বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৪০

মোগল স্থাপত্যকর্ম সহ সকল প্রত্ন সম্পদ সংরক্ষণ করুন

অনলাইন ডেস্ক
মোগল স্থাপত্যকর্ম সহ সকল প্রত্ন সম্পদ সংরক্ষণ করুন

রমজান উপলক্ষে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে প্রাচীন মসজিদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে কচুয়া থেকে মো. নাছির উদ্দিন উজানীর বখতিয়ার খাঁ মসজিদ, চাঁদপুর সদর থেকে মো. মিজানুর রহমান বাখরপুর মসজিদ এবং হাজীগঞ্জ থেকে কামরুজ্জামান টুটুল অলিপুরের আলমগীরি মসজিদ ও শাহ সুজা মসজিদ নিয়ে লিখেছেন। এই মসজিদগুলো মোগল স্থাপত্য রীতিতে মোগল আমল (১৫২৬-১৮৫৭)-এর বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়েছে। মোগল স্থাপত্য তো হচ্ছে ইসলামী, পারস্য ও ভারতীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণে এমন এক স্থাপত্য, যে স্থাপত্য রীতিতে গড়ে ওঠা স্থাপনা সৌন্দর্যমণ্ডিত ও টেকসই না হয়ে পারে না। মোগল স্থাপত্যের কালজয়ী ও বিশ্বখ্যাত স্থাপনা ‘তাজমহল’ (নির্মাণ সময় : ১৬৩২-১৬৫৩)কে এই পৃথিবীর কে না চেনে? যেটি সবসময়ের জন্যেই বিস্ময়, তবে একসময় পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম ছিলো।

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, কচুয়া ও চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মোগল স্থাপত্যকর্মের নিদর্শন হিসেবে মসজিদগুলোই প্রধানত বিদ্যমান, যার ক’টি নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে লিখেছেন। বর্তমান স্থাপত্য নকশা বা রীতির সাথে তুলনা করতে গেলে মোগল স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত প্রতিটি মসজিদকে বিস্ময়ই মনে হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই বিস্ময়কে সংরক্ষণে স্থানীয় প্রশাসন, বিশেষ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কোনো তৎপরতা নেই।

হাজীগঞ্জের অলিপুরে দু দশক বা দু যুগ আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ৩২৩ বছর পূর্বে ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে মোগল আমলে নির্মিত আলমগীরি মসজিদ সংরক্ষণ করতে এসে এর শৈল্পিক সৌন্দর্যকে ব্যাহত করে গোঁজামিলে কাজ সম্পন্ন করে সেই যে চলে যায়, আর সেখানে আসেনি। আর এ রকম অন্য সকল মসজিদ সংরক্ষণে তো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কোনো তৎপরতাই নেই। ফলে মসজিদ কমিটি কিংবা সামর্থ্যবান আগ্রহী মুসল্লিরা নিজেদের মতো করে মসজিদ সংরক্ষণ করতে গিয়ে মোগল স্থাপত্য রীতির সৌন্দর্যকে রক্ষা করতে পারে নি, যেখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরই পুরোপুরি পারে না।

প্রাচীন যে কোনো বিষয়ই প্রত্ন। এগুলোর মধ্যে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও প্রসিদ্ধিসম্পন্ন, সেগুলোকে বলা হয় প্রত্ন সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা, সংরক্ষণ করা প্রধানত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরেরই দায়িত্ব। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতা কিংবা জনবল সঙ্কটের কথা বলে এই অধিদপ্তর প্রত্ন সম্পদ রক্ষার্থে সময়োচিত ও কার্যকর তেমন ভূমিকা রাখতে পারে না কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পায় না। আমরা চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও এ জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনকে মোগল স্থাপত্যের স্মারক বিভিন্ন মসজিদ, হিন্দু জমিদারদের বানানো কিছু মঠ-মন্দির-বাড়ি, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কিছু স্থাপনা সহ নিজ নিজ এলাকার অন্যান্য প্রত্ন সম্পদের তালিকা তৈরি করে সেগুলো সংরক্ষণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে সাড়া পাওয়া না গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুধী-সজ্জন, বিত্তবান-চিত্তবান লোকজনের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে এবং নিজ প্রশাসনের তহবিল দিয়ে প্রত্ন সম্পদ রক্ষার্থে কিছু করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়