বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১০:২০

যেখানে গেলে অনেক রোগীর পকেট কাটা হয়!

অনলাইন ডেস্ক
যেখানে গেলে অনেক রোগীর পকেট কাটা হয়!

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, যেখানে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে রোগীরা অতিষ্ঠ--এমন একটি সংবাদ গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ব্যানার হেডিংয়ে ছাপা হয়েছে। সংবাদটিতে মো. নাছির উদ্দিন লিখেছেন, সরকারি হাসপাতালের আশপাশে নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে কোনো ধরনের ক্লিনিক, প্যাথলজি বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তোলা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন পরিপত্র থাকলেও বাস্তবে তা কোথাও মানা হচ্ছে না। এই চিত্র কচুয়া উপজেলায়ও বিদ্যমান। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ব্যাঙের ছাতার মতো প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সেবা দেয়ার জন্যে থাকতে হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও যন্ত্রপাতি। নিয়ম আছে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চালুর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হয়। এজন্যে বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনে প্রতিষ্ঠান খুলতে হয় । কিন্তু এগুলোতে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করা হয়নি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে চলছে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলোতে নেই রোগ নির্ণয়ের মানসম্মত যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটার, পরীক্ষাগার, প্রশিক্ষিত নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ান। নাক, কান, গলা ও সার্জনসহ বিভিন্ন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো থাকলেও নিয়মিত রোগী দেখতে বসেন না তারা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দিয়ে চলছে বিভিন্ন চিকিৎসা।

সরজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, পরিপত্র মোতাবেক সরকারি হাসপাতালের এক কিলোমিটার বিশেষ ক্ষেত্রে আধা কিলোমিটারের মধ্যে প্রাইভেট কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরি করা যাবে না। কিন্তু কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেইন গেইটের সামনে গড়ে উঠেছে ৬টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলোতে স্থায়ীভাবে কোনো চিকিৎসক নেই। কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার দিয়ে এখানে চলে সব চিকিৎসা। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, এ সকল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রয়েছে দালাল সিন্ডিকেট। হাসপাতালের সামনে রোগী আসলেই ওই দালাল সিন্ডিকেট রোগীর পিছু নেয়। জরুরি বিভাগ থেকে রোগী বের হওয়া মাত্রই তাদের টেনেহিঁচড়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

সংবাদটিতে নাছির উদ্দিন এমন কিছু রোগীর উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যাতে মনে হয়েছে, দালালরা রোগীদের ফুসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে নিয়ে যেন পকেট কাটার কাজটিই করে। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কোনো রোগীকে বাইরে থেকে ১টি টেস্ট করিয়ে আনতে বললে দালাল ২টি, আর ২টি টেস্ট করিয়ে আনতে বললে দালাল ৬টি করিয়ে ফেলে, যেগুলোর বিল পরিশোধ করতে গিয়ে রোগী বা তার এটেনডেন্টের পকেট খালি হয়ে যায়। তার বিপরীতে চিকিৎসক ও দালাল কমিশন পেয়ে পকেট ভারী করে প্রতিদিন। হতাশাজনক বিষয় হলো, এগুলো দেখার কেউ নেই। স্থানীয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থাকলেও প্রদর্শিত হয় না তাদের কর্তৃত্ব।

শুধু কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নয়, প্রায় সকল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কিংবা নিকটবর্তী স্থানে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অস্তিত্ব রয়েছে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের গেটের সামনে ও আশেপাশে তো রয়েছে বহু ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারের পরিপত্র অনুয়ায়ী এগুলোর অবস্থানগত বৈধতা না থাকলেও অধিকাংশেরই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তথা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে অনুমোদন নেয়া থাকে। এতেই সাধারণ্যে জাগে বিস্ময় এবং নানা মুখরোচক কথা ভেসে বেড়ায়। কথা হলো, সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে কিংবা স্বল্প খরচে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে চলমান বাণিজ্য বন্ধে সাঁড়াশি ও ধারাবাহিক অভিযান চালানো কি খুবই কষ্টকর ও ব্যয়বহুল বিষয়?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়