প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৪
অবৈধ মাটি বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকুক
গতকাল চঁাদপুর কণ্ঠে 'কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করায় ভেকু অপসারণ ও ট্রাক্টর বিকল' শিরোনামের সংবাদটি লীড হয়েছে। 'নিউজ ভ্যালু' আছে বলেই সংবাদটির এতোটা ভালো ট্রিটমেন্ট হয়েছে। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, কচুয়ায় জমির উর্বর মাটি কেটে পুকুর খনন এবং মাটি বিক্রি করা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযান চালিয়ে একটি ভেকু মেশিন অপসারণ ও ট্রাক্টর বিকল করে দিয়েছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পী দত্ত রনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কাদলা ইউনিয়নে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পী দত্ত রনি বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রির সংবাদ পেয়ে কাদলা ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া ও দোঘর গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রির অপরাধে দোঘর গ্রামে একটি ভেকু অপসারণ ও বাতাবাড়িয়ায় একটি ট্রাক্টর বিকল করে দেওয়া হয় । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কাটার ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে। এ বিষয় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা বিনির্মাণে আমরা বদ্ধপরিকর। তাই কৃষিজমি ধ্বংস করে পুকুর তৈরি বা মাটি বিক্রির সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, ভূমি আইন অমান্য করে অবৈধভাবে কচুয়ায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করেই চলছে অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদটি প্রশাসনের নজরে এলে বিকেলেই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আমরা গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে কচুয়া উপজেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাগ্রহণকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। যেমনটি অনেক উপজেলায় দেখা যায় না। প্রবাদে আছে 'গন্ডারকে কাতুকুতু দিলে তিনদিন পর হাসে' অর্থাৎ প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক বিলম্বে প্রকাশ করে। এই প্রবাদের মতোই সরকারি-বেসরকারি কিছু কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের সংবাদে বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া দেখায় কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণে ঔদাসীন্য, এমনকি অনীহা প্রকাশ করে। এমন বাস্তবতায় কচুয়া উপজেলা প্রশাসনকে করিৎকর্মাই মনে হচ্ছে। তবে অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান থাকতে হবে অব্যাহত তথা ধারাবাহিক। বিক্ষিপ্ত অভিযানে অবৈধ মাটি কাটা ও বিক্রি কেন, যে কোনো অবৈধ চক্রের হোতারা সাময়িকভাবে দমে যায় ঠিকই, সময়ান্তরে গণমাধ্যমকর্মীসহ তাদের অবৈধ কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন সকলকেই ম্যানেজ করে ফেলে এবং তারপর জোরেশোরে তাদের কাজ চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, যেটা প্রতিবাদী ও সচেতন মানুষের জন্যে কষ্টকর হয়ে দঁাড়ায়। কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একজন সক্রিয়- কর্মতৎপর মানুষ হিসেবে কচুয়ার প্রতিবাদী সচেতন মানুষদের কষ্টের কারণ হয় এমন কাজ করবেন না বলে বিশ্বাস রাখি। সে বিশ্বাসের আলোকে বলছি, কচুয়ায় অবৈধ মাটি কাটার মহোৎসব সংক্রান্ত কোনো সংবাদ গণমাধ্যম কর্মীরা অদূর ভবিষ্যতে পরিবেশনের প্রয়োজনীয়তা আর থাকবে না।