প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৫
তবুও বিচার চাই

চাঁদপুর শহরে স্মরণকালের অন্যতম মর্মান্তিক ঘটনা (স্বামী-স্ত্রীর যুগল মরণ) ঘটেছে গত সোমবার দিবাগত রাতে। এই শহরের পালপাড়ার শাহজাহান ভিলা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকার জিন্নাত আলীর ছেলে সবুজ আহমেদ (৪০) ও তার স্ত্রী শিউলী আক্তার (৩৫)। শিউলী আক্তার চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস মোল্লাবাড়ি এলাকার আবু তাহেরের মেয়ে। মঙ্গলবার দুপুরে (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ফ্ল্যাটবাসা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে স্বামী ছিলো ফ্যানের সাথে রশি বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত এবং স্ত্রী ছিলো মেঝেতে পড়া অবস্থায়। স্থানীয়দের ধারণা, দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্বামী সবুজ সম্ভবত স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে নিজে আত্মহত্যা করেন।
নিহত শিউলি আক্তারের মা খুরশিদা বেগম বলেন, দুটি ছেলে সন্তান হওয়ার পর শিউলি আক্তার আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে ঢাকায় ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরি নেয়। সে সময় তার সাথে একই কোম্পানিতে চাকরি করা মো. সবুজের সখ্য হয়। একসময় প্রবাসী স্বামীকে ছেড়ে গোপনে সবুজকে দ্বিতীয় বিয়ে করে শিউলি। এরপরে তারা দুজন চাকরি ছেড়ে চাঁদপুর চলে এসে আলাদাভাবে বাসা ভাড়া নেয়। তিনি বলেন, শিউলি আমাদের কাছে ছিলো। গত সোমবার ১২টায় সবুজ কল করে শিউলিকে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নেয়। শিউলির মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আমি নাতি রাফিকে সাথে নিয়ে পালপাড়াস্থ বাসায় যাই। সেখানে এসে দরজা বন্ধ দেখে পুলিশকে জানাই। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ভেতরে প্রবেশ করে ওদের দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া বলেন, স্বামী-স্ত্রীর দুজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুরুষকে রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় ও নারীটিকে ফ্লোরে পড়া অবস্থায় পেয়েছি। আমরা বাড়ির মালিক শাহজাহান ও নিহত শিউলি ড়আক্তারের মা খুরশিদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
কিছু কিছু মৃত্যুর কারণ তদন্ত ছাড়াই স্পষ্ট ধারণা করা যায়। চাঁদপুর শহরের পালপাড়ার ফ্ল্যাটে সবুজ ও তার স্ত্রী শিউলির মৃত্যুর কারণও স্পষ্ট। সবুজ যে আগে শিউলিকে হত্যা করে তারপর আত্মহনন করেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই মর্মান্তিক ঘটনায় বাদী যে-ই হোক না কেন, খুনি মৃত হলেও প্রচলিত আইনে দায়েরকৃত মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া যেন যথানিয়মে অব্যাহত থাকে এবং একদিন যেন রায় হয়--সে দাবি আমরা করছি। মোদ্দা কথা, আমরা এমন ঘটনার বিচার চাই।
বলা দরকার, প্রবাসীদের অনেকের স্ত্রীই বিপথগামিতায় আক্রান্ত হয়ে পরকীয়ায় জড়ায়, এক পর্যায়ে প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করে। এভাবে দ্বিতীয়/তৃতীয় স্বামী গ্রহণকারী নারীদের নগণ্যই সুখী হয়। এরা অধিকাংশই অঘটন ঘটন পটিয়সী হয়। জঘন্য অপরাধের কারণে মামলার আসামী হয় কিংবা হামলা-সংঘর্ষে আহত-নিহত হয়। এমন নারীদের ব্যাপারে বাবা-মা/অন্যান্য অভিভাবক ও শুভাকাক্সক্ষী কিংবা প্রতিবেশীকে সচেতন হয়ে কম-বেশি বিবেকী দায়িত্ব পালন করা ঔচিত্যের পর্যায়ে পড়ে বলে আমরা মনে করি।