প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৮
৩৩ বছর পর হত্যা মামলার আসামি বাবার বাড়িতে ফেরা, তিন দিনের মাথায় আগুনে পুড়ে রহস্যজনক মৃত্যু!
"হত্যা মামলার আসামি বাবা, ভয়ানক পরিণতি ছেলের—দুর্ঘটনা নাকি প্রতিশোধ?"

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার খালপাড় দুর্গাপুর গ্রামে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি পুড়ে মারা গেছেন। ৩৩ বছর আগে তার পিতা হত্যা মামলার আসামি হয়ে পরিবারসহ গ্রাম ছাড়েন। দীর্ঘদিন পর সাইফুল ফিরে আসেন সেই বাড়িতে, কিন্তু মাত্র তিন দিনের মাথায় এক রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে তার মৃত্যু হয়। এটি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
|আরো খবর
অভিশপ্ত অতীত: বাবার অপরাধের শিকড়, ছেলের অকাল মৃত্যু?
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল ইসলামের পিতা তিন দশক আগে এক হত্যাকাণ্ডের মামলায় আসামি হন। এরপর পরিবার ঢাকায় চলে যায়। দীর্ঘদিন পর সাইফুল আবার ফিরে আসেন, কিন্তু কেন? কেউ কি তার ফেরাকে মেনে নিতে পারেনি?
প্রতিবেশী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, "সাইফুল মাত্র তিন দিন হলো এখানে এসেছে। হঠাৎ করে এভাবে আগুনে পুড়ে মারা গেল, বিষয়টি খুবই সন্দেহজনক।"
দরজা বন্ধ, আগুন থেকে বাঁচার সুযোগ পেলেন না সাইফুল
দরজা বন্ধ, আগুন থেকে বাঁচার সুযোগ পেলেন না সাইফুল
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে হঠাৎ সাইফুলের ঘরে আগুন লাগে। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখে, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু তিনি বের হতে পারেননি।
প্রতিবেশী বকুল বেগম বলেন, "আগুন লাগার পর দরজা বন্ধ দেখেছি। আমরা খোলার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, পরে দেখি ভেতরে সাইফুলের পুড়ে যাওয়া মরদেহ।"
নিহত নাকি পরিকল্পিত হত্যা? তদন্ত শুরু
এলাকায় এখন নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ বলছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা, আবার কেউ মনে করছেন, হয়তো সাইফুলকে হত্যা করে প্রমাণ লোপাট করতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, "সাইফুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে। এটি হত্যাকাণ্ড কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।"
৩৩ বছরের পুরোনো ঘটনার রেশ, নাকি ভাগ্যের নির্মম পরিণতি?
এক সময় যার পরিবার গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেই পরিবারের এক সদস্য ফিরে এসেছিলেন পুরোনো ঠিকানায়। কিন্তু মাত্র তিন দিনের মাথায় আগুনে পুড়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হলো তার। এটি কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি ৩৩ বছর আগের কোনো অজানা প্রতিশোধের শিকার হলেন সাইফুল? এলাকায় চাপা উত্তেজনা, উত্তরের অপেক্ষায় পুরো গ্রাম।
ডিসিকে/এমজেডএইচ