালজয়ী সংগীতটি দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন সংগঠনের জনপ্রিয় শিল্পী শরীফ চৌধুরী ও তৃষা পোদ্দার তৃনা।
আধুনিক গানের তালে দর্শকদের মাতিয়ে তুলতে মঞ্চে আসে দুই অর্পিতা। তারা জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী আইয়ূব বাচ্চুর একটি গান পরিবেশন করে, যা সকল দর্শককে আনন্দ দেয়। এরপর একে একে মঞ্চে আসে নৃত্যের আরও ক’টি পরিবেশনা। দু সহোদরা বোন ইচ্ছা ও মেঘ তাদের চমৎকার নৃত্য পরিবেশন করে সকলের মন জয় করে নেয়। তাদের পর মঞ্চে আরও একটি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নন্দিনী, কথা, অমি ও সহশিল্পীবৃন্দ।
সবশেষে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয় একটি জমকালো কোরিওগ্রাফি পরিবেশনার মাধ্যমে। এতে অংশ নেন শরীফ চৌধুরী ও সহশিল্পীবৃন্দ।
সপ্তসুর সংগীত একাডেমির এই মনোজ্ঞ আয়োজনের সামগ্রিক পরিকল্পনা, কোরিওগ্রাফি ও সংগীত পরিচালনা করেছেন সপ্তসুরের অধ্যক্ষ রূপালী চম্পক। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন সাংস্কৃতিক সংগঠক শরীফ চৌধুরী এবং নৃত্য পরিচালনা করেন অর্পণা দাস সম্পা।
১৬ দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক উৎসবে চাঁদপুরের প্রায় অর্ধ শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। সপ্তসুর সংগীত একাডেমির পরিবেশনা এই উৎসবকে অনেক প্রাণবন্ত করে তোলে। গুণীজনদের নিবিড় তত্ত্বাবধান এবং উদীয়মান শিল্পীদের প্রতিভার ঝলকানি, চাঁদপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ১৬ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় সংগীত পরিবেশন করছে সপ্তসুর সংগীত একাডেমির শিল্পীরা।







