প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩০
গ্রামীণ পর্যায়ে এমন স্মরণসভা প্রশংসনীয়

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন খাজুরিয়া ইয়ুথ ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সমাজসেবক তাফাজ্জল হোসেনের মৃত্যুতে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল ২০২৫) বাদ আসর গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন খাজুরিয়া ইয়ুথ ক্লাব প্রাঙ্গণে এ সভা আয়োজন করা হয়। ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ সফিকুর রহমান মিজির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান হোসেনের সঞ্চালনায় মরহুমের স্মৃতিচারণ করেন অনেকে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে বক্তারা বলেন, তাফাজ্জল হোসেন ছিলেন একজন আদর্শবান শিক্ষক, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক এবং নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবক। তিনি দীর্ঘদিন খাজুরিয়া ইয়ুথ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সততা, জবাবদিহিতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালন করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্যে ছিলো অনন্য। ছাত্রদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে একজন শ্রদ্ধাভাজন মানুষে পরিণত করে। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান প্রশংসনীয়। তিনি চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকায় দীর্ঘদিন ধরে সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর লেখা ছিলো তথ্যনির্ভর, বস্তুনিষ্ঠ ও জনমুখী। তিনি সবসময় সাধারণ মানুষের সমস্যা, দুর্ভোগ ও সম্ভাবনা তুলে ধরতেন, যা জনমত গঠনে ভূমিকা রাখতো। এছাড়াও তিনি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
তাফাজ্জল হোসেন দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সবশেষ গত ২৮ মার্চ ২০২৫ সকালে তিনি রাজধানীর জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। শোকসভা শেষে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং মোনাজাত করা হয়। স্মরণসভায় অংশ নেন স্থানীয় শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সর্বস্তরের মানুষ।
তাফাজ্জল হোসেন উপজেলাব্যাপী অনেক বেশি বিখ্যাত মানুষ ছিলেন না। তবে নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি তাঁর নিজ এলাকায় সাধারণ মানুষের যে শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন, তেমনটি গ্রামীণ পর্যায়ে অরাজনৈতিক কোনো ব্যক্তি খুব কমই অর্জন করেন। তাফাজ্জল হোসেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেক বেশি রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহনীয় দুঃখ-কষ্টে ভুগে দুনিয়া থেকে অকাল বিদায় নিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করবেন, দুনিয়ার ভালো কাজের মূল্যায়নস্বরূপ পরকালীন জিন্দেগীকে সুখময় করবেন তথা জান্নাত দান করবেন। তবে তাঁর জন্যে তাঁর গুণমুগ্ধ এলাকাবাসী স্মরণসভা, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে যে বদান্যতা দেখিয়েছে, সেটি চলমান যান্ত্রিক যুগে গ্রামীণ পর্যায়ে শুধু নয়, শহরেও বিরল। অবশ্যই এ আয়োজন প্রশংসনীয়। আমরা উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।