প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৫
মৎস্য নিধনকারী শনাক্তে পুলিশের সাফল্য চাই

কচুয়ায় রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৮ জুন ২০২৫) দিবাগত রাতে উপজেলার গোহট উত্তর ইউনিয়নের হারিছাইল গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার আমিন হোসেনের পুকুরে এ ঘটনা ঘটে। বিষ প্রয়োগের ফলে পুকুরে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ মরে ভেসে উঠে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য চাষী আমিন হোসেন বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলন করে পুকুরে মাছ চাষ করে আসছেন। শনিবার দিবাগত রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা পুকুরে গ্যাস ট্যাবলেট অথবা কীটনাশক প্রয়োগ করে। এতে পুকুরের পাঙ্গাস, রুই, তেলাপিয়া, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মাছ মরে ভেসে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান ও মহিব উল্লাহ জানান, মৎস্য চাষী আমিন হোসেন একজন উদ্যোক্তা। গত শনিবার দিবাগত রাতের আঁধারে দুষ্কৃতকারীদের বিষ প্রয়োগে ২০ থকে ২৫ লাখ টাকার মাছ মরে ভেসে উঠে। তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার জন্যে আমরা এলাকাবাসী দাবি জানাই। ক্ষতিগ্রস্ত আমিন হোসেন জানান, আমি এনজিও ও বিভিন্ন লোকজন থেকে ঋণ করে মাছ চাষ করে আসছি। শনিবার দিবাগত রাতে পারিবারিক শত্রুতার জেরে বিষ প্রয়োগে ২৫ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলা হয়েছে আমার। তিনি আরো জানান, আমি বাড়ির পাশে মামাতো বোনকে বিয়ে করি। আমার ঘরে ২ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমি প্রবাসে থাকাকালীন আমার অনেক টাকা আত্মসাৎ করে। ওই টাকাগুলো চাওয়া মাত্রই আমার স্ত্রীকে দিয়ে শালা মাসুদ রানা, শ্বশুর আব্দুর রহিম ও শালার স্ত্রী লাকী আক্তার আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করে। এক পর্যায়ে কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রী আমাকে ডিভোর্স দেয়। এরপর থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষয়ক্ষতি করবে বলে হুমকি ধমকি দেয়া শুরু করে তারা। এই ঘটনায় কচুয়া থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগী আমিন হোসেন জানান। কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমিন হোসেনের মতো একজন বিদেশফেরত উদ্যোক্তার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির সাথে দ্বন্দ্বের কারণে ২৫ লাখ টাকার মাছ নিধনের যে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেলো, সেটা এক কথায় চরম দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। আমিন হোসেন উল্লেখিত দ্বন্দ্বের কারণে, না অন্য কারো সাথে শত্রুতাবশত এমন ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন--সেটা পুলিশি তদন্তে বের হয়ে আসবে। কিন্তু পুলিশ অনেক ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হলেও বিষ প্রয়োগে পুকুর/দিঘির মাছ নিধনকারীদের শনাক্তে সারাদেশের কোথায় কতোটুকু সফল সেটা জানতে না পারলেও চাঁদপুর জেলায় যে সফল নয় সেটা জানা আছে। এই ব্যর্থতা আমরা মেনে নিতে নারাজ। আমরা এই ব্যর্থতা নিরসনে বর্তমান পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ ও দিকনির্দেশনা প্রত্যাশা করছি। আমাদের বিশ্বাস, এই প্রত্যাশার অনুকূলে পুলিশ সুপার কাজ করলে মৎস্য নিধনকারী শনাক্ত করা সম্ভব। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে আমিন হোসেনের মতো অনেক উদ্যোক্তা হতাশায় মুষড়ে পড়বে, যেটা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আমাদের দেশে একজনের সাথে আরেকজনের শত্রুতাহেতু প্রকাশ্য অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাই ঘটে। কিন্তু অপ্রকাশ্য যে অঘটনটি ঘটে, সেটা হচ্ছে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন ও ধারালো কিছু দিয়ে বাড়ন্ত গাছ নিধন। অথচ শনাক্তের অভাবে এমন শত্রুতা উদ্ধারকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে মাছ ও গাছ নিধনকারীদের শনাক্ত করা কঠিন কাজ নয়।