প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৬
ইফা'র এই আহ্বান কি রক্ষা হয়?

পবিত্র রমজান মাসে খতম তারাবিহ পড়ার সময় সারাদেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে দেশের প্রায় সব মসজিদে খতমে তারাবিহ নামাজে পবিত্র কোরআনের নির্দিষ্ট পরিমাণ পারা তিলাওয়াত করার রেওয়াজ চালু আছে। তবে কোনো কোনো মসজিদে এর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এতে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী কর্মজীবী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে পবিত্র কোরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে একটি অতৃপ্তি ও মানসিক চাপ অনুভূত হয়। পবিত্র কোরআন খতমের পূর্ণ সওয়াব থেকেও তারা বঞ্চিত হন। এমন পরিস্থিতি নিরসনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সারাদেশের সব মসজিদের সম্মানিত খতিব, ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে, দেশের সব মসজিদে যেন খতমে তারাবিহ নামাজে প্রথম ছয়দিনে দেড় পারা করে ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াত করা হয় এবং পবিত্র শবে কদরে কোরআন খতম করা হয়।
কথা হলো, ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)-এর আহ্বান কি সকল মসজিদ কর্তৃপক্ষ মানে? অরাজনৈতিক ও জনকল্যাণধর্মী কিছু বিষয়ে প্রচারে মসজিদের খতিব/ ইমামদেরকে স্থানীয় প্রশাসন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রায়শ অনুরোধ জানায়। কিন্তু অধিকাংশ ইমাম/খতিব এই অনুরোধ রক্ষার কাজটি করতে জড়তায় ভোগেন, ইতস্তত করেন। কেউ কেউ এমন আহ্বান/অনুরোধ রক্ষাকে বাড়তি বা বিরক্তিকর কাজ হিসেবেও মনে করেন। এমন বাস্তবতার আলোকে সারাদেশের সকল মসজিদে খতমে তারাবিহ পড়ার সময় একই পদ্ধতি অনুসরণের ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্বান কি পুরোপুরি রক্ষা হয়--এমন প্রশ্ন তোলা স্বাভাবিক। কেননা অতীতে এমন আহ্বান উপেক্ষা হতে দেখা গেছে বারবার। এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মনিটরিং প্রয়োজন। একটি জেলায় কর্মরত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ একদিন বিভিন্ন মসজিদে তারাবিহ নামাজ পড়ে কোরআনের কতোটুকু অংশ পড়া হলো সেটি জানাবেন হেড অফিসকে। তারপর হেড অফিসের নির্দেশনা মতে পরদিন আরেক জেলায় ইতোমধ্যে অন্য জেলায় পঠিত কোরআনের ঠিক পরবর্তী অংশ থেকে তারাবিহর নামাজ পড়া হচ্ছে কিনা সেটি বিভিন্ন মসজিদে তারাবিহ্ নামাজ জামাতে পড়ে মিলিয়ে দেখবেন ইফা'র কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। এমন মনিটরিং যদি হয়, তাহলে তারাবিহ্ নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ হয় কিনা সেটি নিশ্চিত হবে। এমন মনিটরিং করার কর্মসূচি হাতে নেয়া ছাড়া ইফা'র পক্ষ থেকে তারাবিহ্ নামাজসহ অন্যান্য বিষয়ে আহ্বান জানানোটা হবে নামকাওয়াস্তে, যেটি কি আদৌ সমীচীন?