প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৬
একটি দিবসের আনুষ্ঠানিকতাতেই কি সিভিল ডিফেন্স হয়?

জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, ভূমিকম্পে করণীয় ও মহড়া এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫) সকালে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহড়াগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এ রকম মহড়া বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়েও অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাঁদপুর শহরে চাঁদপুর উত্তর, দক্ষিণ ও নদী ফায়ার স্টেশন সদস্যরা দুর্যোগের বেশ কিছু ইভেন্ট সচেতনতার জন্যে তুলে ধরেন। এসব ইভেন্ট জনসাধারণ সাদরে গ্রহণ করে।
কথা হলো, জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসে পূর্বে কোনোরূপ প্রচারণা ছাড়াই দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিষয়ক মহড়াগুলো প্রদর্শন করায় কোথাও মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিলো না। মহড়াগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবেই আয়োজন করেছে। ভাবখানা ছিলো এমন : কেউ দেখুক আর না দেখুক, চাকুরির স্বার্থে আমাদের মহড়াগুলো আমরা প্রদর্শন করলাম। অথচ এমন মহড়া একটি জেলা বা উপজেলা সদরের একটি বড়ো মাঠে একটি বিশেষ দিবসে আয়োজন করাই যথেষ্ট নয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে, পাড়া-মহল্লার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ স্বেচ্ছাসেবকমূলক কাজে নিয়োজিত লোকজনকে জানান দিতে এসব মহড়া প্রায়শই হওয়া উচিত। কিন্তু এই ঔচিত্যবোধ কি লালন করে দেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ?
আমজনতার কমপক্ষে পঁচানব্বই শতাংশই মনে করে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের কাজই হলো, কোথাও আগুন লাগলে সেটি নিভানো। এমন জানার কারণ হচ্ছে, এ বিভাগটি তাদের স্টেশনের সামনে তাদের কার্যাবলি সম্বলিত সিটিজেন চার্টার প্রকাশ্যে তথা সাধারণ মানুষ সহজে পড়তে পারে এমন স্থানে সাঁটিয়ে রাখে না, এমনকি আদৌ রাখে না। সুধী-সচেতন মানুষদের বড়ো একটি অংশ এ ব্যাপারে সরবও নয়। ফলে এ বিভাগটি আগুন নেভানোর কাজ ছাড়া সিভিল ডিফেন্স সংক্রান্ত কাজ তেমন করে না। সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হলে তিনি তাঁর কর্ম এলাকায় কিছু করেন, আর তার বিপরীত হলে প্রাপ্ত বরাদ্দ নয়ছয় করেন।
সিভিল ডিফেন্স আসলে কী? সিভিল ডিফেন্স হচ্ছে, নাগরিক সুরক্ষা। দেশের সাধারণ নাগরিকদের উদ্যোগে মানব সৃষ্ট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জানমাল রক্ষার প্রচেষ্টা। এতে জরুরি ব্যবস্থাপনার নীতিগুলো ব্যবহার করা হয়। যেমন : প্রতিরোধ, প্রশমন, প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া, জরুরি স্থানান্তর এবং পুনরুদ্ধার। এ ব্যাপারে নাগরিকদের জানান দেয়া ও নাগরিক-সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক কাজ করাই হচ্ছে সরকারি সিভিল ডিফেন্স সংস্থার কাজ। কিন্তু সেটি কি তারা করে সেইভাবে? নাকি একটি বিশেষ দিবসের আনুষ্ঠানিকতাতেই এসব কাজ শেষ হয়ে যায়? এই প্রশ্নের জবাব স্থানীয়ভাবে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কিংবা সচেতন যে কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিকট খোঁজা উচিত। শেষ কথা হলো একটাই : খোঁজবেন তো?