সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৫

সেচ প্রকল্পটিতে খাল সংস্কার ও দখলমুক্ত করার কাজ চালিয়ে যেতেই হবে-

অনলাইন ডেস্ক
সেচ প্রকল্পটিতে খাল সংস্কার ও দখলমুক্ত  করার কাজ চালিয়ে যেতেই হবে-

অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে ছেংগারচর বাজার থেকে হানিরপাড় পর্যন্ত (ডি-৩ খাল) মাঝে বয়ে চলা খাল। খালটি খননের উদ্যোগ না নেয়ায় এবং স্থায়ী সমাধান না মেলায় সামান্য বৃষ্টিতেই কৃষকের মাঠে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। সম্প্রতি ‘মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি নিষ্কাশন খাল যেনো ময়লার ভাগাড়’ শিরোনামে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে এ খালটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ। পাউবো কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন পরে খালটির প্রাণ ফেরাতে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ শুরু করে। যার অংশ হিসেবে শুরু হয়েছে খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান। শনিবার (১৬ আগস্ট ২০২৫) মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ডি-৩ (ছেংগারচর বাজার থেকে হানিরপাড় অংশ) সংস্কার কাজের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির পানি জমে তলিয়ে যায় কৃষি জমি ও মাছের খামার। তবে বর্তমান উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। খাল সংস্কারের উদ্যোগে খুশি এলাকার সবাই। সচেতন মহল বলেছেন, খালটি সংস্কার করলেই হবে না। এটি দখলমুক্ত করে খনন করতে হবে। পুনরায় যাতে কেউ স্বেচ্ছাচারিতার মতো দখল ও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করতে না পারে সে পদক্ষেপ নিতে হবে। মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম শাহেদ বলেছেন, ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে খালটিতে। দীর্ঘদিন ধরে খননের অভাব আর নাব্য সংকটের পাশাপাশি প্রশস্ততা কমে প্রবাহিত হতে পারছে না। বৃষ্টি হলেই পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের ব্যবস্থা করেছি। খালটি খননের জন্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, আমি এ উপজেলায় যোগদান করার পর কৃষকের একটি অভিযোগ ছিল খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে না পারায় বৃষ্টির পানিতে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমি সরজমিনে পরিশর্দন করে জলাবদ্ধতা দেখতে পাই। এ বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলি। সেমতে খাল সংস্কার কাজ উদ্বোধন হলো। আমরা এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই এবং আমরা মনে করি এ খালগুলোকে যদি আগের মতো প্রবহমান করা যায় তাহলে সেচ প্রকল্পের পরিবেশ একটি ইতিবাচক দিক আমাদের জন্য বয়ে নিয়ে আসবে। কৃষকরা জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

আমরা মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে খাল সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে এ উদ্যোগটি যেনো নিতান্তই সাময়িক, লোকদেখানো ও মিডিয়া কাভারেজ নেয়ার মতো কিছু না হয়, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। মোদ্দা কথা, যতক্ষণ প্রয়োজন, ততক্ষণ এই সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। একই সাথে খাল দখলমুক্ত করার কঠোর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় খাল দখলমুক্ত করার কাজটি যেভাবে করা যাবে, ভবিষ্যতে দলীয় সরকারের সময়ে সেভাবে করা যাবে না। সে কথাটি মতলব উত্তর উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে মাথায় ভালোভাবে রাখতে হবে। এই সেচ প্রকল্পের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বর্তমান ইউএনও মহোদয়কে অনেক আন্তরিক মনে হচ্ছে, যেটা অতীতে অন্য ইউএনওদের ক্ষেত্রে এতোটা দেখা যায় নি। এটাকে অনেক বেশি সহায়ক হিসেবে ভাবতে হবে পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে। আমরা চাই এই সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতার টেকসই সমাধান। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সর্বোচ্চ ও আন্তরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। খাল দখলদারদের উচ্ছেদে সবার ঐকমত্যের অনিবার্যতাকে গোষ্ঠীস্বার্থ ও ভোটের স্বার্থের কাছে জলাঞ্জলি দেয়া যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়